কলকাতায় আন্তর্জাতিক বইমেলা শুরু ১৮ জানুয়ারি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শারদ উৎসবের পরে পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বড় উৎসব আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। আগামী ১৮ জানুয়ারি ৪৭তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার উদ্বোধন হবে। বইমেলা চলবে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। সল্টলেক বইমেলা প্রাঙ্গণে মেলার উদ্বোধন করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। বইমেলার অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কলকাতার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে (দ্য পার্ক) সংবাদ সম্মেলন করে বইমেলা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য দেন আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার আয়োজক সংস্থা বুক সেলারস অ্যান্ড গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন গিল্ডের সভাপতি সুধাংশু শেখর দে, কলকাতায় নিযুক্ত উত্তর ও উত্তর পূর্ব ভারতের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্রিটেনের ডেপুটি হাইকমিশনার অ্যান্ড্রু অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিং, ব্রিটিশ কাউন্সিলরের পরিচালক (উত্তর ও উত্তর-পূর্ব ভারত) ড. দেবাঞ্জন চক্রবর্তী প্রমুখ।
ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় জানান আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা ২০২৪ কয়েকদিন এগিয়ে নিয়ে আসতে হয়েছে। এর প্রধান কারণ বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বোর্ড পরীক্ষা শুরু হয়ে যাচ্ছে জানুয়ারির শেষ থেকে। মেলার এই সময় পরিবর্তন বইপ্রেমীদের কাছে সুখবর বলেই মনে করছেন তারা। কারণ ২টি শনিবার ও ২টি রোববার ছাড়াও এবার ২৩ ও ২৬ জানুয়ারিও ছুটির দিন।
তিনি বলেন, ৪৭তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার ফোকাল থিম কান্ট্রি যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক নিবিড়। তাছাড়া বইমেলার অবিচ্ছেদ্য অংশ ব্রিটিশ কাউন্সিলেরও ভারতে উপস্থিতির ৭৫ বছর। এবারের মতো, ১৯৯৮ এবং ২০১৫ সালেও যখন গ্রেট ব্রিটেন থিম ছিল এবং ২০০৯ সালে যখন থিম ছিল স্কটল্যান্ড তখনও তারা প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন।
গ্রেট ব্রিটেন ছাড়াও প্রতিবছরের মতো আগামী বইমেলায় অংশগ্রহণ করছে আমেরিকা, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, পেরু, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া প্রভৃতি দেশ। তাছাড়া প্রায় ১২ বছর পর এতে অংশ নিচ্ছে জার্মানি। এছাড়া ভারতের অন্যান্য রাজ্য, যেমন দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, তামিলনাডু, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, বিহার, আসাম, ঝাড়খন্ড, তেলেঙ্গানা, কেরালা, উড়িষ্যা... ইত্যাদি রাজ্যের প্রকাশনাও থাকছে। যথারীতি থাকবে লিটল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়ন, চিলড্রেনস প্যাভিলিয়ন ও অন্যান্য আকর্ষণও।
গ্রেট ব্রিটেন থিম কান্ট্রি হওয়ায় মেলায় সবচেয়ে বড় প্যাভিলিয়নটি থাকছে তাদের। এরপরে দ্বিতীয় বৃহত্তম প্যাভিলিয়ন থাকছে বাংলাদেশের, তাদের প্যাভিলিয়নের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে তিন হাজার বর্গফুট।
আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার অন্যতম আকর্ষণ তিনদিনের কলকাতা লিটারেচার ফেস্টিভ্যাল (কেএলএফ)। ত্রিদিব বলেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা পৃথিবীর বৃহত্তম পাঠকধন্য বই উৎসব।
২০২৩ সালের বইমেলায় এসেছিলেন ২৬ লাখ বইপ্রেমী। বই বিক্রির পরিমাণ ছিল ২৫ কোটি টাকা। এই অভাবনীয় সাফল্যে আমরা যেমন আনন্দিত, তেমনই কিছুটা চিন্তিতও। কারণ আগামী বইমেলায় অংশগ্রহণের জন্য অনেক নতুন প্রকাশক আবেদন করেছেন। অথচ বইমেলা প্রাঙ্গণের পরিসর একই আছে। তবু পরিকল্পনা চলছে, কী করে আরও নতুনদের মেলায় জায়গা দেওয়া যায়।
(ওএস/এএস/নভেম্বর ২৯, ২০২৩)