আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ডেনমার্কে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহণের পর দু’জনের দেহে তীব্র প্রতিক্রিয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে, একটি হাসপাতালের দু’জন কর্মী সম্প্রতি টিকা নিয়েছিলেন। এর মধ্যে একজনের শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে যায় এবং অন্যজনের দেহে সেরেব্রাল রক্তক্ষরণের ঘটনা ঘটে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনের সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেয়ার পর সেখানকার একটি হাসপাতালের দু’জন কর্মী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং অন্যজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা প্রায় দুই সপ্তাহ আগে টিকা গ্রহণ করেন।

ড্যানিস মেডিসিন এজেন্সি জানিয়েছে, তারা গুরুতর প্রতিক্রিয়ার খবর জানতে পেরেছেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। হাসপাতালের ওই কর্মী কবে অসুস্থ হয়েছেন সে বিষয়েও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

ডেনমার্কে গত ১১ মার্চ থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন প্রয়োগ স্থগিত করা হয়। টিকা গ্রহণের পর রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার ঘটনায় বেশ কিছু দেশেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ব্যবহার সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রয়েছে।

তবে সম্প্রতি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় ঝুঁকির চেয়ে উপকার অনেক বেশি বলে আবারও আশ্বস্ত করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যের নীতিনির্ধারকরা। তাদের তদন্তে অনেক দেশেই আত্মবিশ্বাস ফিরতে শুরু করেছে। ফলে ইতোমধ্যেই এই কার্যক্রম আবারও শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে জার্মানি, ফ্রান্সের মতো দেশগুলো।

এদিকে ডেনমার্ক, নরওয়েসহ বেশ কিছু দেশ শুক্রবার জানিয়েছে যে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাদান কর্মসূচি পুনরায় শুরু করা হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তাদের কিছুটা সময় প্রয়োজন।

তবে কোটি কোটি টিকাগ্রহণকারীর মধ্যে অল্প কিছু মানুষের শরীরে এই ধরনের বিরল সমস্যা দেখা দেওয়ার ঘটনা তদন্ত করে ইউরোপীয় ওষুধ সংস্থা (ইএমএ) চূড়ান্ত ঘোষণা দিয়েছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় ঝুঁকির চেয়ে উপকারই বেশি। অবশ্য টিকাগ্রহণের সঙ্গে রক্তজমাট বাঁধার যোগসূত্র থাকার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলেও জানিয়েছে তারা।

ইএমএ পরিচালক এমার কুকে এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, এটা নিরাপদ ও কার্যকর একটি টিকা। ইএমএ ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়া দুই কোটি মানুষের অবস্থা পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই অঞ্চলে যুক্তরাজ্যসহ মোট ৩০টি দেশ রয়েছে। নিরাপত্তা শঙ্কায় গত কয়েক দিনে অন্তত ১৩টি দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ব্যবহার স্থগিত করেছে।

(ওএস/এসপি/মার্চ ২০, ২০২১)