রাজবাড়ীতে নারী শিক্ষার্থীদের বাল্যবিবাহ ও আত্মহত্যা বিরোধী সাইকেল র্যালি
একে আজাদ, রাজবাড়ী : "আমার জীবন আমার অধিকার, বাল্যবিয়ে রুখবো এবার" এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ীতে প্রায় শতাধিক নারী শিক্ষার্থী সাইক্লিস্টদের অংশ গ্রহনে বাল্যবিবাহ ও আত্মহত্যা বিরোধী ব্যতিক্রমি সাইকেল র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজবাড়ী জেলা পুলিশের আয়োজন ও প্রান্তি জনকল্যান সংস্থার সহযোগিতায় এ সাইকেল র্যালির উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ।
সাইকেল র্যালিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক নারী সাইকেল নিয়ে অংশগ্রহণ করে।এছাড়াও পায়ে হেঁটে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুই শতাধিক নারী শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।র্যালিটি পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার একই স্থানে এসে শেষ হয়েছে।
রোকসানা নামের এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, আজকের এই সাইকেল র্যালীর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিবারের বড়দেরকে ও মেয়েদেরকে সচেতন করা।যেনো পরিবারের প্রত্যেক মেয়েদেরকে ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেওয়া না হয়।১৮ বছরের আগে তাদের বিয়ে দিলে মেয়েরা যেনো রুখে দাঁড়ায়।আজকের এই সাইকেল র্যালির মাধ্যমে আমাদের ম্যাসেজ এটাই যে ১৮ বছরের আগে কোন কন্যা সন্তানকে যেনো তাদের পরিবার বিয়ে না দেই।আজকের এই ব্যতিক্রম ধর্মী সাইকেল র্যালির আয়োজক রাজবাড়ী জেলা পুলিশকে ধন্যবাদ জানায়।
র্যালীতে আসা একাধিক নারী শিক্ষার্থী বলেন, বর্তমান সমাজে বাল্য বিবাহ ও আত্মহত্যার প্রবণতা অনেক বেশি বেড়ে গেছে।আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ বাল্য বিবাহ। তাই আমাদের সকলের পরিবারের উচিত বাল্য বিবাহ না দেওয়া।আজকের এই র্যালীর মাধ্যমে আমরা বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।যাতে অল্প বয়সে আর কোন মেয়ের জীবন নষ্ট না হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা পুলিশ সুপার জি.এম.আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাইকেল লাভার রাজবাড়ী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রান্তিক জনকল্যাণ সংস্থা সমাজে মাদক বিরোধী কর্মকান্ড ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে,আত্মহত্যা রোধে কাজ করে থাকে।যেহেতু মাদক ও আত্মহত্যার সাথে পুলিশের সংযোগ রয়েছে তাই আমরা জেলা পুলিশ তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছি।যেহেতু বাংলাদেশ আত্মহত্যার প্রবণতা আগের থেকে অনেকটা বেড়েছে তাই আমরা যদি সমাজের মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারি তাহলে আত্মহত্যার প্রবণতা কমানো সম্ভব।এছাড়াও সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করা সম্ভব।আমরা এ ধরনের ভালো উদ্যোগের সাথে জেলা পুলিশ সবসময় পাশে থাকবো।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অর্থ) মো.রেজাউল করিম,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মো.ইফতেখারুজ্জামান, ডিআইও-১ বিপ্লব দত্ত চৌধুরী,সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো.ইফতেখারুল আলম প্রধান,জেলা গোয়েন্দা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.মনিরুজ্জামান, প্রান্তিক জনকল্যাণ সংস্থার প্রতিনিধি, সাইকেল লাভার রাজবাড়ী গ্রুপের প্রতিনিধি ও জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
(একে/এএস/ডিসেম্বর ০৩, ২০২৩)