স্টাফ রিপোর্টার : সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে গভীর রাতে থানায় ঢুকে অস্থীতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি ও সরকারী কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইন্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামের ১০ কর্মী-সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। এর আগে বদিউজ্জামানের উপরেও হামলা চালায় এরা। এদিকে বদিউজ্জামান ফকির ও তার সমর্থকদের উপরে হামলা এবং থানায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। 

জানা যায়, বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রচারনা চালানোর একপর্যায়ে চালা সাত রাস্তার মোড়ে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বদিউজ্জামান ফকির (মটরসাইকেল) ও তার কর্মী সমর্থকদের ওপরে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা চালায় অপর প্রার্থী ইন্জিনিয়ার আমিনুল ইসলাম। আত্মরক্ষার্থে বদিউজ্জামান ফকির ও তার সমর্থকেরা বেলকুচি থানায় আশ্রয় নিলে সেখানেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও মন্ডল গ্রপের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম লোকজন নিয়ে হাজির হয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। এক পর্যায়য়ে থানা কম্পাউন্ডেও বদিউজ্জামান ফকিরের উপরে হামলা চালায়। আমিনুল ইসলামসহ তার গ্রুপের সমর্থকরা থানায় ভিতরে ঢুকে অস্থীতিশলি পরিস্থিতি তৈরী করেন। তারা উচ্চ স্বরে গালমন্দ করতে থাকে এবং থানার পরিবেশ বিনষ্ট করে। একপর্যায়ে জেলা সদর থেকে ডিবি পুলিশ আসে এবং থানা পুলিশ মিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। এরপরই অভিযান চালিয়ে আমিনুল গ্রুপের ১০জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধা প্রদান এবং গভীর রাতে থানায় অনাধিকার প্রবেশ করে থানার পরিবেশ বিনষ্ট করার অভিযোগে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। মামলায় ২২জনের নাম উল্লেখ এবং অন্তত: ২০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে। থানার ভিডিও ফুটেজ দেখে অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে আজ বৃহস্পতিবার বেলকুচি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে থানার কম্পাউন্ডের বাইরে ও ভিতরে নিজের ও কর্মি-সমর্থকদের উপরে হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে অনতিবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব বদিউজ্জামান ফকির।

বদিউজ্জামান ফকির বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি’র নির্দেশেনা রয়েছে চলমান উপজেলা নির্বাচনে সংসদ সদস্যবৃন্দ কোন হস্তক্ষেপ করবে না, কোন প্রার্থীর পক্ষালম্বন করবে না। কিন্তু বেলকুচিতে এই নির্দেশনা প্রতিপালন হচ্ছে না। সংসদ সদস্যের পরিবার তাদের কোম্পানির কর্মচারীকে উপজেলা চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সমগ্র বেলকুচিকে নিজেদের কোম্পানি মডেলে পরিনত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। নিজেদের কোম্পানির বেতনভুক্ত কর্মকর্তাকে উপজেলা চেয়ারম্যান বানিয়ে বেলকুচির আওয়ামী রাজনীতির কবর রচনার পথে হাটছে। সংসদ সদস্যের ভাই আব্দুল আলিম মন্ডল ও জুবায়ের মন্ডল, ব্যাক্তিগত সহকারি সেলিম রাতদিন সভা-সমাবেশসহ প্রচারনা চালাচ্ছে আমিনুল ইসলামের পক্ষে। তাকে এমপির পছন্দের প্রার্থী হিসেবে প্রকাশ্যে ঘোষনা করছে। নেতাকর্মী ও বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। সংসদ সদস্যের দুই ভাই ও সহকারি নির্বাচনী মাঠে নামলে এটা প্রমানিত হয় যে, সংসদ সদস্য একজন প্রার্থীর পক্ষ নিয়েছেন এবং তার নির্দেশেই এগুলো হচ্ছে। সংসদ সদস্যের দুইভাই বেলকুচিতে পা রাখার সাথে সাথে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে আমিনুল ইসলাম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী।

তিনি সাংবাদিকদের উদ্যেশে বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ও নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। বেলকুচির উপজেলা নির্বাচনকে সুষ্ঠ সুন্দর ও নিরপেক্ষভাবে সমাপ্ত করতে সংসদ সদস্যের দুই ভাইয়ের বেলকুচি ত্যাগ করার বিকল্প নেই। নির্বাচন কমিশনের বিধি-বিধান ও রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্দেশনার ফাঁক গলিয়ে এই দুইজন মূলত সংসদ সদস্যের প্রতিনিধিত্ব করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আমি এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনসহ অবাধ নিরপেক্ষভাবে বেলকুচি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন সমাপ্ত করতে প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহনে নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

এ উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান পদে ৩জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। প্রার্থীরা সবাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।

(এসএস/এসপি/মে ০২, ২০২৪)