রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আবারও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক দীপক কুমার।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকাল ৮ টার দিকে হাসপাতালটির নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি স্টোর রুমে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। যার ফলে ভবনটিতে অনেক কালো ধোয়ার সৃষ্টি হয়। এ সময় অনেক অসুস্থ রোগি ও তাদের স্বজনরা তাড়াহুড়ো করে হাসপাতাল ভবনটির ৫/৬ তলা থেকেও সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসেন। এ সময় বেশ কয়েকজন রোগিকে তাদের হাতে লাগানো স্যালাইন খুলে নিচে নামতে দেখে গেছে।

কিছুদিন আগেও প্রায় একই সময়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের একটি স্টোর রুমে আগুন লেগেছিল।

স্বাভাবিকভাবেই ফরিদপুরের সাধারণ মানুষ এবং হাসপাতালে উপস্থিত রোগীর অভিভাবকদের মনে প্রশ্নের উদয় হয়েছে যে, হাসপাতালের এত জায়গা থাকতে ঔষধের স্টোররুমে এতো আগুন লাগে কেন? বিষয়টি গভীরভাবে ক্ষতিয়ে দেখতে যথাযত কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ফরিদপুরের সাধারণ মানুষ। এই হাসপাতালে আরও একটি আগুন লাগার নাটকীয় ঘটনার সূত্রপাত হয়। এমনিতেই এই হাসপাতালের অনিয়ম ও দুনীতি'র খবর প্রায়শই বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসে। কিন্তু এর প্রতিকার কতোটা হয়, সেটা নিয়েও সন্দেহের শেষ নেই স্থানীয় সাধারণ মানুষের।

লোকমুখে এসব কথাও উঠে আসছে যে, যখন হাসপাতালের জনাকীর্ণ অবস্থা অনেকটাই নিরব থাকে ও আস পাশে লোক সমাগম কম থাকে; তখনই ওখানে আগুনের ঘটনা ঘটে। এটি ঘটনা নাকি দুর্ঘটনা সেটি নিয়ে সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। দাবি উঠেছে এমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তেরও।

এমনকি আগুনের ধোঁয়ায় অন্ধকার হওয়ার সময় সরকারি সম্পদ বা ঔষধ লুট হয় কিনা এই বিষয় টি ক্ষতিয়ে দেখার জন্য হাসপাতালের পরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।

অগ্নিকান্ডের সময় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ধোঁয়ায় চারপাশে অন্ধকার হয়ে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণ ফায়ার সার্ভিসের ৩টি টিম কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক দীপক কুমার আগুন লাগার বিষয়ে জানান, 'হঠাৎ হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলার স্টোর রুমে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ও কালো ধোঁয়ার কুন্ডলি সৃষ্টি হয়। ওই স্টোর রুমে হাসপাতালের ওষুধপত্র, যন্ত্রপাতি, কম্পিউটার, কাগজপত্র, ফ্রিজ এসি সহ নানা সরঞ্জাম ছিল। যা প্রায় সম্পুর্ণভাবে পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের একাধিক টিম এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে, কিভাবে এ আগুনের সূত্রপাত হয়েছে সেটি জানা যায়নি'। এসব বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সহকারি পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস দ্রুত সেখানে পৌঁছিয়ে আগুণ নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করি। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হই'। বাংলা ৭১-এর প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তিনটি ইউনিট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আগুণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। প্রাথমিকভাবে আগুণ লাগার কারণ জানা যায়নি। তবে এ বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তের পর এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো বলেও জানান ফরিদপুরের এই ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

(আরআর/এএস/মে ১৬,২০২৪)