অবশেষে রাণীনগরে কৃষি প্রদর্শনীর অর্ধেক সার ফেরত পাচ্ছেন কৃষকরা
নওগাঁ প্রতিনিধি : অবশেষে সংবাদ প্রকাশের পর হয়রানীর মধ্যদিয়ে কৃষি প্রদর্শনীর অর্ধেক উপকরণগুলো ফেরত পাচ্ছেন নওগাঁর রাণীনগরে প্রদর্শনীপ্রাপ্ত কৃষকরা। গত বৃহস্পতিবার থেকে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের দূর-দূরান্তের কৃষকদের ডেকে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে রাখার পর না পাওয়া উপকরণের অর্ধেক সার হিসেবে ৬কেজি ইউরিয়া এবং ডিএপি ও পটাশ সার ৩কেজি করে প্রদান করা হচ্ছে। এতে করে কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, কৃষকদের প্রধান ফসল চাষের পাশাপাশি তেলফসলের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে চলতি আমন মৌসুমে স্বল্প জীবনের তেল ফসল চাষে সারা দেশের মতো রাণীনগর উপজেলায় ৪৫টি প্রদর্শনীর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৪৫ জন কৃষক বিনামূল্যে সার, বীজ ও অন্যান্য উপকরণ পাবেন। প্রকল্পের বরাদ্দ অনুসারে একটি প্রদর্শনীর জন্য একজন কৃষক ২৫ কেজি ইউরিয়া, ২০ কেজি ডিএপি, ১৫ কেজি পটাশ ও জিপসাম এবং ১ কেজি দস্তা সার পাবেন। অথচ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার প্রতিটি প্রদর্শনীর জন্য বরাদ্দকৃত সারের অর্ধেক সার উপজেলার প্রদর্শনীপ্রাপ্ত কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে সম্প্রতি “রাণীনগরে কৃষি প্রকল্পের উপকরণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ” শিরোনামে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচরে বসে কৃষি বিভাগ। নিউজের ভিত্তিতে জেলা কৃষি বিভাগ একটি তদন্ত কমিটি করে। এরপর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারহানা নাজনীন প্রদর্শনী প্রাপ্ত সার কম পাওয়া কৃষকদের ডেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর গ্রহণ করার পর অবশিষ্ট সারগুলো বিতরণ করা শুরু করেছেন। এদিন কিছু কৃষককে দুপুর ১২টায় ডেকে কয়েক ঘন্টা কৃষকদের বসে রাখার পর ৬ কেজি ইউরিয়া এবং ডিএপি ও পটাশ সার ৩কেজি করে প্রদান করেন। এতে করে সামান্য সার নিতে এসে একজন কৃষককে দিনের অর্ধেক সময় কৃষি অফিসে এসে পার করার যে হয়রানী করা হচ্ছে সেই বিষয়টি নিয়ে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের ভেটি গ্রামের লোকমান সরদারের ছেলে প্রদর্শনী প্রাপ্ত কৃষক আনিছুর রহমান বলেন, একটি প্রদর্শনীর জন্য একবার বীজ, একবার অর্ধেক সার আবার একবার আরেক অর্ধেক সার নিতে আসতে হয় তাহলে এই হয়রানীর মূল্য কে দিবে। কৃষি অফিসে আসলে ওইদিন পুরোটাই নষ্ট হয়ে যায়। আবার অফিসে এসেই সবকিছু পাওয়া যায় না। ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকার পরই প্রয়োজন পূরণ হয়। তাই যদি উপকরণগুলো আমাকে একবারে দেয়া হতো তাহলে এই হয়রানী আর হতে হতো না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন এই বিষয়ের ভিত্তিতে আমি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত অব্যাহত রেখেছি। আর যে সব কৃষকদের সার কম দেয়া হয়েছে তাদেরকে বাকি সারসহ অন্যান্য উপকরণ সঠিক ভাবে বুঝিয়ে দিতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেছি। আমি আশাবাদি এরপর আর ওই উপজেলাতে এই ধরণের আর কোন অনিয়ম হবে না।
(বিএস/এসপি/আগস্ট ১৮, ২০২৩)