দীপক চন্দ্র পাল, ধামরাই : আগামী ২০ অক্টোবর মহা পঞ্চমীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে হিন্দু সম্প্রদায়েরর অন্যতম প্রধান ধর্মীয় শারদীয়া উৎসব। ধর্মীয় রীতি মতে এবার দেবী দূর্গা ঘোটাকে আগমন করবেন- ঘোটাকেই চলে যাবেন দেবী। ঢাকার পাশে ও সন্নিকটে এবার ধামরাই উপজেলার একটি পৌর সভা ও ষোল টি ইউপির বিভিন্ন স্থানে ২ শতাধিক স্থায়ী ও অস্থায়ী মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসবের আয়োজনে শিল্পী-পূজারীরা প্রতিমা গড়ার কাজে এখন মহাব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

শিল্পী নিখিল পাল বলেন তিনি এবার চারটি মূর্তি তৈরীর অর্ডার নিয়েছেন। তিনি বলেন বাঁশ খড় ও রশি দিয়ে অব কাঠামো তৈরীর পর মূর্তির জড়া তৈরী শেষে মাটির কাজ শুরু করেছি। কায়েত পাড়ার মাধব মন্দিরের সামনে এই পুজাটি ধামরাইয়ে সব চেয়ে আর্কশনীয় হয়। এজন্যে এই কাজ টি আগে করেছি। সময় হাতে আছে সঠিক সময়েই রং তুলির ও সাজ সজ্জার কাজ শেষ করতে পারবো বলেন। শিল্পী নিখিল পাল বলেন এই পূজায় মূর্তি তৈরী করে যে আয় হয় তা দিয়ে আমাদের সংসার চালাতে হয়। দ্রব্য মূল্যের দাম বেশী হওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বাঁশ দিয়ে অবকামো তৈরী,প্রতিমা শিল্পীরা তাদের সহ কর্মীদের দিয়ে মাটি নরম ও তৈরী করার পর প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি ও মূর্তি গড়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। একাধিক প্রতিমা অর্ডার নিয়ে দিন রাত মূর্তি গড়ার কাজে মহা ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। আগামী ২০ অক্টোবর শারদীয় উৎসব, এর আগেই সকল প্রকার সাজ-সজ্জার কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে জানালেন শিল্পী কারিগড়, আয়োজক পূজারী বৃন্দ।

প্রতি বছরের মত জাঁক জমক পূন্য ভাবে এবারো পূজার আয়োজন করেছেন বলে জানান ধামরাই কায়েদ পাড়া মাধব মন্দির সংলগ্ল দূর্গা মন্দিরের সাধারন সম্পাদক প্রাণ গোপাল পাল জানান সার্বজনীন এই উৎসব সকলের সার্বিক সহযোগিতায় অনূষ্ঠিত হয়ে থাকে। অবকাঠামো তৈরী শেষে মূতি মাটি দিয়ে মূর্তি গড়ার কাজ চলছে। এবার আয়োজন বর্ধিত কলেবরে হবে বলেও জানান তিনি।

ধামরাইয়ের বিশ্বকর্মা পুজারীদের অন্যতম নেতা ও শিল্পী সুকান্ত বণিক বলেন, শিল্পীরা মাটির কাজ করছেন। শুকানোর পর সুক্ষ সুক্ষ কাজগুলি করবেন।তার পর অক্টোবর মাসে রং ও সাজ সজ্জার কাজ সম্পন্ন করবেন। পুজাকে কেন্দ্র করে ঘরে ঘরে উৎসব আমেজ বিরাজ করছে বলেন। ঢাকার পাশেই ধামরাই একটি ঐতিহ্যবাহী অতি প্রাচীন জনপদ। এখানে প্রায়ই বিদেশী পর্যটকরা ভ্রমনে আসেন। অথচ এখানকার প্রধান সড়কটিই দিনে দিনে দখল হয়ে ক্ষিনকায় রূপ নিচ্ছে। রাস্তার উপর বসে হাঠ। তার উপর স্থায়ী দোকানের সামনে ফুটপাত ও রাস্তার উপর কাচামালের দোকান বসানো হয়েছে।এর পরেও আরেক ধাপে কাচা মালের দোন বসে। ফলে প্রধান সড়কটিতে অতিরিক্ত অটো ইজিবাইক সহ বিভিন্ন যান বাহনের ভীড়ে পথ চারীদের চলাচলে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিদেশী পর্যটকরাও এই ধামরাইয়ে পূজা সহ বিভিন্ন সময়ে বেড়াতে এসে ও ভীড় করেন। পুজার ক দিন বাইপাস সড়ক ব্যবহার করে ও রাস্তার যেথানে সেখানে দোকান গুলি সঠিক ব্যবস্থপনার মাধ্যমে প্রশস্ততা বজায় রাখার ব্যবস্থা করা দরকার।

মাধব মন্দির কমিটি ও ঢাকা জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক পুজারী নন্দ গোপাল সেন বলেন ২০ অক্টোবর মহা পঞ্চমীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে হিন্দু সম্প্রদায়েরর অন্যতম প্রধান ধর্মীয় শারদীয়া উৎসব। ধর্মীয় রীতি মতে দেবী এবার“দেবী দূর্গা ঘোটাকে আগমন করবেন- ঘোটাকেই চলে যাবে দেবী”।বাংলাদেশের উপজেলা গুলির মধ্যে ধামরাই উপজেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মন্দিরে এ পূজার আয়োজন সব চেয়ে বেশী। এবার ধামরাইয়ে ২ শতাধিক দূর্গা মন্দিরে শারদীয়া উৎসবে আয়োজন হচ্ছে। প্রশাসন থেকে সার্বিক আইন-শৃংখলা পরিবেশ নিয়ন্ত্রনে রাখতে পুজারী নের্তৃবৃন্দদের সাথে পুলিশ প্রশাসনের উধ্বতন কর্মর্তার মতবিনিময় করে প্রযোজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। পৌর এলাকার বিভিন্ন মন্দিরে ৪৪ টি পূজার আয়োজন রয়েছে।বাকি সব পূজা হচ্ছে ধামরাই উপজেলার ১৬ টি ইউপির বিভিন্ন এলাকায়।তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন প্রতি বছরের মত আ্সন্ন শারদীয় উৎসবও শান্তিপূর্নভাবে সম্পন্ন হবে বলেন।

ধামরাই থানার ওসি অপারেশ নির্মল দাশ বলেন প্রতি বছরের মত এবারো শারদীয়া দূর্গা পূজা উপলক্ষে প্রশাসনিক প্রয়োজনী সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ধামরাই উপজেলায় এবার ২ শতাধিক মন্দিরে পুজা হবে। তিন স্তরের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেন। প্রতি বারের মতো এবারো শান্তিপূর্ন ভাবে পূজা উৎসব সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।ইতি মধ্যেই উপজেলার প্রতিটি মন্দিরে খোজ খবর রাখা হচ্ছে বলেন।

(ডিসিপি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩)