একে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর কোলা সদর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়টি এখন প্রধান শিক্ষকের পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার! শুধু সংরক্ষণই নয়, পচনের হাত থেকে রক্ষা করতে বিদ্যালয়ের একটি শ্রেনী কক্ষের সবকটি ফ্যান দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই ব্যবহার করে আসছেন তিনি। স্থানীয়রা জানান এভাবেই চলছে না-কি মাস খানেক।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে রাজবাড়ী জেলা সদরের মুলঘর ইউনিয়নে অবস্থিত উক্ত কোলা সদর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন চিত্র-ই দেখা গেছে।

বিদ্যালয়ের একটি কক্ষের মধ্যে ফ্যানের নিচে পালা করে সাজিয়ে রাখা রয়েছে অন্তত ৩শত বস্তা, আর লম্বা বারান্দায় রাখা আছে ৩/৪শ বস্তা পেঁয়াজ।

সেখানে একটু কালক্ষেপন করতেই সন্ধ্যার দিকে দেখা মেলে প্রধান শিক্ষক ফরহাদ হোসেনের সাথে। তিনি তখন তার অফিস কক্ষের ভেতর হতে বেড় হয়ে দরজায় তালা লাগাচ্ছিলেন। এ সময়, তার সাথে কথা হয়, তিনি বলেন, তার ৩০বিঘা জমিতে উৎপাদিত পেঁয়াজগুলো স্কুলে রাখা হয়েছে। এখন বিদ্যালয় বন্ধ যার কারনে এখানে পেঁয়াজ রেখেছি, এতে দোষের কিছু নাই, আর বিদ্যুৎ বিল তো আমিই দেই। কিছুদিন পর এখান থেকে বাড়ীতে নিয়ে বিল্ডিং এর দ্বিতীয় তলায় রেখে দেব। এ প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাব বলেন; ইচ্ছে করলে যে কোন স্কুল শিক্ষক আমার মতো করে এখানে পেঁয়াজ রাখতে পারেন। এটা স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং শিক্ষা অফিসার জানে না। আর তারা জানলেই বা কি, কারণ এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তো আমি-ই।

স্থানীয়দের থেকে জানাযায়, এ পেঁয়াজের বস্তাগুলো প্রায় মাস খানেক ধরে স্কুল কক্ষে স্টক রেখেছেন প্রধান শিক্ষক ফরহাদ হোসেন। একটি কক্ষের সব ক'টি ফ্যান ২৪ ঘণ্টা চালু রেখে বাতাস লাগায় পেঁয়াজের গাঁয়, আর বিদ্যুৎ বিল যায় শিক্ষার্থীদের টাকায়। মূলত সংরক্ষণ করে সংকটকালে বেশি মুনাফায় বিক্রির উদ্দেশ্যে পেঁয়াজ স্কুলে রাখা হয়েছে। স্থানীয় সাখাওয়াত হোসেন জানান; হয়তো তার বাড়ীতে জায়গা না থাকায় স্কুলেই পেঁয়াজ রেখেছেন। শুধু এবার না, গত বছর ও তার আগের বছরেও এভাবে পেঁয়াজ রেখেছিলেন প্রধান শিক্ষক।

বিষয়টি মুঠোফোনে রাজবাড়ী সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মধুসূদন সাহাকে অবগত করলে তিনি বলেন, বিদ্যালয় ব্যাক্তিগত কাজে ব্যাবহার করার কোন সুজোগ নেই। বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করবো।

(একে/এএস/এপ্রিল ০৫, ২০২৪)