১৭ জুন, ১৯৭১
বেলোনিয়ায় মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটিতে পাকবাহিনীর অতর্কিত হামলা
উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : টাঙ্গাইলের বাশাইল থানার পশ্চিমে কামুটিয়া নর্থখোলা খেয়া পারে পাকবাহিনীর সাথে কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ৫ জন সৈন্য নিহত হয়।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি ব্যাটালিয়ন ট্যাঙ্ক,আর্টিলারি ও মর্টার সহযোগে চট্টগ্রামে মুক্তিবাহিনীর চাঁদগাজী ঘাঁটির ওপর আক্রমণ চালায়। পাকিস্তানিদের এ ব্যাপাক হামলা ক্যাপ্টেন অলি, ক্যাপ্টেন শামসুল হুদা, ক্যাপ্টেন মতিউর রহমান তাঁদের নিজ নিজ বাহিনী নিয়ে সার্থকতার সাথে মোকাবেলা করেন। এ যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর কিছু ক্ষতি হলেও পাকবাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং পাকবাহিনীর ৪৫ জন সৈন্য নিহত হয়।
বেলোনিয়ায় মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটির ওপর পাকবাহিনী অতর্কিত আক্রমণ চালায়। প্রথম অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের আক্রমণ প্রতিহত করতে সক্ষম হলেও পরবর্তীতে বিমান বাহিনীর সহায়তায় পাকসেনারা আক্রমণ অব্যাহত রাখলে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে চিতলিয়ায় চলে আসেএবং সেখানে অবস্থান নেয়।
দিনাজপুর জেলার ঠনঠনিয়াপাড়া নামক স্থানে পাকবাহিনীর অবস্থানের ওপর আক্রমণের উদ্দেশ্যে মুক্তিবাহিনী অগ্রসর হয়। কোম্পানির দুটি কলামে বিভক্ত হয়ে একটি কলাম সন্মুখভাগ আক্রমণের জন্য মেজর নাজমুল হকের নেতৃত্বে এবং অপর কলাম সুবেদার মেজর এ. রবের নেতৃত্বে বিরল-ঠনঠনিয়া সড়কের ১৫০ গজ বামে ‘কাট অফ’ পার্টি হিসেবে ডিফেন্স নেয়।
যুগোশ্লোভ পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র বলেন, শরণার্থীদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির দায়িত্ব আর কারো নয়, পাকিস্তান সরকারের। পাকিস্তান সরকারের কার্যকলাপের দরুন আজ প্রায় ৬০ লাখ বাঙালি ভারতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতরভাবে উদ্বাস্তু হিসেবে জীবনযাপন করছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণ সিং শরণার্থী সমস্যা নিয়ে ওয়াশিংটনে মার্কিন কর্মকর্তারে সাথে বৈঠকে মিলিত হন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণ সিং ওয়াশিংটন প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তিদান ও বাংলাদেশের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি রাজনৈতিক সমাধানে উপনীত হবার লক্ষ্যে পাকিস্তান সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের প্রতি আহ্বান জানান।
পূর্ব পাকিস্তান সফররত ৩ সদস্যের বৃটিশ পার্লামেন্টারি দলের সদস্য মি. জেমস টিন বলেন, ‘বৃটিশ পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের সঙ্গে দেশের অবস্থা সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ভারতের একতরফা প্রচারের কারণেই বিদেশী পত্রিকায় সঠিক খবর প্রকাশিত হচ্ছে না।’
দলের আরেক সদস্য মিসেস নাইট বলেন, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী দুষ্কৃতকারী দমনে অত্যন্ত দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে এই নির্মমতার দরকার ছিল।’
পাকিস্তান সরকার ঘোষণা করেন, ‘ভারতীয় সেনাবাহিনীর আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তে বিনা উস্কানিতে মর্টার ও মেশিন গানের গোলাবর্ষণ করে অসংখ্য বেসামরিক লোককে হত্যা করেছে। কুমিল্লা, যশোর, রংপুর, রাজশাহীর সীমান্তবর্তী এলাকায় এসব ঘটনা নিয়মিত ঘটছে।’
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
(ওএস/এএস/জুন ১৭, ২০২১)