দিলীপ চন্দ, ফরিদপুর : ধর্ষণ মামলায় হাজত খাটা আসামী ফরিদপুর ল্যাব এইড এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের সাবেক ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম বাবু হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে ধর্ষণ ও পনোর্গ্রাফী আইনের মামলার বাদিনী শান্তা ইসলাম এর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করে হয়রানী করা হচ্ছে বলে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানে মামলার কাগজপত্রে উল্লেখিত আসামী আমিনুল ইসলাম বাবু বাদিনী শান্তা ইসলামকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূবক যৌনচার করে। বাদিনী শান্তা ইসলাম আসামী আমিনুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল, ফরিদপুরে গত ২০ জুলাই ২০২০ ইং তারিখে ২৪৫/২০ নং ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। উক্ত আসামী তার ল্যাপটপে ও মোবাইল ফোনে থাকা আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন সমাজ মহলে দেখিয়ে ব্লাইকমেইলিং করার চেষ্টা করে এবং ২৪৫/২০ নং ধর্ষণ মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য হুমকী প্রদান করেন। পরবর্তীতে বাবু কিছু আপত্তিকর ছবি ভিডিও ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। বিসয়টি বাদিনী শান্তা ইসলামের দৃষ্টিগোচর হলে সে আইনের আশ্রয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখে পনোর্গ্রাফী আইনে আমিনুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে ৯৩৮/২০ নং মামলা দায়ের করলে আসামী আমিনুল ইসলাম বাবু ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২৩শে ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখে বাদিনী শান্তা ইসলাম এর বিরুদ্ধে ৮৪১/২০ নং মামলা দায়ের করেন।

আমিনুল ইসলাম বাবুকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল ধর্ষণ মামলায় গত ২০ জানুয়ারী ২০২১ ইং তারিখে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। আসামী উচ্চ আদালতে জামিন লাভ করেন। জামিনে বলা হয়েছে বাদিনীকে চাপ সৃষ্টি ও হয়রানী মূলক কাজ করা যাবে না। পরবর্তীতে আসামী বাবু হাজত থেকে বেরিয়ে বাদিনী শান্তা ইসলামের বিরুদ্ধে পনোর্গ্রাফী আইনে গত ১১ নভেম্বর ২০২১ ইং তারিখে ঘটনাস্থল ফরিদপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিকেশন এর অফিস দেখিয়ে ১নং আমলী আদালত, ফরিদপুরে জি.আর ৯৫৭/২১ নং মামলা দায়ের করলে কর্তব্যরত ম্যাজিষ্ট্রেট প্রভাবিত হয়ে আইনকে বৃদ্ধা আঙ্গুলী দেখিয়ে মামলাটি তদন্ত না দিয়ে এফআইআরের জন্য কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, বাদিনী শান্তা ইসলাম এর পনোর্গ্রাফী মামলার প্রতিবেদনে আমিনুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে ঘটনা সত্য প্রমানিত হওয়া সত্বেও সংশ্লিষ্ট আদালত তাকে গ্রেফতারী পরোয়ানা না দিয়ে পায়তারা করছে। এর সুযোগে আমিনুল ইসলাম বাবু শওকত আলী ফকির নামে এক ব্যাক্তিকে ম্যানেজ করে বাদিনী শান্তা ইসলামের বিরুদ্ধে গত ২২ নভেম্বর ২০২১ ইং তারিখে ৯৩২/২১ নং মামলা দায়ের করে। আদালত এই মামলার তদন্তভার ফরিদপুর ডিবি পুলিশকে প্রেরণ করেন। বাদিনী শান্তা ইসলাম এক কন্যা সন্তানের জননী এখন তার মামলার প্রতিকার পাওয়ার জন্য বিভিন্ন মহলে অসহায়ের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমিনুল ইসলাম বাবু বাদিনীর জীবন সংসার সব ধ্বংস করে ফরিদপুর শহরে বিভিন্ন মহলে আনন্দে মাতিয়ে বেরাচ্ছেন বলে যানান ভুক্তভোগী। এই বিষয়ে আসামী আমিনুল ইসলাম বাবুর সাথে কথা বলেলে তিনি বলেন। এই বিষয়ে আমি আইনের মাধ্যমে মোকাবেলা করবো। বাদিনী শান্তা ইসলাম সুবিচারের স্বার্থে আইনমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির দয়া ও হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

(ডিসি/এসপি/নভেম্বর ২৯, ২০২১)