১৪ ডিসেম্বর সাভার উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস
তপু ঘোষাল, সাভার : ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর কিশোর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ গোলাম দস্তগীর টিটোর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই হানাদার মুক্ত হয় ঢাকা জেলার সাভার উপজেলা । ১৯৯৯ সালের ৩০ই ডিসেম্বর নবম পদাতিক ডিভিশনের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে ডেইরি গেট সংলগ্ন এলাকায় শহীদ টিটোর সমাধির ফলক উন্মোচন করেন।
এরপর থেকে এই কিশোর মুক্তিযাদ্ধার এই সমাধির ব্যাপারে কোনও খোঁজ নেই স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা সহ সংশ্লিষ্টদের। তবে গত ১২ বছর যাবৎ স্থানীয় সাংবাদিকরা এই দিনে টিটোর সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছেন।আজও আশুলিয়া প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে এই কিশোর মুক্তিযোদ্ধার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এ সময় আশুলিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোজাফফর হোসেন জয় বলেন, বাঙ্গালী মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধ হয় সেই যুদ্ধে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর মোহাম্মদ টিটু শহীদ হোন। সেই থেকেই সাভার আশুলিয়া হানাদার মুক্ত হয়।
এ বিষয়ে আশুলিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম খান লিটন বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি গেইটে এই কিশোর মুক্তিযোদ্ধার সমাধি থাকলেও দুঃখের বিষয় হল স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের এই হানাদার মুক্ত দিবস পালনের কোন উদ্যোগ নেই।
১৯৭১ সালে সাভারে বিভিন্ন সময় খণ্ড খণ্ড যুদ্ধ সংঘঠিত হয়েছে। ঢাকার প্রবেশমুখ হওয়ায় সব সময় পাক হানাদারদের চলাচল ছিল। তাই প্রায়ই পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তেন মুক্তিযোদ্ধারা।
সর্বশেষ আশুলিয়ার গঙ্গারবাগ (বর্তমান ঘোষবাগ) এলাকায় পাক হানাদারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে মানিকগঞ্জের কিশোর গোলাম দস্তগীর টিটো অংশ নেন। প্রায় কয়েক ঘণ্টা যুদ্ধের পর পাক বাহিনী পালাতে থাকে। বিজয় নিশ্চিত জেনে আবেগাপ্লুত হয়ে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা টিটো লাফিয়ে উঠলে পলায়নরত পাক হানাদার বাহিনীর ছোড়া গুলিতে শহীদ হন তিনি। আর এভাবেই টিটোর শাহাদাতবরণের মধ্যে দিয়ে সাভার হানাদার মুক্ত হয়। এরপর ১৪ই ডিসেম্বর সাভার উপজেলা হানাদার মুক্ত ঘোষণা করা হয়।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শামীম আহমেদ, আশুলিয়া প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ ও সাভার প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ।
(টিজি/এএস/ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩)