পর্ব-৬
প্রজন্মের কাছে এক মুক্তিযোদ্ধার খোলা চিঠি
প্রিয় প্রজন্ম,
তোমরা আমার ভালবাসা নিও। তোমরা লেখাপড়া কর, মানুষের মতো মানুষ হও। তোমরা সৎ ও দেশ প্রেমিক হও। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন বাঙালি জাতির বিভিন্ন গৌরবময় অর্জনের মধ্যে অন্যতম। তোমরা সুযোগ সুবিধা মত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়বে। তাহলে বাঙালি জাতির ত্যাগ ও বীরত্বের ইতিহাস জানতে পারবে। আমরা ব্রিটিশদের শাসন শোষনের হাত থেকে মুক্ত হয়েছিলাম ১৯৪৭ সালে। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান নাম রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছিল। এই রাষ্ট্রের দুটি অংশ ছিল পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান। পাকিস্তান ও বাঙালিদের শোষন করতো পশ্চিম পাকিস্তানী শাসক। তারা শাসনের নামে পূর্ব পাকিস্তানি ও বাঙালিদের শোষণ, নির্যাতন ও নিপিড়ন করতো। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের অবস্থানগত দূরত্ব ছিল ১২০০ কিলোমিটারের অধিক। তারা আমাদের ন্যায্য অধিকার দিত না। চাকরি ও অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে আমাদের কে বঞ্চিত করত। পূর্ব-পাকিস্তানের সম্পদ দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে কলকারখানা করতো।
১৯৫২ সালে উর্ধুকে রাষ্ট্র ভাষা করার উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু বাঙালিদের আন্দোলনের কারনে পারে নাই। বাংলা ভাষাকে রক্ষার জন্য রফিক, শফিক, বরকত ও জব্বার সহ অনেকে শহীদ হয়েছেন। শহীদ মিনার বাঙালিদের ভাষা আন্দোলনের স্মারক। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের পর ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের ১৬২ টি আসনের ১৬০টিতে গণ ভোটে বিজয়ী হয় তৎকালীন বাঙালিদের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। ৭টি সংরক্ষিত মহিলা আসনের অধিকারী হয়। মোট ১৬৭টি জাতীয় পরিষদের আসনের অধিকারী হয়ে আওয়ামী লীগ সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা লাভ করে। তখন দেশের সামরিক প্রেসিডেন্ট ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া খান। বাঙালিদের বিজয়ে বিহারী শাসক সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা দিতে নারাজ ছিলেন। তিনি ষড়যন্ত্র শুরু করলেন। সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের পরিকল্পনা করলেন। ২২ ফেব্রুয়ারী’৭১ পশ্চিম পাকিস্তানি জেনারেলদের এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান গোপন নির্দেশ দিলেন, ‘৩ মিলিয়ন আওয়ামী লীগ ও তাদের সমর্থকদের হত্যা করুণ। তাঁর ধরণা ছিল নির্যাতন করে লাখ দুয়েক বাঙালি হত্যা করলেই আন্দোলন থেমে যাবে’।
কালক্ষেপন করে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য ১৩ ফেব্রুয়ারী’৭১ ইয়াহিয়া মিথ্যা আশ্বাস দিলেন ৩ মার্চ’৭১ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন হবে। ১৬ ফেব্রুয়ারী বঙ্গবন্ধুকে পার্লামেন্টারী নেতা নির্বাচন করা হয়। ১ মার্চ ইয়াহিয়া খান দুপুর ১২টায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া বেতার ভাষণে ৩ মার্চ আহুত জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বে-আইনী ভাবে অনির্দিষ্টি কালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করলেন। বেতার ভাষন শুনে বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দিলেন। সারা দেশের মানুষ বাঁশের লাঠি হাতে রাস্তায় নেমে এলেন। পাকিস্তানি পতাকা পোড়ানো শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু ৩মার্চ কে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালনের নির্দেশ দিলেন। ২মার্চ ঢাকায় এবং ৩-৫ সারাদেশ ব্যাপী হরতাল আহবান করলেন। ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগের জনসভায় জাতীয় সংগীত হিসেবে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের-আমার সোনার বাংলা গানটি নির্বাচিত হলো। বঙ্গবন্ধুকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ও জাতির পিতা ঘোষণা দেওয়া হল। বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে স্বাধীন বাংলাদেশের ইশতেহার পাঠ এবং কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হলো। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উড়ানো হলো। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের ষড়যন্ত্র জাতির পিতা বুঝতে পারলেন। ৭ মার্চ’৭১ ঐতিহাসিক ভাষণে জাতির পিতা বললেন- “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম...।
১৫ মার্চ নতুন কুট কর্ম-কৌশল নিয়ে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঢাকায় আসেন। ১৬ মার্চ থেকে কাল ক্ষেপন ও ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের প্রস্তুতি মূলক কার্যাদি করার জন্য প্রহসন মূলক আলোচনা শুরু করেন। গোপনে গোপনে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সৈন্য ও গোলা বারুদ আনতে থাকেন। জেনারেল টিক্কাখান ও অন্যদের দিয়ে বাঙালি নিধন যজ্ঞ চালানোর জন্য অপারেশন সার্চলাইট, পরিকল্পনা চুড়ান্ত করেন। ২৫ মার্চ বিকাল পৌঁনে ৬টায় আলোচনা শেষ না করে অপারেশন সার্চ লাইট নামক বাঙালি নিধনযজ্ঞ চালানোর নির্দেশ দিয়ে প্রেসিডেন্ট বিশেষ বিমান যোগে গোপনে পশ্চিম পাকিস্তানে চলে গেলেন। পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি সৈনিক, ইপিআর ও অন্যান্যদের নিরস্ত্র করে আটক করতে থাকলো। অবস্থা বুঝে বাঙালি সৈনিক ও ইপিআর গণ অনেকে অস্ত্র নিয়ে এবং কেহ কেহ খালি হাতে পালিয়ে এলেন। ২৫ মার্চ’৭১ রাত সাড়ে ১১টায় টিক্কা খান মর্টাশেল, কামান ও অন্যান্য ভারী অস্ত্র নিয়ে অপারেশন সার্চ লাইট শুরু করে। তারা একযোগে পিলখানা ইপিআর ক্যাম্প, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, জগন্নাথ হল, ইকবাল হলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আক্রমণ করে। ঢাকা সহ অন্যান্য শহরে গণ হত্যা শুরু করে। নিরীহ, ঘুমন্ত বাঙালিদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। পাখির মত লোক হত্যা করে। বস্তি ও অন্যান্য স্থানে আগুন ধরিয়ে দেয়। বাঙালিদের উপর মুক্তিযুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়। দেশের সার্বিক অবস্থা দেখে ও বুঝে ২৬ মার্চ’৭১ প্রথম প্রহরে রাত ১২.২০মি.এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমন্ডিস্থ ৩২ নম্বর নিজ বাড়িতে উপস্থিত নেতা কর্মীদের সম্মুখে আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং শেষবাণী প্রদান করেন। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর বাঙালি সদস্যরা, ইপিআর, আনসার ও ছাত্র জনতা প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। রাত ১.১০টার পর জাতির পিতাকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ঢাকা সেনা নিবাসে নিয়ে যায়। পরের দিন জাতির পিতাকে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়।
২৬ মার্চ’৭১ চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে দুপুর ১.১০মি. এর পর প্রথম জাতির পিতার স্বাধীনতা ঘোষনার বার্তাটি পাঠ করেন চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এম,এ হান্নান। তখন সারা দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সারাদেশ তাদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করলো। মো: নুরুল আমিন ও অধ্যাপক গোলাম আযম সহ ১২জন ইসলামী দলগুলোর নেতারা টেক্কা খানের সাথে সাক্ষাত করে। টেক্কা খান স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রলোভন দেয় যে- ‘৭ডিসেম্বর’৭০ এর সাধারণ নির্বাচন বাতিল করা হবে। ২৬ মার্চ প্রেসিডেন্ট আওয়ামী লীগ কে নিষিদ্ধ ও শেখ মুজিব কে দেশদ্রোহী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। প্রেসিডেন্টের সাথে আমার কথা হয়েছে। দেশদ্রোহী হিসেবে শেখ মুজিব এর বিরুদ্ধে মামলা করে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে। নির্যাতন, ধর্ষণ ও জ্বালাও পোড়াও করে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী ও ভারতের দালাল হিন্দুদের কে শেষ করে দেওয়া হবে। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন পুনরায় সাধারণ নির্বাচন দিয়ে ইসলামী দলগুলোর হাতে পূর্ব-পাকিস্তানের ক্ষমতা দেওয়া হবে।’ টেক্কা খানের প্রলোভনে ইসলামী দলগুলোর অধিকাংশ নেতারা পাকিস্তানি সৈন্যদের সহযোগিতা করার অঙ্গীকার করলো। স্বাধীনতা বিরোধীরা পীচ কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও অন্যান্য বাহিনী করে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে যোগ দিল। জীবনের ভয়ে কিছু আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী ও এ দেশের হিন্দুরা ভারতে আশ্রয় নিল।
১০ এপ্রিল’৭১ প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠন করল। ১৭ এপ্রিল’৭১ শপথ গ্রহণ করল। মহান মুক্তিযুদ্ধ কী, কিভাবে যুদ্ধ করতে হবে, কতদিনে দেশ স্বাধীন হবে, একটি প্রশিক্ষিত ও আধুনিক অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন সম্ভব কিনা ইত্যাদি বোঝার বয়স তখন আমার হয় নাই। আমি তখন রতন কান্দি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। সকলের আলোচনার কথা শুনে জাতির ক্রান্তিকালে মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।
২৩ জুলাই’৭১, ৬ শ্রাবণ ১৩৭৯ শুক্রবার আমি প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহনে উদ্দেশ্যে ভারত রওনা হলাম। আমাদের শাহজাদপুরের প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য জনাব মোঃ আব্দুর রহমান সাহেব মুক্তিযুদ্ধে প্রশিক্ষণ দিতে ইচ্ছুকদের ভারতে নিয়ে গেলেন। আমাদের গ্রামের সুনিল কুমার রায় সহ আমরা ২২জন। আমাদের ঘাট থেকে নৌকা ছাড়া হলো। ঝুঁকি পূর্ণ এলাকা দেখে শুনে ভোরে আমাদের কে নামিয়ে দেওয়া হলো সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া নামক স্থানের কাছে। হেটে সুজানগর গেলাম। এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে আশ্রয় নিলাম, খাওয়া দাওয়া করলাম। এম,পি,এ স্যার পদ্মা পার হয়ে কুষ্টিয়া যাওয়ার জন্য নৌকা ভাড়া করলেন। সবাই বললেন দিনের বেলা পদ্মা পার হওয়া যাবেনা। পাকিস্তানি সৈন্য ও রাজাকাররা স্পিড বোর্ড দিয়ে পদ্মা নদীতে টহল দেয়। তারা নৌকা ধরলে সবাইকে নির্যাতন করে হত্যা করবে। দিনে সুজানগর থাকলাম। রাত ৯টায় নৌকা কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলো। রাত ২টার পর কুষ্টিয়া জেলার এক নিভৃত গ্রামে পৌঁছালাম। এক বাড়িতে আশ্রয় নিলাম। তারা প্রথমে কাঁঠাল গাছ থেকে কাঁঠাল পেরে মুরি দিয়ে খাওয়ালেন। জানা গেল স্থানটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অদূরে পাকিস্তানি আর্মি ক্যাম্প আছে। গ্রামেও পীচ কমিটির সদস্য আছে। তারা জানতে পারলে পাকিস্তানি আর্মি হাতে ধরিয়ে দেবে। পাকিস্তানি আর্মি নির্যাতন করে হত্যা করবে। ডাল ভাত রান্না হলো। আমরা তাড়াহুড়া করে খেয়ে হেটে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
ভারতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিলাম। ভারতে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে থাকায় অবস্থাতেই পোড়াও,হত্যা, গণহত্যা,ধষণ, নিপীড়নসহ বিভিন্ন নৃশংসতা মানবতা বিরোধী কর্মকন্ডের সংবাদ পেতাম। বীর মুক্তিযুদ্ধারা জীবনপন গেরিলা ও সম্মুখ যুদ্ধ চালাতে লাগলো। ৬ সেপ্টেম্বর ৭ নং সেক্টরের হেড কোয়াটার থেকে অস্ত্র,গোলা বারুদ্ধ ও অন্যান্য নিয়ে আমাদের গ্রুপ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এলাম।আমরা প্রথমত পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের দোসরদের আতঙ্কে রাখার জন্য “হিট এন্ড রান” পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করলাম। আমরা জাতির পিতার নির্দেশে জীবন পন মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন না করলে ভারতের পক্ষেও আমাদের কে সহযোগিতা করা সম্ভব হতো না । কারণ আমেরিকা ও চীন সহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের পক্ষে। ভারতের তদানীন্তন প্রধান মন্ত্রী শ্রী মতী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা,শরণার্থী ও পাকিস্তানি সৈন্যদের নৃশংসার ছবি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখিয়ে বিশ্বজনমত বাংলাদেশের পক্ষে এনে ছিল। ভারত সহযোগিতা না করলে আমরা মুক্তিযোদ্ধার এত তাড়া তাড়ি পাকিস্তানি সৈন্যদের আত্ম সমপর্ণ করিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আনতে পারতাম না। পশ্চিম পাকিস্তান প্রহসণ মূলক বিচারের মাধ্যমে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ফাঁসির আদেশ দিয়ে ছিল।
৩ ডিসেম্বর’৭১ পাকিস্তান ভারতে কে আক্রমণ করে ছিল। পাকিস্তান যখন ভারতে কে আক্রমণ করলো তখন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ভারত-পাকিস্তানে রূপ নিল।মুক্তিযোদ্ধাও ভারতীয় সৈন্য যৌথ কমান্ডে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদদ্ধে দূর্বার যুদ্ধ শুরু হলো। ৬ ডিসেম্বর’৭১ প্রথম ভুটান ও পরে ভারত বাংলাদেশের স্বীকৃতি দিল।১৬ ডিসেম্বর’৭১ পাকিস্তানি হানাদারেরা যুদ্ধের শোচনীয় পরাজিত হয়ে রেসর্কোস ময়দানে মাথা নিচু করে যৌথ কমান্ডের কাছে আত্ম সম্পর্ণ করতে বাধ্য হলো। বাংলাদেশ এর অস্থায়ী প্রবাসী সরকার ও বহি বিশ্বের চাপে পাকিস্তান জাতির পিতার প্রহসন মূলক বিচারের রায় ফাঁসির আদের্শ কার্য করি করতে পারলো না।
৮ জানুয়ারী’৭২ জাতির পিতাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হলো। জাতিার পিতা লন্ডন ও ভারতে বাঙালি বীরের সংবধনা নিয়ে ১০ জানুয়ারী’ ৭২ স্বাধীন বাংলাদেশে এলেন।১২ জানুয়ারী থেকে জাতির পিতার নতুন সরকার যুদ্ধ বিধবস্ত বাংলাদেশ শাসন শুরু করলেন। পাকিস্তান আমরা বেলকুচি থানা আক্রমণ যুদ্ধ কালিয়া হরিপুর রেলওয়ে ব্রিজ সংলগ্ন রাজাকার ক্যাম্প এ্যাম্বুস, কল্যানপুর ও শাহজাদপুর থানার ধীতপুর নামক স্থানে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধ করে বিজয়ী হয়েছি। তোমরা লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়বে। আমরা চাই তোমরা উচ্চশিক্ষিত মানবীয় গুণসম্পন্ন দেশ প্রেমিক হও।
ইতি,
মুক্তিযোদ্ধা দেবেশ চন্দ্র সান্যাল
রতন কান্দি, হাবিবুল্লাহ নগর, শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ।
(ডিএস/এসপি/জুন ০৫, ২০২২)