বোয়ালমারীতে হাসামদিয়া গণহত্যা দিবস পালন
কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ৩৩ শহীদের স্মরণে ‘হাসামদিয়া গণহত্যা’ দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার হাসামদিয়ায় অবস্থিত শাহ জাফর টেকনিক্যাল কলেজ চত্বরে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সন্তান, কলেজটির শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়।
পরে কলেজটির অধ্যক্ষ লিয়াকত হোসেন লিটন এর সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন বিএনএম এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, ফরিদপুর -১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার মুজিব বাহিনীর কমাণ্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মো. আবু জাফর।
এতে বক্তব্য দেন- বোয়ালমারী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমাণ্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুর রশিদ, ডেপুটি কমাণ্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ রউফ সিদ্দিকী, সহকারী কমাণ্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কেএম জহুরুল হক, গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী উৎপল দাস, শহীদ পরিবারের সন্তান প্রফেসর দেবাশীষ সাহা, ড. কাজী তারেক পারভেজ প্রমুখ।
এসময় শহীদ বাসুদেব রাজবংশীর ছেলে স্বন্দীপ রাজবংশী, শহীদ নবদ্বীপ রাজবংশীর ছেলে নিখিল রাজবংশী, শহীদ গোপাল রাজবংশীর ভাগ্নে গৌর রাজবংশী, শহীদ সুমন্ত রাজবংশীর কন্যা পূর্ণিমা রাজবংশী ও তার ছেলে আপন রাজবংশী উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া কলেজটির শিক্ষক অলোক কান্তি বিশ্বাস, মারুফা আক্তার, বিপুল কুমার মণ্ডল, নাসরিন আক্তার, সোনিয়া ফারজানা, সালমা খাতুন, আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় শহীদ পরিবারের সন্তানেরা গণহত্যায় ৩৩ জন শহীদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জোর দাবি জানান।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ১৬ মে তিন শতাধিক পাকসেনার একটি বহর যশোর থেকে রেলযোগে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের হাসামদিয়া গ্রামে তৎকালীন মুজিব বাহিনীর ফরিদপুর জেলা কমান্ডার শাহ মো. আবু জাফর ও তার নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজে হাসামদিয়ায় আসে। তাদের না পেয়ে পাক বাহিনীর দোসর, মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের রায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত পলাতক আসামী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার বাহিনীর সহযোগিতায় হাসামদিয়া, রামনগর, রাজাপুর, ময়েনদিয়া, রাজাবেনি, মিঠাপুর ও পোয়াইলসহ কয়েকটি গ্রামের ৩৩ জন নিরস্ত্র, নিরীহ গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় হিন্দু অধ্যুসিত এলাকায় আগুন ধরিয়ে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় অর্ধশতাধিক বাড়িঘর। স্থানীয় ময়েনদিয়া বাজারে চালানো হয় লুটপাট। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ৫০ এর অধিক দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
(কেএফ/এসপি/মে ১৬, ২০২৪)