সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) : নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের জুড়াইল গ্রামের পাশে অবস্থিত বগাজান বিলে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে শনিবার বিকাল অনুমান ৪ টার দিকে জুড়াইল গ্রামের দুই দলের লোকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।  জুড়াইল গ্রামের পাশের পাকা রাস্তায় ঘন্টা ব্যাপী এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। এদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় শাহজাহান, আবু ছালেক, শিপন, সাইমুন, হাবিব, আহম্মদ ও সাহাবুলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হেয়েছে। 

এছাড়া সংঘর্ষে আহত জয়নব আক্তার, মিনা আক্তার, আশরাফুল (১২), হিরন, রাজন (১৫), আলী উসমান, নাজমা, টিটু, নাইম (১৬), ফরিদ, সম্পদ, সোনা মিয়া, আকিরুল, স্বর্ণ মিয়া ও পপি আক্তারকে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জুড়াইল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আব্দুল জব্বারের ছেলে আশরাফুল আলম নান্টু জানান, তার বাবা ও প্রতিবেশী উমর ফারুখ ছোটনের নামে ওই বিলে সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত নেয়া আছে। সেই জমিতে দেয়া পাগাড় ভেঙ্গে প্রতিপক্ষের গ্রামের লোকেরা ৩/৪ দিন আগে জোর করে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এ নিয়ে উত্তেজনা চলছিল। শনিবার ওমর ফারুক ছোটনের ছেলে জোনাইদ বিলে গিয়ে প্রতিপক্ষের লোকদের কাছে পাগাড় ভাঙ্গার কারণ জানতে চাইলে তারা জোনাইদকে আটকে রেখে মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এ খবর পেয়ে জোনাইদের স্বজনরা বিলের দিকে দৌড়ে ছুটে যেতে থাকলে জুড়াইল পাকা সড়কের উপর প্রতিপক্ষের লোকেরা হামলা চালায় এসময় দুই গ্রুপের লোকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাঁধে।

সংঘর্ষের খবর পেয়ে কেন্দুয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার জোনাঈদ আফ্রাদ ও কেন্দুয়া থানার ওসি কাজী শাহ নেওয়াজ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ওসি কাজী শাহ নেওয়াজ জানান, সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশকে ১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়তে হয়েছে। আহতদেরকে স্বজনরা উদ্ধার করে কেন্দুয়া ও অন্যান্য হাসপাতালে নিয়ে গেছে।
এদিকে গ্রামবাসীর পক্ষে সিদ্দিকুর রহমান জানান, এই বিলটিকে মুক্ত জলাশয় হিসেবে ঘোষনার দাবীতে প্রায় ২ মাস আগে জুড়াইল বাজারে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। তাদের অভিযোগ বগাজান বিলটির জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে কতিপয় ব্যক্তির নামে বন্দোবস্ত নিয়ে তারা বিলটিকে দখলে নিয়ে গ্রামবাসীকে ঠকিয়ে মাছ ধরছিল। বামনখালি খাল, বগাজান বিল ও সুতি সাইডুলি নদীতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ইতিমধ্যে ৩ দিন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে অবৈধ জাল ও অন্যান্য সামগ্রী আটক করে।

(এসবি/এসপি/নভেম্বর ০৬, ২০২১)