সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : মাহিয়া জান্নাত একজন ৯ম শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থী, তার রোল নম্বর- ১০, বাবার নাম বাবুল মিয়া, ঠিকানা নাজিরের বাড়ি, ভোটার নম্বর- ৭৭৬। আশ্চর্যের বিষয় একই শ্রেণি পড়ুয়া আরেক শিক্ষার্থীর নাম মাহিয়া জান্নাত, অথচ তার বাবার নামও বাবুল মিয়া ও ঠিকানা নাজিরের বাড়ি। তবে রোল নম্বর ও ভোটার নম্বর ভিন্ন। ৭ম শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম তার রোল নম্বর- ২৫, পিতা- মো. আলকাছ মিয়া, ঠিকানা নাজিরের বাড়ি। এবার একই শ্রেণি পড়ুয়া আরেক শিক্ষার্থীর নামও আরিফুল ইসলাম হলেও তার বাবার নাম আলকাছ মিয়া এবং ঠিকানা একই। তবে আরিফুল ইসলামের এবারের রোল নম্বর- ২৫ কে ঘুরিয়ে ৫২ করা হয়েছে। শুধু মাহিয়া জান্নাত আর আরিফুল ইসলাম নয়, তাদের মত একজনকে দুইবার নয়, বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে না এমন প্রায় দুই শতাধিক ভূয়া শিক্ষার্থী রয়েছে ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে। আসছে ১৬ মে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান ও বর্তমান কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল বাশার এমন ভূয়া ভোটার তালিকা প্রনয়ন করেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর প্রতিকার চেয়ে ৫ মে রবিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবক প্রতিনিধি সদস্যরা। 

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনকে সামনে রেখে অসৎ উদ্দেশ্যে ভোটার তালিকায় জালিয়াতি করা হয়েছে বলে দাবী করেন, অভিভাবক প্রতিনিধি মো. ইব্রাহিম মিয়া। আরেক অভিভাবক প্রতিনিধি মো. জাকির মিয়া বলেন, শ্রীনগর এলাকাটি দুটি বলয়ে বিভক্ত। একপক্ষের নেতৃত্ব দেন অ্যাডভোকেট আবুল বাশার অন্য পক্ষের নেতৃত্ব দেন অ্যাডভোকেট মোস্তাক হোসেন। আর মাত্র কয়েক দিন পরেই নির্বাচন। নির্বাচনে দুটি গ্রুপই প্যানেল দিয়েছে। কিন্তু এখন দেখছি ভোটার তালিকায় নয় ছয়ের শেষ নেই। ফলে এলাকায় এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিষয়টি যেকোন সময় সংঘাতে রূপ নিতে পারে।

জানা গেছে, তফসিল অনুযায়ী আসছে ১৬ মে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারে নির্বাচনে দুটি গ্রুপই আলাদা প্যানেল দিয়েছে। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৯৩০।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বর্তমান কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল বাশার সাংবাদিকদের জানান, কারো পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগের কোন অনুলিপি তিনি পাননি। পেলে এ বিষয়ে তিনি সুস্পষ্ট বক্তব্য দিতে পারবেন।

এদিকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন বলে স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিন জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এসএস/এসপি/মে ০৬, ২০২৪)