১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
লেঃ জেনারেল নিয়াজী চট্টগ্রাম সফর করেন
উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : ২নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী কায়েমপুর পাকসেনা ঘাঁটি আক্রমণ করে। এই সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ২০১ জন সৈন্য নিহত ও ৮৩ জন আহত হয় এবং ৭০টি পাকসেনা বাঙ্কার ধ্বংস হয়। অপরপক্ষে ১০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও ৬ জন যোদ্ধা আহত হয়। মুক্তিবাহিনী কায়েমপুর ঘাঁটি ও পাকসেনাদের প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র দখল করে।
৭নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী মর্টারের সাহায্যে শারদায় পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ওপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর ৩০ জন সৈন্য ও রাজাকার নিহত এবং ৫০ জন আহত হয়।
রাজশাহীতে মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনীর কানপুর অবস্থানের ওপর এক দুঃসাহসিক অভিযান চালায়। এই অভিযানে ২ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং পাকসেনা স্থাপিত ক্যাম্প ও ৭টি বাঙ্কার ধ্বংস হয়।
কুমিল্লার চামুবসতি-তে পাকবাহিনী আক্রমণ চালালে মুক্তিবাহিনীর বীর যোদ্ধারা তা প্রতিহত করে। এতে ৩ জন পাকসৈন্য নিহত ও ৫ জন আহত হয়।
খুলনার ভোমরায় মুক্তিবাহিনী পাকসেনা অবস্থানের ওপর তীব্র আক্রমণ চালায়। এই সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ৪ জন সৈন্য নিহত হয়।
রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, বিলুপ্ত আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমানের সামরিক ট্রাইব্যুনালে গোপন বিচারের কাজ শেষ হয়েছে।
পিডিপি প্রধান নূরুল আমিন পিটিআই প্রতিনিধিকে জানান, তিনি প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে পশ্চিম পাকিস্তান যাচ্ছেন। তিনি এ আলোচনায় দুষ্কৃতকারীদের অত্যাচারে এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্যে আরও অর্থ বরাদ্দের দাবি করবেন বলে জানান।
লেঃ জেনারেল নিয়াজী চট্টগ্রাম এলাকা সফর করেন। পরে তিনি রাঙ্গামাটি যান। সেখানে তাকে চাকমা প্রধান ও নির্বাচিত এম.এন.এ রাজা ত্রিদিব রায় অভ্যর্থনা জানান।
জামালপুর জেলায় ইসলামপুর থানা আলবদর ইনর্চাজ এবং জেলা শান্তি কমিটির প্রচার সম্পাদক মুহম্মদ আব্দুল বারী দৈনিক সংগ্রামে এক চিঠিতে লেখেন, জামালপুরে পাকিস্তানপন্থী ও ইসলামপন্থী ছাত্ররা আলবদর বাহিনী গঠন করে দুষ্কৃতকারীদের জামালপুর, শেরপুর, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও নালিতাবাড়ি এলাকা থেকে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে।
‘জয়বাংলা’ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয় : কুষ্টিয়ার বাবলা চড়া ইউনিয়ন শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান তার অধীনস্থ ২২ জন রাজাকারকে সঙ্গে নিয়ে তাদের কাছে রক্ষিত বিপুল পরিমাণ রাইফেল, মেশিনগান, শটগান, স্টেনগানসহ মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
‘কালান্তর’ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয় : গত ১৫ দিনে খুলনা জেলার সাতক্ষীরা মহকুমার সাড়ে ৬৩ বর্গমাইল অঞ্চল থেকে মুক্তিবাহিনী খান সেনাদের হটিয়ে দিয়ে মুক্ত এলাকা স্থাপন করেছে।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/অ/সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৪)