পালং-জাজিরায় দলীয় বিভেদ নিরসন করে চলেছেন অপু
কাজী নজরুল ইসলাম, শরীয়তপুর : শরীয়তপুর-১ নির্বাচনী এলাকার শরীয়তপুর সদর (পালং) ও জাজিরা উপজেলায় তৃণমূলে আওয়ামী লীগের মধ্যকার আভ্যন্তরিণ সকল বিভেদ ও দলীয় কোন্দল নিরসনে জোরালো ভূমিকা রেখে চলেছেন সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু। দীর্ঘদিনের দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যেকার বিভাজন দুরিকরনের পদক্ষেপ গ্রহন করায় তৃণমূলের সকল নেতা-কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপকভাকে প্রসংশিত হচ্ছেন তিনি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, শরীয়তপুর-১ আসন দুইটি উপজেলা (শরীয়তপুর সদর ও জাজিরা) নিয়ে গঠিত। ২৩টি ইউনিয়ন এবং ২টি পৌরসভা রয়েছে এ আসনে। প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভাতেই আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা চেয়ারম্যান এবং মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীরাও ছিলেন একই দলের। প্রতিটি শাখাতেই আবার বছরের পর বছর ধরে আওয়ামী লীগ দ্বিধা/ত্রিধা বিভক্ত হয়ে সাংগঠনিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছিলেন। দেখা গেছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির সাথে সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ। আবার কোথাও বিজয়ী চেয়ারম্যানের সাথে পরাজিত প্রার্থীর দ্বন্দ। কেউ বর্তমান সাংসদের সমর্থক আবার কেউ সাবেক সাংসদের সমর্থক। এভাবে দলীয় আভ্যন্তরিন কোন্দল দিন দিন বেড়েই চলছিল।
ইকবাল হোসেন অপু টানা দ্বিতীয় মেয়াদে শরীয়তপুর-১ আসনে নৌকার মনোনয়ন লাভের পর তিনি আর কালবিলম্ব না করে সর্বপ্রথম মনোযোগ দেন দলীয় কোন্দল নিরসনের দিকে। তিনি প্রতিদিনই কোন না কোন এলাকায় আপোষ মীমাংসা করে দিচ্ছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে তিনি উভয় গ্রুপের নেতাদের একত্রিত করে পারিবারিক পরিবেশে দ্বন্দ মিটিয়ে দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে দুইটি উপজেলার সকল নির্বাচিত মেয়র, কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নিয়ে ঘরোয়াভাবে তিনি মতবিনিময় সভা করেছেন।
জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌকিদার বলেন, জাজিরা উপজেলায় ৯০ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগের ভোটার ও শুভাকাংখী। এখানে কমবেশী পুরনো আভ্যন্তরিন দ্বন্দ বিরাজমান ছিল। ইকবাল হোসেন অপু ইতিপূর্বে সকল গ্রুপের লোকদের অন্তর্ভূক্ত করে জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। তৃণমূলের দ্বন্দ মিটানোর উদ্যোগ তার চলমান প্রক্রিয়া । তার এ উদ্যোগের কারণে জাজিরা উপজেলায় সংগঠনের মধ্যে আর কোন বিভক্তি থাকবেনা। দলীয় ঐক্যমত্যের এমন নজিরবিহীন পদক্ষেপ গ্রহন করায় ইকবাল হোসেন অপু অভাবনীয়ভাবে প্রসংশিত হচ্ছেন।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ সংগঠন। এতবড় দলে কিছু দ্বন্দ থাকাটাই স্বাভাবিক। তারপরেও সকল বিরোধ মীমাংসা করে দলকে একত্রিত রেখে এগিয়ে নেয়াই দলীয় নেতাদের দায়িত্ব। জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগকে সাথে নিয়ে মাননীয় সাংসদ তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একত্রিত করে দেয়ার উদ্যোগ নিয়ে তিনি সফল হচ্ছেন। এতে আমাদের সংগঠন অধিকতর শক্তিশালী হবে।
ইকবাল হোসেন অপু বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন ইউনিয়নে দলের অভ্যন্তরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে কিছুটা মতানৈক্য চলে আসছিল। তৃণমূলের কর্মীরাই সংগঠনের অস্তিত্ব। জননেত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সম্মানের দৃষ্টিতে দেখেন। তাদের প্রতি তিনি আস্থাশীল। সেই তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্য বিভক্তি থাকলে দল দুর্বল হয়। আর ঐক্যবদ্ধ থাকলে সভানেত্রীর হাত শক্তিশালী হয়। আমি সকল বিভেদ দুর করে সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ রাখার উদ্যোগ নিয়েছি। আওয়ামী লীগে একতা থাকলে জাতির পিতার আত্মা শান্তিতে থাকে। তিনি আরো বলেন, শুধু ভোটের জন্যই নয়, দেশ বিরোধী অপশক্তি রুখতে একতাবদ্ধ আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই।
(কেএনআই/এসপি/ডিসেম্বর ০৬, ২০২৩)