বন্দর মহিলা কলেজে কোচিং ফি ও মডেল টেস্ট’র নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ
জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম : শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে নগরীর ‘চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজ’ এর বিরুদ্ধে। বোর্ড নীতিমালা অনুসারে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রাম এর ফরম পূর্ণ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার নির্ধারিত ফি (সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত) বেতন ব্যতিত অন্য কোন অতিরিক্ত ফি আদায় না করার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা মানছে না চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজ।
জানা যায়, কলেজ কর্তৃপক্ষ এ নির্দেশনা অমান্য করে কোচিং ফি ও মডেল টেস্ট বাবদ অতিরিক্ত ১৫০০ টাকা আদায় বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। যদিও করোনাকালীন সময় অনেক অভিভাবক এর চাকুরী চলে যাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে নির্ধারিত ফি আদায় করা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত ফি আদায় সেখানে মরার উপর খাড়ার ঘা এর মত কাজ করছে।
এমনকি পরীক্ষার আগে কলেজ বিশেষ কোন সেবা দিতে চাইলে এর জন্য সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেতন পরিশোধ করা আছে। তার উপর আবার বিশেষ ক্লাসে ৫% পরীক্ষার্থীও উপস্থিত থাকে না। তবুও নানা বাহনায় অতিরিক্ত ফি আদায় করছেন বন্দর মহিলা কলেজ।
যা সম্পূর্ণ নীতিমালা বহির্ভুত বলে দাবি করেছেন কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) এর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কে বিষয়টি অনেকে মৌখিক ভাবে জানালেও কোন ধরনের ব্যবস্থা নেননি।
অন্যদিকে, গত এপ্রিল মাসে রমজান মাসের আরবি উচ্চারণ ‘রামাদান’ নিয়ে ফেসবুকে বিতর্কিত পোস্ট দেওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেলিনা আক্তার শেলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিলো। একইসঙ্গে পৃথক আরেকটি চিঠিতে ইংরেজি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মর্জিনা খানমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত ফি আদায় সম্পর্কে কথা বলতে চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহকারী অধ্যাপক মর্জিনা খানম এর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল এবং এসএমএস পাঠালেও তিনি ফোন ধরেননি।
তবে বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) মমিনুর রশিদ বলেন, ‘বন্দর মহিলা কলেজের এইচ.এস.সি-২০২৩ পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় প্রসঙ্গে অভিযোগ দেওয়া হলেও আমার টেবিলে এখনো আসেনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেননা, বাড়তি ফি নেওয়ার কোন সুযোগ নেই।’
এদিকে নীতিমালার বাইরে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত ফি নিতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ আবদুল মালেক। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধান সুবিধা নিতে পারেন না। এটা অন্যায়।’
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আখতার বলেন, ‘আমরা এটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। কেউ যেন শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে, সেজন্য আমরা ভর্তিসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই এটি মেনে চলতে বাধ্য।’
(জেজে/এসপি/জুলাই ১৫, ২০২৩)