ডিবি পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি, আটক ৬
মাদারীপুর প্রতিনিধি : প্রথমে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয় অপহরণকারীরা। মাঝপথে মারধর করে পরিবারের কাছে মুঠোফোনে অডিও বার্তা পাঠিয়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেন। খবর পেয়ে মাইক্রোবাসসহ ৬ অপহরণকারীকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় অপহৃত ব্যবসায়ীকেও উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে মাদারীপুরের এই ঘটনায় মামলার পরে আদালতে নেয়া হলে ৬ জনকে কারাগারে পাঠায় আদালত।
অপহরণকারী চক্রের আটক সদস্যরা হলেন, পিরোজপুরের কাউখালী উপজেললার ডুমজুরি গ্রামের আব্দুল মান্নান হাওলাদারের ছেলে সোহেল হাওলাদার (৩২), একই গ্রামের আলতাব খানের ছেলে তালেব খান (২৯), মুনসুর আলী গাজীর ছেলে সবুজ গাজী (৪০), চিলপাড়া গ্রামের ছালে শরীফের ছেলে মিরাজ শরীফ (৩৫), বড় বিড়ালঝুড়ি গ্রামের আল আকবর হাওলাদারের ছেলে খাইরুল ইসলাম হাওলাদার (৩৮), পাড় সাতুরিয়া গ্রামের রুহুল আমিন খলিফার ছেলে রুবেল খলিফা (৪৫)।
এই ঘটনায় মাদারীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বুধবার দুপুরে প্রেস কনভারেন্সের মাধ্যমে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান মাদারীপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুল হাসান।
এ সময় তিনি জানান, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী কাজল ভুঁইয়া মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেলে পাইকারী কাপড় কিনতে আসেন পাশের মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরে। বাসস্ট্যান্ড থেকে নেমে বন্দরে প্রবেশের সময় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে একটি সাদা মাইক্রোবাসে তোলা হয় ঐ ব্যবসায়িকে। পরে তাকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে মুঠোফোনে অডিও বার্তা পাঠিয়ে পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে অপহরণকারীরা। খবর পেয়ে গোলাপগঞ্জের মুকসুদপুরের দক্ষিণ গঙ্গারামপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় অপহৃত ব্যবসায়ীকে। অপহরণকারী চক্রের ৬ সদস্যকে আটকের পাশাপাশি ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী কাপড় ব্যবসায়ী কাজল ভুঁইয়া বলেন, টেকেরহাট বন্দর থেকে আমাকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তারা মাইক্রোবাসে তুলে নেন। আমি চিৎকার করলে আমাকে গুলি করে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা। আমি মাইক্রোবাসের মধ্যে আতঙ্কে ছিলাম। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।
ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম আরো জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই ও অপহরণের কাজে লিপ্ত আছে। তাদের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলাও আছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ৬ জন আটক হলেও এই চক্রের বাকি সদস্যদের ধরতে অভিযান চলছে।
পুলিশ আরো জানান, এই ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো দুইজনের নামে রাজৈর থানায় মামলা করেছেন। তাদের দুপুরে আদালতে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
(এএসএ/এএস/মার্চ ১৩, ২০২৪)