স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : আজ শনিবার শেষ হচ্ছে ৭ দিন ব্যপি এসএমই পণ্য মেলা। গত ১লা জুন যশোর শহরের টাউন হল ময়দানে জেলা প্রশাসন যশোর ও এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৭ দিন ব্যাপি এই পণ্য মেলার আয়োজন করা হয়। ৫ জুন সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন থাকায় ওই দিন মেলার সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকে। ভোটের কারণে ১ দিন বন্ধ থাকার ফলে মেলা কতৃপক্ষ ৮ তারিখে মেলার আনুষ্ঠানিক সমাপনী ঘোষণা করবেন।

শুক্রবার (৭ জুন) সপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সের মানুষের পদচারণায় মেলার মাঠ জমে উঠেছে। ছুটির দিন থাকায় সব শ্রেণি পেশার মানুষ মেলার মাঠে ভীড় করতে দেখা যায়। বিশেষ করে বাচ্চাদের নিয়ে অনেক অভিভাবকরা মেলায় ঘুরতে এসেছেন। এই মেলায় বিভিন্ন অঞ্চলের ৬০ জন ক্ষুদ্র ও মাঝারি স্তরের শিল্পোদ্যোক্তাগণ অংশ গ্রহণ করেছেন। তাদের বরাদ্ধকৃত স্টলে পাটজাত পণ্য, চামড়ার সামগ্রী, পোশাক, ডিজাইন ও ফ্যাশনওয়্যার, হ্যান্ডিক্র্যাফটস্, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, গৃহস্থালী পণ্য, আইটি পণ্য, অণ্যান্য সেক্টরের স্বদেশী পণ্য বিক্রি হচ্ছে। এই মেলা সকাল ১০ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকছে।

বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে এসএমই মেলায় দেখা গেছে শিশু বিনোদন। যেখানে ৩০ টাকা মূল্যের টিকিটের বিনিময়ে ড্রাগন ট্রেন, নৌকা দোলা, ঘোড়া ঘুল্লি, জাম্পিং, সিøপার, নাগরদোলা, ট্রেন এ চড়তে পারছে শিশুরা।

টাউন হল ময়দানের এসএমই পণ্য মেলায় শুক্রবার সন্ধ্যায় পরিবেশিত হয় মনোমুগ্ধকর সঙ্গীতানুষ্ঠান। তীব্র তাপদাহের মাঝে ক্লান্ত হৃদয়ে অসংখ্য দর্শক তা উপভোগ করেন। দেড় ঘন্টার এই অনুষ্ঠানে জেলার সব সংগঠন থেকে চয়ন করে আনা শিল্পীদের পরিবেশনা ভালোলাগার মাত্রা কেউ যেন ছাড়িয়ে যায়। দেশের প্রথিতযশা শিল্পী প্রয়াত সুবীর নন্দী, বশির আহমেদ, এন্ড্র কিশোর, সৈয়দ আব্দুল হাদীদের কন্ঠের অমর সব সংগীত স্থানীয় শিল্পীদের কন্ঠে সত্যিই প্রাণ জুড়িয়ে যায়।

সংগীত পরিবেশন করে শিল্পী অমিতাভ ভোলা, মোয়াজ্জেম হোসেন স্বপন, সুব্রত দাস, রফিকুল ইসলাম, মৌরানী, প্রান্ত কীর্তনীয়া, ললিতা বিশ্বাস, আমিন মোহাম্মদ বাবু ও পার্থ সাহা। শেষে পরিবেশিত হয় পুনশ্চ যশোর ও থিয়েটার ক্যানভাসের দুটি নাটক। গোটা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শাহেদ নেওয়ার।

মেলার মাঠে পোশাকের দোকান নিয়ে বসা রাবেয়া বিনতে মনোয়ার বলেন, তিনি ঢাকা থেকে এই মেলায় ৩ হাজার টাকা স্টল ভাড়া দিয়ে পোশাকের দোকান নিয়ে বসেছেন। এই প্রথম যশোরের কোনো মেলায় অনেক আশা নিয়ে এসে হতাশ হয়ে ফিরবেন। ক্রেতা নেই বললেই চলে। মেলায় এসে তাকে লস করে ফিরতে হচ্ছে।

থ্রি পিচ, শাড়ি বিক্রি করা মো: আজাদ নামে অন্য এক দোকানী বলেন, কেনা বিক্রি একদম কম। ক্রেতা আসছে না। মেলাটা ভোটের মধ্যে পড়ে যাওয়ার কারণে এরকম পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে।
সোয়েব শেখ নামে একজন বলেন, আমরা শিশু বিনোদনের অংশ চালাচ্ছি। যেখানে ২০/২৫ জন মানুষ এক সাথে ড্রাগন ট্রেনে চড়তে পারে সেখানে ৫ জন নিয়ে চালাচ্ছি।

প্রকাশ চন্দ্র বিশ্বাস নামে একজন দর্শক বলেন, গরমে মেলার মাঠে থাকা কষ্টকর। ছুটির দিন বন্ধুদের সাথে বেড়াতে এসেছি। মেলায় এসে অনেক ভালো লেগেছে। শহরের ভিতরে বাচ্চাদের খেলার জন্য আলাদা তেমন জায়গা নেই। টাউন হল মাঠে কোন না কোন অনুষ্ঠান, মেলা লেগে থাকে। এখানে বাচ্চারা আনন্দঘন সময় কাটাতে পারে।

(এসএ/এসপি/জুন ০৮, ২০২৪)