আবু নাসের হুসাইন, সালথা (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের সালথায় তান্ডবের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর গ্রেফতার আতঙ্কে উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি গ্রাম এখন পুরুষ শূন্য। ঘটনায় জড়িত অনেকেই আত্মগোপনে চলে গেছেন। আবার ঘটনার সাথে জড়িত নেই এমন অনেক লোকও গ্রেফতার ও হয়রানির ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।  

রবিবার সকালে এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার সোনাপুর, ভাওয়াল ও রামকান্তুপুর ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি গ্রামে সুনশান নীরবতা। এসব গ্রামের অনেক মানুষকে তান্ডবের মামলায় আসমি করা হয়েছে। প্রতিদিনই পুলিশ আসামি গ্রেফতারে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছেন।

এছাড়াও পুলিশের অভিযানের আতঙ্কে আশপাশের ইউনিয়নের মানুষও গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছে। ওই সব গ্রামের হাট-বাজার, মাঠ, বাড়ি-ঘর গুলোতে নারী আর শিশু ছাড়া কোন সদস্য দেখতে পাওয়া যায়নি। এ সময় বাড়ির নারী ও শিশুদের চোখে মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বাইরের মানুষ দেখলেই তারা ভয়ে দৌড়ে সরে যাচ্ছেন। মাঠে নেই কোন কৃষক। এতে মাঠে থাকা হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি সম্ভাবনা রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক গ্রামের কয়েকজন বলেন, তান্ডবের ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় এজহারভুক্ত ২৬১ জনকে ছাড়াও অজ্ঞাত আরও ৩-৪ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। যার ফলে যে কাউকেই পুলিশ গ্রেফতার করার সুযোগ রয়েছে বলেই অনেকেই আতঙ্কে রয়েছেন।

তান্ডবের ঘটনায় ৬১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে গ্রেফতারকৃত বেশির ভাগ আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন পুলিশ।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত নয়, তাদের আতংকিত হয়ে বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার কোন কারণ নেই। পুলিশ কাউকে হয়রানি করছে না। সুনিদিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের গ্রেপ্তারী অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, কোন সহিংস ঘটনা ঘটলে কয়েক দিনের জন্য বিভিন্ন গ্রামে এ জাতীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, দ্রুতই এ অবস্থা কেটে যাবে।

(এন/এসপি/এপ্রিল ১১, ২০২১)