কলকাতায় ৪ ডিসেম্বর শুরু হবে ১১তম বাংলাদেশ বইমেলা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম গত বছর ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্রতি বছর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের সোমবার থেকে কলকাতায় শুরু হবে বাংলাদেশ বইমেলা। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, এবার কলকাতায় ১১তম বাংলাদেশ বইমেলা শুরু হচ্ছে আগামী ৪ ডিসেম্বর। চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন ও বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক-বিক্রেতা সমিতির সম্মিলিত উদ্যোগে গত দশ বছর ধরে কলকাতায় বাংলাদেশ বইমেলা হয়ে আসছে।
সোমবার (২০ নভেম্বর) বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের বাণিজ্য শাখার সচিব শামসুল আরিফ জানিয়েছেন, বিগত বছরগুলোর মতো এ বছরও বাংলাদেশের প্রথিতযশা ও উদীয়মান কবি, সাহিত্যিক লেখকদের সৃষ্টি, বইয়ের মোড়কে পুস্তকের সম্ভার কলকাতায় হাজির করবেন বাংলাদেশি প্রকাশকরা। তাছাড়া গতবারের মতো ১১তম বাংলাদেশ বইমেলাও অনুষ্ঠিত হবে কলকাতার বইপাড়া নামে খ্যাত কলেজ স্ট্রিটের কলেজ স্কোয়ারে।
শুধুমাত্র বাংলাদেশের বইয়ের পসরা নিয়ে ২০১১ সালে কলকাতায় প্রথম শুরু হয় বাংলাদেশ বইমেলার। সে সময় বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল গগনেন্দ্র প্রদর্শশালার কক্ষে। তবে মেলাটিকে নির্দিষ্ট স্থানে রাখা যায়নি। বারবার স্থান ও সময়ের পরিবর্তন হয়েছে। এরপর নন্দন-রবীন্দ্রসদন চত্বর ঘুরে বাংলাদেশ বইমেলা হয়েছে রবীন্দ্রসদনের পশ্চিম পাশের মোহরকুঞ্জ প্রাঙ্গণে। মাঝে করোনাভাইরাসের কারণে ২০২১ সালে এই মেলা হয়নি।
এরপর ২০২২ সালে প্রথমবারের জন্য বাংলাদেশ বইমেলা অনুষ্ঠিত হয় কলেজ স্কোয়ারে। তখনই উদ্যোক্তারা প্রকাশ্যে মঞ্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার অনুমতি দিলে শহরের বইপাড়া অঞ্চলে বাংলাদেশ বইমেলা স্থায়ীভাবে করতে চান তারা। সেবার রাজ্য সরকারে পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে কোনো সম্মতি না দিলেও, এ বছর এ বইমেলা কলেজ স্ট্রিট চত্বেরই হচ্ছে। গতবার বাংলাদেশ বইমেলা উদ্বোধন করেছিলেন বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি, পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু সহ বিশিষ্টজনরা।
তবে ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন রয়েছে। ফলে বইমেলার দিনে কোনো মন্ত্রী বা সংসদ সদস্য উপস্থিত থাকবেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে উপ-হাইকমিশন। এখনো শিডিউল তৈরি না হলেও জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের কবি-সাহিত্যিক-প্রবন্ধকাররা উপস্থিত থাকবেন। উপস্থিত থাকবেন একাধিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। মেলা মঞ্চে প্রতি সন্ধ্যায় থাকবে বিষয়ভিত্তিক সেমিনার, কবিতা পাঠ ও বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
কলকাতার বই পাড়ায় মূলত নিত্যদিনই ভিড় লেগে থাকে। একদিকে, যেমন গোটা বাংলার পাইকারি ও খুচরা বইয়ের বাজারে এই কলেজ স্ট্রিট। অন্যদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা মেডিকেল কলেজ, সংস্কৃত কলেজ, হেয়ার স্কুলসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে কলেজ স্ট্রিট জুড়ে। এছাড়া বাড়তি পাওনা কফি হাউজের আড্ডা প্রেমীদের জমায়েত। এসব কারণেই উদ্যোক্তাদের পছন্দের স্থান এটি।
গতবার ৭৭টি বাংলাদেশি প্রকাশনা বইমেলায় অংশ নিয়েছিল। আয়োজকদের মতে, কলেজ স্ট্রিট বেছে নেওয়ার কারণে অন্যান্য বারের তুলনায় গত বছর লাভের মুখ দেখেছিল প্রকাশকরা। ফলে আশা করা হচ্ছে, দুই বাংলার ভাবের আদান-প্রদান ও ব্যবসায়িক লাভ মিলিয়ে এবারও পশ্চিমবঙ্গের পুস্তকপ্রেমীদের নজড় কাড়বে বাংলাদেশ বইমেলা।
(ওএস/এএস/নভেম্বর ২১, ২০২৩)