রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিন্নাত শহীদ পিংকি বলেছেন, হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ আল্লহরই সৃষ্টি। আমার সন্তানও হিজড়া হয়ে জন্ম নিতে পারে। তাদেরকে সম্মান জানানো প্রতিটি মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য নতুন পৃথিবী গড়ে তুলতে চাই। যেখানে স্বাভাবিক শিশু ও নাগরিকদের মতো হিজড়া জনগোষ্ঠীর সদস্যরাও সমমর্যদা ও সম্মান পাবে।

তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, আমার দায়িত্বপালনকালে গৃহহীন হিজড়াদের ঘরের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া সমহারে দেওয়া হবে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা।

মঙ্গলবার (১১ জুন) সকালে উন্নয়ন সংঘের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ডিটিআরসির শেওলা ভ্যেনুতে অনুষ্ঠিত হিজড়া জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার, যোগাযোগ ও ইতিবাচক আচরণ উন্নয়ন বিষয়ক তিন দিনব্যপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উন্নয়ন সংঘের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল আলম মোল্লা। সঞ্চালনা করেন সংস্থার মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম। অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি মো. শিহাবুল আরিফ, উন্নয়ন সংঘের হিজড়া উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক লিটন সরকার, হিজড়া প্রতিনিধি আঙ্গুরী প্রমুখ।

প্রশিক্ষণে অতিথি, সংস্থার কর্মীসহ ৪২জন হিজড়া সদস্য অংশ নেন। আগামী ১৩ জুন প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হবে বলে জানা যায়।

উল্লেখ, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ স্টিল কোম্পানি বিএসআরএম এর আর্থিক সহায়তায় উন্নয়ন সংঘ প্রায় তিন বছর ধরে হিজড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে জামালপুরে প্রাথমিক পর্যায়ে ২৫০ জন হিজড়াদের নিয়ে নানামূখী উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। দেড় শতাধিক হিজড়াকে বিনাসুদে প্রত্যেককে ৩৫ হাজার টাকা করে বিভিন্ন আয়মুখী কাজে ঋণ দেয়া হয়েছে। ঋণ আদায়ের হার প্রায় শতভাগ। ঋণ দেয়ার আগে প্রত্যেককে ট্রেডভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এছাড়া আচরণ পরিবর্তন এবং মানবিক, সামাজিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে।

(আরআর/এসপি/জুন ১১, ২০২৪)