নির্ধারিত সময়ের আগেই বড়পুুকুরিয়ায় কয়লা উত্তোলন শুরু
শাহ্ আলম্ শাাহী, দিনাজপুর : নির্ধারিত সময়ের ২০ দিন আগেই শুরু হয়েছে, দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলন। অন্যদিকে খনিতে কর্মরত শ্রমিকের মাঝে করোনা আতংক ছড়িয়ে পড়ায়, উত্তোলন কার্যক্রম শুরু হলেও কয়লা উত্তোলন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আজ বুধবার সকাল থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সাইফুল ইসলাম সরকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১ মে খনির ১৩১০ নম্বর ফেজ (কূপ) থেকে কয়লা উত্তোলন শেষে কূপটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী সময়ে পরিত্যক্ত ফেজ থেকে নতুন ফেজের যন্ত্রপাতি স্থানান্তর ও সংস্কারকাজ শেষে আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে নতুন ১৩০৬ নম্বর ফেজে কয়লা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের ২০ দিন আগেই পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু করা হয়েছে আজ বুধবার।
এদিকে, আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় নির্ধারিত হওয়ার বিপরীতে বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সেই সময় কয়লার মজুত ছিল ৩৬ হাজার টন, যা দিয়ে আগস্ট মাস পর্যন্ত চলার কথা নয়। ফলে কয়লার অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমে আসার শঙ্কা দেখা দেয়। এতে উত্তরাঞ্চলে লোডশেডিং বেড়ে যেতে যাওয়ার আশঙ্কা করে অনেকেই।
সুুুত্রটির মতে,আসংশ্লিষ্ট সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অধিক জনবল নিয়োগের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ২০ দিন আগেই পরীক্ষামূলকভাবে কয়লা উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হয়েছে। এমন খবরে কিছুটা হলেও স্বস্তি অনুভব করছেন এই অঞ্চলের মানুষ।
এ বিষয়ে কয়লাখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সাইফুল ইসলাম সরকার এ প্রতিবেদক শাহ্ আলম শাহী'কে জানান, খনির পরিত্যক্ত ফেজ থেকে নতুন ফেজের যন্ত্রপাতি স্থানান্তর ও সংস্কারকাজের জন্য গত ১ মে খনির ১৩১০ নম্বর ফেজ (কূপ) থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ করা হয়। পরে টানা ২ মাস ২৭ দিন বন্ধ থাকার পর পরীক্ষামূলকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। ফলে কয়লা সংকটের কারণে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত এবং উত্তরাঞ্চলে অতিরিক্ত লোডশেডিং হওয়ার যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল তা অনেকটাই কাটিয়ে উঠবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আজ সকালে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে এ কয়লা উৎপাদন উদ্বোধন করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে যন্ত্রাংশ অ্যাডজাস্টমেন্টসহ সব প্রক্রিয়া শেষে পুরোপুরি উৎপাদনে যেতে সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে। এরই মধ্যে করোনার কিছু প্রাদুর্ভাব রয়েছে। গত দুই দিন আগে এখানে ৩৫ জন শ্রমিকের করোনা শনাক্ত হয়। একই সঙ্গে মঙ্গলবার ১৪৩ জন শ্রমিকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ফলাফল আজ আসার কথা। এই প্রতিবেদনের ওপরে নির্ভর করবে আমরা কীভাবে এবং কোন দিকে এগিয়ে যাবো।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, খনিতে বর্তমানে ৪০ হাজার টন কয়লা মজুত রয়েছে। আশা করছি পুরোপুরি উৎপাদন চালু হলে প্রতিদিন ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টন কয়লা উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এতে দেশের বিদ্যুৎ খাতে যে ঘাটতি আছে তা কিছুটা কমে আসবে।
সংশ্লিষ্ট একটি সুত্র জানায়, খনিতে কর্মরত শ্রমিকের মাঝে করোনা আতংক ছড়িয়ে পড়ায়, উত্তোলন কার্যক্রম শুরু হলেও কয়লা উত্তোলন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
(এস/এসপি/জুলাই ২৭, ২০২২)