অসময়েও জমে উঠেছে সিরাজগঞ্জের নাটুয়ারপাড়ার ভুট্টার হাট
মারুফ সরকার, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া হাটে অসময়েও জমে উঠেছে ভুট্টার হাট। যমুনা নদীর তীরে গড়ে ওঠা আশির দশকের এ হাট মূলত ভুট্টার জন্যই বিখ্যাত। এ মৌসুমে ভালো দাম পেয়ে খুশি দূরদূরান্ত থেকে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা।
নাটুয়ারপাড়া হাট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৬ সালে যমুনা নদীর চরে গড়ে ওঠে এই ভুট্টার হাট। সপ্তাহে প্রতি শনিবার ও বুধবার হাট বসে। এই হাটে ওঠা ভুট্টার মান ও দাম ভালো হওয়ায় ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে জামালপুরের সরিষাবাড়ি, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, ধুনট, শেরপুর, সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কেনাবেচা করতে ক্রেতা-বিক্রেতারা জড়ো হন এ হাটে। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার ভুট্টার বেপারি আজাহার আলী বলেন, ‘অন্যান্য হাটের তুলনায় নাটুয়ারপাড়া হাটে কমবেশি সারা বছর ভুট্টা পাওয়া যায়। এ হাট থেকে ভুট্টা নৌকায় নিয়ে যাওয়া যায়। এতে পরিবহন খরচ অনেক কম লাগে।’
কাজীপুরের নাটুয়ারপাড়া এলাকার ভুট্টা চাষি আব্দুল কাদের দৈনিক বাংলা ৭১কে বলেন, ‘মৌসুমে চরে ভুট্টা আবাদ করি। মৌসুমে ভুট্টার দাম কম থাকে। সে সময় অল্প বিক্রি করে কিছুদিন পর বাকিটা বিক্রি করি। এতে মৌসুমের চেয়ে কিছুটা বেশি দাম পাওয়া যায়।’ নাটুয়ারপাড়া হাটের ইজারাদার আব্দুর রহিম জানান, অন্যান্য এলাকার তুলনায় যমুনার চরে ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়। চরাঞ্চলের ভুট্টার গুণগত মান ভালো হওয়ায় সারা বছর এই হাটে ক্রেতা-বিক্রেতারা ভুট্টা বেচাকেনা করতে আসেন। দামও থাকে নাগালের মধ্যেই। প্রতি হাটবারে এখানে ৫০০ মণের ওপরে ভুট্টা কেনাবেচা হয়, পুরো মৌসুমে এক হাজার ৪০০-৫০০ মণ। ব্যবসায়ীদের হাত ধরে এই হাটের ভুট্টা নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুরের চৌরাস্তা, চন্দ্রা, ময়মনসিংহের ভালুকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়।
কাজীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম দৈনিক বাংলা ৭১কে জানান, গত রবি মৌসুমে কাজীপুর উপজেলায় আট হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ২৯৮ মণ ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে। চরাঞ্চল হওয়ায় নদীপথে জামালপুর, বগুড়াসহ সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ভুট্টা কেনাবেচা করতে ক্রেতা-বিক্রেতারা নাটুয়ারপাড়া হাটে আসেন।
(এমএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২)