২৭ মে, ১৯৭১
কুড়িগ্রামের পাটেশ্বরীতে মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়
উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : বিকালে মুক্তিবাহিনীর এক প্লাটুন যোদ্ধা কুমিল্লার শালদা নদীর সিএন্ডবি রাস্তার ওপর পাকসেনাদের এ্যামবুশ করে। এ এ্যামবুশে পাকবাহিনীর ৯ জন সেনা নিহত হয় এবং একটি জীপ ও একটি ট্রাক ধ্বংস হয়।
মুক্তিযোদ্ধারা কুমিল্লার রাজাপুর এলাকায় অবস্থানরত পাকসেনাদের ওপর আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের এ অভিযানে ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়।
সাতক্ষীরায় ভেড়ামারা বাঁধে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর ওপর পাকিস্তানি দুই কোম্পানি সৈন্য দু-বার হামলা চালায়। সারাদিনব্যাপী যুদ্ধে পাকবাহিনীর দুজন অফিসার নিহত হয় ও একজন কমান্ডিং অফিসার আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের পাল্টা আক্রমণে পাকসেনারা পিছু হটে।
কুড়িগ্রামের পাটেশ্বরীতে মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে অজ্ঞাত এক মৌলভীর বিশ্বাসঘাতকতায় ১৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
পাকিস্তানি সামরিক কর্তৃপক্ষ ৫১নং সামরিক বিধির আওতাভুক্ত বইপত্র, পোস্টার, লিফলেট, ইত্যাদি আপত্তিকর জিনিস সামরিক দফতরে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়। ৫১নং সামরিক বিধি হচ্ছে প্রকাশনা সংক্রান্ত কালো আইন। এই আদেশ অমান্যের শাস্তি ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড।
ভারতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী নয়াদিল্লীতে এক অনুষ্ঠাতে বলেন, পূর্ববঙ্গ থেকে ব্যাপকভাবে বাঙালিদের ভারতে আগমনের ফলে আমাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে গুরুতর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। উদ্বাস্তু পরিস্থিতি ভারতের পক্ষে বিরাট বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তান সরকার যে ভাবে পূর্ববঙ্গের পরিস্থিতি মোকাবেলা করছেন তাতে কেবল ভারতের নয়, এ অঞ্চলের শান্তি বিঘ্নত হতে পারে। তিনি বলেন,উপমহাদেশের শান্তির প্রতি এই হুমকি সম্পর্কে সজাগ থাকার জন্য আমি বিশ্বের রাষ্ট্রসমূহের প্রতি আবেদন জানাই। মনে হয় পূর্ববঙ্গের পরিস্থিতি সম্পর্কে বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রতিক্রিয়া যথেষ্ট নয়। যদি এ ব্যাপারে দৃষ্টি না দেয়া হয় তাহলে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো বজায় রাখার স্বার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা বাধ্য হবো।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত আগা হিলালী ওয়াশিংটনে বলেন, ভারত পাকিস্তানের একটি আভ্যন্তরীণ সমস্যাকে আন্তর্জাতিকীকরণের চেষ্টা চালাচ্ছে।
মার্কিন সিনেটর উদ্বাস্তু সংক্রান্ত সাব-কমিটির চেয়ারম্যান এডওয়ার্ড কেনেডি বাংলাদেশের জনগণ ও ভারতে অবস্থানরত বাঙালি উদ্বাস্তুদের দুর্দশা লাঘবে ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত পক্ষগুলোর পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য মার্কিন সরকারের প্রতি আবেদন জানান।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
(ওএস/এএস/মে ২৭, ২০২১)