রাস্তা নাই, কালভার্ট নাই ভোগান্তিতে শত শত পরিবার
দিলীপ চন্দ, ফরিদপুর : ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের শিহিপুর গ্রামে রাস্তা নাই, কালভার্টও নাই ফলে ভোগান্তিতে রয়েছে শত শত পরিবার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিহিপুর গ্রামের উত্তর পাড়ার নামমাত্র রাস্তাটির বেহাল দশা। গ্রামের মানুষ কাঁদা পানির মধ্য দিয়েই চালিয়ে নিচ্ছে তাদের দৈনন্দিন কাজ-কর্ম। এ যেন কাঁদা পানির সাথে একেবারে মাখামাখি অবস্থা। এখানে রাস্তা নেই বললেই চলে। তারপর আবার পাঁকা রাস্তা থেকে অনেকটা দূরে। কোন পন্য বাজারে নিয়ে যেতে হলে কাঁধে করে ঝুঁলিয়ে নিয়ে যেতে হয় র্দীঘ পথ।
এলাকাবাসী জানায়, আগে এখান দিয়ে সরকারি হালট ছিল। তারপর বিগত বছর দুয়েক আগে সামান্য পরিমানে মাটি দিয়ে তৈরী করা হয় নামমাত্র রাস্তা যা বৃষ্টির ফলে ভেঙ্গে জায়গায় জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দিনভর কাঁদা পানির মধ্য দিয়ে থাকার ফলে আক্রান্ত হচ্ছি নানা পানিবাহিত রোগে। আবার কেউ অসুস্থ্য হলে দ্রুত ডাক্তারের কাছেও নিতেও পারছিনা। নামাজ পড়তে যেতেও কষ্ট হচ্ছে। এ যেন পানি আসার আগেই বর্ষা।
এক মহিলা দুঃখের সহিত জানায় আমরা গরিব মানুষ। অসুখ-বিসুখ হলে কিভাবে চিকিৎসা নিব। ছোট বাচ্চারা দিনভর কাঁদা পানিতে থাকতে চায়।
শিহিপুর যেন পিছিয়ে পড়া একটি অবহেলিত গ্রামের নাম। উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৩/৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হলেও উন্নয়নের প্রায় কোন ছোঁয়াই লাগেনি এই গ্রামে। শিহিপুর গ্রামে যাতায়াতের বেশ কয়েকটি রাস্তা থাকলেও একটি বাদে সবই কাঁচা। আর বৃষ্টিতে কাঁচা রাস্তায় চলাফেরা কষ্টকর, সেই সাথে বৃষ্টির পানিতে রাস্তাও যায় তলিয়ে। ইটের তৈরী রাস্তাটাও প্রায় নষ্ট হবার পথে, সব কিছু মিলে সামান্য বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে শিহিপুর বাসি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিহিপুর গ্রামে দুটি পাড়ায় জনসংখ্যা প্রায় ১ হাজারের মতো। গ্রামে প্রবেশের কয়েকটি রাস্তা থাকলেও একটি রাস্তায় ইটের সোলিং বাদে বাকি সব কাঁচা। তা আবার পুরাতন এবং অতি বৃষ্টির কারনে ভগ্ন দশার মধ্যে রয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তার উপর পানি জমে যায়, সৃষ্টি হয় কাঁদা মাটির। স্কুল কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীরা কষ্ট করে রাস্তা পাড়ি দেয়। গ্রামে যানবাহন প্রবেশের তেমন কোন সুযোগও নেই। হঠাৎ করে কেউ যদি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাহলে এ্যাম্বুলেন্স গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পরে তাকে পায়ে হেটে অথবা কোলে করে নিয়ে যেতে হয়। একই ভাবে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ী প্রবেশেরও কোন সুযোগ নাই এ গ্রামে। বর্ষা মৌসুমে কেউ মারা গেলে তার লাশ নিয়ে অনেক সময় বিপাকে পড়তে হয় স্থানীদের।
স্থানীয়দের দাবী, গ্রামের ভেতরে যে রাস্তাটি আছে তাতে আরও ৩/৪ ফুট উঁচু করে মাটি কেটে ইট বা পাঁকা করলে এই সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে। দক্ষিন পাড়ার রাস্তা কিছুটা উচু হলেও উত্তরপাড়ার রাস্তা খুব খারাপ ও নিচু। গ্রামের ভেতরের সব রাস্তাই উঁচু করে নির্মান করতে হবে। স্থানীয়রা গ্রামের সড়ক উন্নয়নের জন্য সকলের নিকট সাহায্য চেয়েছেন।
রাস্তার বিষয়ে ভাওয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়া বলেন, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পরে ঐ গ্রামে বেশ কিছু রাস্তা নির্মান করেছি, আরও রাস্তা নির্মানের জন্য উপজেলা এলজিআরডি অফিসে স্কিম দেওয়া হয়েছে।
সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হাসিব সরকার বলেন, আমরা চেষ্টা করবো ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ঐ এলাকার রাস্তার সমস্যা সমাধান করার।
(ডিসি/এএস/আগস্ট ১৩, ২০২১)