রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সুপার আবু তাহেরের ষড়যন্ত্রের কারণে নির্বাচনী তপশীল অনুযায়ি ঘোষিত তিন দিনেও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারলেন না সাতক্ষীরা সদরের আড়ুয়াখালি পায়রাডাঙা মুজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ২২ জন অভিভাক। এ ঘটনায় তারা মঙ্গলবার সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।

আড়ুয়াখালি পায়রাডাঙা মুজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র আব্দুল আজিজের বাবা হাজী আসাদুর রহমান, একই প্রতিষ্ঠানের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী শামীমা আক্তারের বাবা মোঃ শফিকুল ইসলাম ও সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী মোহিনী খাতুনের বাবা আবতাবউদ্দিনসহ ২২জন অভিভাবক মঙ্গলবার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদর মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২ জানুয়ারি ওই মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচন তপশীল ঘোষণা করা হয়।

৯,১০ ও ১১ জানুয়ারি সকাল ১০ টা থেকে বিকেল টারটা পর্যন্ত মাদ্রাসার সুপার মোঃ আবু তাহেরকে মনোয়নপত্র বিতরণ ও জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। ঘোষিত নির্বাচন তপশীল অনুযায়ি মাদ্রাসার এক একজন শিক্ষাথীর অভিভাবক হিসেবে তারা ৯, ১০ ও ১১ জানুয়ারি প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মাদ্রাসায় অপেক্ষা করে সুপার আবু তাহেরকে খুঁজে পাননি।

রবিবার পায়রাডাঙায় আছেন, সোমবার ব্যক্তিগত কাজে বাইরে ও মঙ্গলবার তাকে সদর প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে দেখা যায়। মোবাইল ফোনে তিনি জানান, মনোনায়নপত্র তিনি তার মনপছন্দের লোকের কাছে বিক্রি করবেন । অথবা ভোট না করে আপোষের মাধ্যমে কমিটি গঠণ করবেন। তাতে কারো কিছু বলা নেই। তবে তিনি ঝামেলা এড়াতে মঙ্গলবার তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে রাখেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মঙ্গলবার বিকেল চারটায় আড়–য়াখালি পায়রাডাঙা মুজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার অঅবু তাহেরের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান বলেন, তদন্ত করে ওই মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার আব্দুল গণি বলেন, ৯ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে না পেরে কয়েকজন অভিভাবক তার কাছে ওই দিন অভিযোগ করেন। একইভাবে ১০ জানুয়ারি ও ১১ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে না পেরে ২২জন অভিভাবক তার কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তার নির্দেশ পেয়ে সুপারকে মোবাইল করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে তিনি আইন অনুযায়ি ব্যবস্থা নেবেন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, ১১ জানুয়ারি বিকেলে অভিযোগ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি সুপারের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। সুপারের ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ওই সুপারের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল গণিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

(আরকে/এসপি/জানুয়ারি ১২, ২০২২)