বেতন না পেয়ে পত্রিকা সরবরাহ বন্ধ
হকারকে পেটালেন সাতনদী সম্পাদক হাবিবুর রহমান
রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : চুক্তি অনুযায়ী বেতন না দেওয়ায় পত্রিকা সরবরাহের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনায় এক হকারকে পিটিয়ে জখমের পর অপহরণের চেষ্টা করেছেন দৈনিক সাতনদী সম্পাদক হাবিবুর রহমান। আজ শুক্রবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে সাতক্ষীরা শহরের জাহান প্রিন্টার্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে সহকর্মীকে মারপিটের খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ পত্রিকা পরিবেশক হকাররা নির্যাতনকারি হাবিবুর রহমানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে ওই পত্রিকা বিক্রি না করার ঘোষণা দিয়েছে।
সাতক্ষীরা শহরের পত্রিকা পরিবেশক মনিরুল ইসলাম জানান, শহরের কয়েকটি স্থানে পত্রিকা পৌঁছে দেওয়া ও বিভিন্ন উপজেলার সাংবাদিকদের জন্য পত্রিকা যাত্রীবাহি বাসে তুলে দেওয়ার জন্য মাসিক তিন হাজার টাকা দেবেন বলে দৈনিক সাতনদী পত্রিকার সাংবাদিক হাবিবুর রহমান তার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন ছয় মাস আগে। চুক্তির পরও তিনি মাসে দুই হাজার টাকা দিতেন। সম্প্রতি তিনি একেবারেই টাকা দেন না। মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় চিকিৎসার খরচ যোগাড় করতে না পেরে হাবিবুর রহমানকে গত ৫ দিনেও মোবাইলে পাননি। এমতাবস্থায় গত তিন দিন তিনি ওই পত্রিকা পরিবেশন বন্ধ করে দেন।
একপর্যায়ে শুক্রবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে শহরের জাহান প্রিন্টার্সে থাকাকালিন ভ্যানযোগে এসে তাকে রাস্তায় ডেকে মারপিট শুরু করেন হাবিবুর রহমান। তাকে একটি ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পথচলতি লোকজন ও জাহান প্রিন্টাসে অবস ্থানরত কয়েকজন বাধা দেন। মারপিট ও তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করায় এক সাংবাদিকের উপর চড়াও হন তিনি। পরে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে ভ্যানযোগে এলাকা ত্যাগ করেন হাবিবুর রহমান। এরপর তিনি বিষয়টি সহকর্মী হকারদের জানিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা হকার্স এ্যসোসিয়েশনের সভাপতি সাবান আলী, সদস্য শাহাদাৎ হোসেন, আব্দুস সালাম, হাফিজুল্লাহসহ কয়েকজন জানান, বিষিয়টি তারা জানতে পেরে প্রচ- ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারা ওই পত্রিকা সম্পাদকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একই সাথে ওই পত্রিকা বিক্রি না করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে মারপিটের সময় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজে হাবিবুর রহমানের বক্তব্য থেকে জানা যায়, বেতন না দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার না করলেও মনিরুল পত্রিকা পরিবেশন না করে কিছু পত্রিকা অন্যত্র বিক্রি করে আসছে। এ কারণে তাকে অফিসে ডাকলে না যাওয়ায় ক্ষোভে দু’চারটি থাপ্পড় মেরেছেন তিনি। ভ্যানে করে তিনি মনিরুলকে তার অফিসে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন।
(আরকে/এসপি/মার্চ ০১, ২০২৪)