ব্রিজের মুখ বন্ধ করে বসতবাড়ি, দেড়শ বিঘা ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার আশংকা
-17.jpg)
তুষার কান্তি বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর (এলজিইডি)র ব্রিজের মুখ বন্ধ করে গোপালগঞ্জে বসতবাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। কাশিয়ানী উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের গোয়ালগ্রাম পশ্চিমপাড়া গ্রামের ইমরান শেখ ওই ব্রিজের মুখ বন্ধ করে বসতবাড়ি নির্মাণ করছেন। এতে ওই এলাকার প্রায় দেড় শ’ বিঘা ফসলি জমি জলাবদ্ধতার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। তারা দ্রুত ওই কাজ বন্ধ করে এলাকার কৃষিকে রক্ষা করে কৃষককে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন।
পদ্মবিলা গ্রামের মশিউর রহমান, গোয়ালগ্রামের মাসুদ শেখ বলেন, গোয়ালগ্রাম-পদ্মবিলা সড়কের গোয়ালগ্রাম পশ্চিমপাড়া চাঁন মিয়ার বাড়ি সংলগ্ন ব্রিজের মুখ বন্ধ করে এক্সেভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কাটছেন ইমরান শেখে। সেখানে তিনি বসতবাড়ি নির্মাণ করছেন। ইমরান গোয়ালগ্রামের মো. আজাহার শেখের ছেলে। বসতবাড়ি নির্মাণ করা জমির মধ্যে সরকারি খাস জমি রয়েছে। জমির মালিক প্রভাব খাটিয়ে কারও কোন কথা কর্ণপাত না করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
গোয়ালগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর বলেন, ‘সারা বছর বিলের পানি এ ব্রিজের নিচ দিয়ে ওঠা নামা করে। ব্রিজের মুখ বন্ধ করে বসতবাড়ি করায় পানি চলাচলা বন্ধ হয়ে যাবে। এতে গোয়ালগ্রাম ওপদ্মবিলা গ্রামের ১শ’৫০ বিঘা জমির পানি ওঠা নামা করতে পারবে না। বৃষ্টির পানি জমে শুস্ক মৌসুমে ওই সব জমিতে জলাবদ্ধতার সৃস্টি হবে। ফলে চাষাবাদ ব্যাহত হবে। ওই এলাকার কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এতে আমাদের এলাকার কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবো। তাই বাড়ি নির্মাণ কাজ বন্ধ করে পানি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
এ ব্যাপারে জমির মালিক ইমরান শেখ ব্রিজের মুখ বন্ধ করে বাড়ি নির্মাণের কথা শিকার করে বলেন, ব্রীজ বন্ধ হলে আমার কিছু করার নেই। ব্রিজের মধ্যে আমার জমি রয়েছে। তাই আমি আমার নিজস্ব দলিলের জমিতে বাড়ি করছি। আমার পাশের অনেকে খাস জমিতে বাড়ি-পুকুর করেছে। সেখানে কেউ কিছু বলেন না। এখন ব্রিজ কোন কাজে আসে না। তাই আমি অকার্যকর সরকারি ব্রিজের মুখ বন্ধ করে দিচ্ছি। ব্রিজবন্ধ করে সেখানে বসত ঘর বানাচ্ছি।’
মাহমুদপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ দাউদ হোসেন বলেন, মুহমুদপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর, সাতাশিয়া ও গোয়ালগ্রামে এ ধরণের সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যা সমাধন আমাদের কৃষি বিভাগের হাতে নেই। তাই ওই ৩ গ্রামের কৃষককে আমি উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর আবেদন করতে বলেছি। এসিল্যান্ড উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে এ সমস্যার সমাধান করতে পারেন। তা হলেই কৃষক জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পবে। কৃষি উৎপাদন ঠিক রাখা সম্ভব হবে।
কাশিয়ানী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরণের কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পাওয়ামাত্র আমরা অভিযান পরিচালনা করব। তবে কেউ অবৈধভাবে ব্রিজের মুখ বন্ধ করে রাখতে পারবো না। কৃষির স্বার্থে এগুলো অবমুক্ত করে দেয়া হবে।’
(টিকেবি/এসপি/এপ্রিল ১৮, ২০২২)