সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : কেন্দুয়া উপজেলায় বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন নিয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফোটলেও উৎপাদিত ধানের সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না কৃষক। ফলে তাদের মুখে নেই আনন্দের হাসি।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কেন্দুয়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর এলাকায় ২০ হাজার ৭শ ১৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নিধারণ করা হয়েছিল। এতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ১৪ হাজার ০৫ হেক্টর, হাইব্রিড ৬ হাজার ৭শ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।

প্রতি হেক্টর জমিতে ৯ মেট্রিকটন শুকনা ধান, হাইব্রিড এবং উচ্চ ফলনশীল প্রতি হেক্টর ৭.৫ মেট্রিকটন এবং স্থানীয় প্রতি হেক্টরে ৩ মেট্রিকটন করে ফলন হয়েছে। এ উপজেলায় ৬৪ হাজার কৃষক পরিবার রয়েছে। কান্দিউড়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মনজাত গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে কৃষক মোবারক হোসেনের সাথে বোরোর ফলন নিয়ে কথা হলে তিনি তার প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করে বলেন, হাইব্রিড, ৮৮ ও ব্রি-ধান-৯২ জাতের আবাদ করেছিলেন। এতে বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন নিয়ে তিনি খুশি তবে ধানের দাম নিয়ে তার মুখে হাসি নেই।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, জমিতে যে পরিমাণ সার, বীজ, কীটনাশক ও সেচ প্রয়োগ করা হয়েছে এবং তাতে যে খরচ হয়েছে সে অনুপাতে ধানের দাম অনেক কম। তাছাড়া সরকারি গুডামে যে ধান সংগ্রহ করা হয় সে ধান কোন দিনেই তারা বিক্রি করতে পারেন না। তিনি বলেন, সঠিক ফলন উৎপাদনের জন্য কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা যেভাবে পরামর্শ দিয়েছেন তাতে আমরা অনেক উপকার পেয়েছি। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের অবহেলায় বিদ্যুতের অভাবে আমাদের জমিতে সেচের অনেক ঘাটতি হয়েছে। সেচ পুরোপুরি দিতে পারলে ফলন আরও বাড়তো।

মাসকা ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, সময়মত কৃষি বিভাগ থেকে বীজ, সার, প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এই প্রণোদনা পেয়ে কৃষকরা অনেক উপকৃত হয়েছেন। প্রণোদনা আরও যত বেশি কৃষকের মাঝে বিতরণ করা যাবে ততই কৃষকের উৎসাহ ও কৃষির ফলন বাড়বে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শারমিন সুলতানা বলেন, সরকার কৃষি ও কৃষকের উন্নতির লক্ষ্যে কৃষির প্রণোদনা সার বীজ দিচ্ছেন। দিচ্ছেন ভুর্তকি মূল্যে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের যন্ত্র। তিনি বলেন, কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্বাবধানে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে কৃষকরা খুব খুশি। তবে ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে জমিতে সেচ দিতে গিয়ে সেচের ঘাটতি ছিল বিদ্যুতের কারণে। আগামী মৌসুমে সেচের জন্য নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সরবরাহ রাখার দাবি জানান তিনি।

(এসবিএস/এএস/মে ১৬,২০২৪)