ট্রাক্টরের ধাক্কায় মুহুরি নিহত, প্রতিবাদে অগ্নিসংযোগ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরের কালকিনিতে বালু বোঝাই ট্রাক্টরের ধাক্কায় জজ কোর্টের মুহুরি নেছারউদ্দিন হাওলাদার (৩৮) মারা গেছে। এই ঘটনায় স্থানীয় লোকজন ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এসময় স্থানীয়রা পুলিশের সাথে সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে। এতে পুলিশসহ ৭ জন আহত হন।
রবিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কালকিনি-ভুরঘাটা আঞ্চলিক সড়কের দক্ষিণ রাজদি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত নেছারউদ্দিন হাওলাদার প্রায় ৮ বছর ধরে মাদারীপুর জজ কোর্টে মুহুরির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি কালকিনির পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পশ্চিম মিনাজদি এলাকার কাদের হাওলাদারের ছেলে। নিহতের সংসারে স্ত্রী ও দুই সন্তান আছে।
পুলিশ, পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের কালকিনির পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পশ্চিম মিনাজদি এলাকার নিজ বাড়ি থেকে নেছারউদ্দিন হাওলাদার মোটরসাইকেল চালিয়ে মাদারীপুর শহরের জজ কোর্টে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে দক্ষিণ রাজদি এলাকায় আসলে পেছন থেকে আসা একটি বালু বোঝাইট্রাক্টরমোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে গুরুতর আহত হয় জজ কোর্টের মুহুরি নেছারউদ্দিন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। এসময় হাসপাতালের কর্তৃব্যরত চিকিৎসক নেছারউদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি আশাপাশে জানাজানি হলে উত্তেজিত জনতা বালুর ট্রাক্টরেআগুন ধরিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ করে রাখে। ফায়ার সার্ভিস ও কালকিনি থানা পুলিশ খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এসময় উত্তেজিত স্থানীয়দের সাথে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়ায় স্থানীয়রা। এতে ৫ পুলিশ সদস্যসহ ৭ জন আহত হন। আহতরা কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। খবর পেয়ে জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।
পথচারী আব্দুল কাদের মিয়া, সামিয়া আক্তার, মোসলেম সরদার জানান, আমরা ইজিবাইকে করে কালকিনি যাচ্ছিলাম। এসময় হঠাৎ দেখি সড়কের মধ্যে স্থানীয় ও পুলিশের মধ্যে সংর্ঘষ চলছে। এসময় স্থানীয়রা বালুর ট্রাক্টরেআগুন ধরিয়ে দেয়। এতে করে আমরা ভয় পেয়ে যাই। চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছে।
মাদারীপুরের কালকিনি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার খোকন জমাদ্দার বলেন, বালুর ট্রাক্টরেরআগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে প্রথমে স্থানীয়রা আমাদের উপরে ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে। পরে পুলিশ আসলে তাদেরও ইট মারে। আগুন নেভানোর আগেই ট্রাকটির অনেকাংশ পুড়ে যায়।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলাউল হাসান বলেন, উত্তেজিত জনতাকে থামাকে গেলে তারা পুলিশের উপরে চড়াও হয়। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় পুলিশের ৫ সদস্য আহত হয়।
(এএসএ/এসপি/জানুয়ারি ২৮, ২০২৪)