‘বাবা টেলিফোন অপারেটর ছিলেন, দায়িত্ব দেওয়ার খবরে আবেগী হয়ে যাই’
স্টাফ রিপোর্টার : বাবা টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অপারেটর ছিলেন, তাই নির্বাচনকালীন সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়ার খবর শুনে আবেগ তাড়িত হয়ে যান বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং অধীন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে বৈঠক করেন পলক। তিনি সচিবালয়ে উপস্থিত হলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
বৈঠকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের দায়িত্ব পাওয়ার পর আবেগতাড়িত হয়ে পড়ার কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
জুনাইদ আহমেদ পলকের বাবা ফয়েজউদ্দিন আহমেদ পেশায় একজন টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অপারেটর ছিলেন।
বাবার স্মৃতিস্মরণ করে পলক বলেন, যখন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের দায়িত্ব দেওয়ার সুখবরটি দিলেন, তখন নিজেকে আমি ধরে রাখতে পারিনি, আমি ভীষণ আবেগতাড়িত হয়ে যাই। কারণ আবার বাবা একজন টেলিকম অপারেটর ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার বাবা ফয়েজউদ্দিন আহমেদ গ্রামের ছেলে। তিনি চলনবিলের প্রত্যন্ত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নাটোর থেকে গিয়ে বগুড়া আজিজুল হক কলেজে লেখাপড়া করতেন। খুবই অল্পবয়সে এইচএসসি পাস করেন। সেই সময়ে রাজশাহীতে একটি ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। যেহেতু খুব বেশি ধর্নাঢ্য পরিবারের সন্তান ছিলেন না, যে কারণে টেলিফোন এক্সচেঞ্জের অপারেটর পদে চাকরি নিয়েছিলেন।
‘তিনি দিনাজপুরে গিয়ে জয়েন করেন। যে কারণে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের লেখাপড়া শেষ করা হয়নি তার। তারপর বদলি হয়ে বগুড়ায় আসেন এবং আমার মায়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এরপর সান্তাহার, নাটোর, চুয়াডাঙ্গা এক্সচেঞ্জেও তিনি টেলিফোন অপারেটর পদে চাকরি করেন।’
বাবা ১৯৫৭ সালে চাকরি নিয়েছিলেন জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সকালে মাকে জিজ্ঞেসা করেছিলাম, আব্বার বেতন কত ছিল? তিনি বললেন ১২৫ টাকা। যাই হোক, এসব কারণে টেলিকম খাতের সঙ্গে আমার একটা আবেগের সম্পর্ক রয়েছে। আমি ভাবলাম, আজ আপনাদের সঙ্গে তথ্যটি শেয়ার করি। যেদিন দায়িত্ব নেওয়ার খবরটি পাই, মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলাম। মা মনে করেছিলেন, কোনো দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। আমি আসলে আনন্দটা প্রকাশ করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলাম না।’
তিনি বলেন, ‘টেলিকমখাতও কিন্তু আইসিটিরই একটি সহায়ক বিভাগ এবং একই মন্ত্রণালয়ের আওতায়। ২০১৪ সালে এটি ছিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। তারপর সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী এটির নাম দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। দুটি বিভাগ ও দুটি মন্ত্রণালয়কে এক করে দিলেন।’
(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৫, ২০২৩)