সাপাহারে বছর জুড়ে জমজমাট চারার হাট
নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর সাপাহার উপজেলা সদরের টিএন্ডটি মোড় এলাকায় সারা বছর ধরে জমজমাট ভাবে চলছে আম সহ বিভিন্ন চারাগাছ বেচাকেনার হাট।
ওই হাটের ইজারাদার মিলন চৌধুরী জানান, দেশের বিভিন্ন জেলাসহ সাপাহার ও তার আশে পাশের উপজেলার নার্সারি মালিকরা তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতির চারা গাছ এই হাটে সারা বছর ধরে বেচাকেনা করছেন। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া ও নওগাঁ জেলা থেকে চারা ব্যবসায়ীরা ট্রাকে করে বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার চারা গাছ এই হাটে এনে বিক্রি করেন।
এখানে বিদেশি প্রজাতির আকাশমনি, ইউক্যালিপটাস, মেহগনিসহ দেশি বিদেশী জাতের আম, জাম, কাঁঠাল, লেবু, পেয়ারা, জলপাই, বড়ই ,মাল্টা ,কমলা ,পেঁপে, নিমসহ ঔষুধি গাছের চারাও বিক্রি হয়। এই চারার হাটে প্রায় ৫০/৬০টি চারাগাছের দোকান রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২ থেকে ৩ হাজার চারাগাছ বেচাকেনা হয়। চারা ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে লোড-আনলোড করার বিষয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের পরিবহন সুবিধা ও সকল প্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
বাজারে আসা বেশ কয়েকজন চারা ব্যবসায়ী জানান, নওগাঁর সাপাহার,পোরশা, নিয়ামতপুরসহ আশে পাশের অঞ্চলের লোকজন আমগাছের চারা রোপণে ব্যাপারে খুবই উৎসাহী। মাঠের পর মাঠ নতুন করে আম বাগান তৈরী করা হচ্ছে। চারা পরিবহনে সুবিধার জন্য রাস্তার দুইধারে চারার হাট বসানো হয়েছে। এতে রাস্তায় চলাচলে পথচারীদের সামান্য ঝুঁকি মেনে নিয়েই সকলকে চলতে হচ্ছে।
উপ-সহকারী উদ্ভীদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আতাউর রহমান সেলিম জানান, উপজেলার সদরের অদূরে টি এন্ড টি মোড়ে স্থাপিত ওই চারার হাটে সারা বছর ধরে বিভিন্ন প্রজাতীর আমের চারার সমাহার দেখে এ উপজেলার লোকজনের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এখানে এসে উন্নত জাতের আমের চারা সংগ্রহ করছেন। অল্পদিনেই আম এ উপজেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নে বৃহত্তর ভূমিকা রাখবে বলে কৃষিবিদরা জানিয়েছেন। তাই সব মিলিয়ে সাপাহার উপজেলার সর্বস্তরের কৃষকদের মাঝে সারা বছর ধরে আম চারা রোপণে ব্যাপক প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
সাপাহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মজিবুর রহমান জানান, এ উপজেলার জলবায়ুর সাথে আমচাষের বেশ মিল থাকায় ধানের চাইতে আম চাষে কৃষকরা অনেক বেশি লাভবান হচ্ছে। বিশেষ করে এ উপজেলার উৎপাদিত সুমিষ্ট রসালো ফল আম বর্তমানে দেশের সর্বত্র বিশেষভাবে খ্যাতি অর্জন করেছে। আম বাগান তৈরি করে এরই মধ্যে অনেক কৃষকের ভাগ্যে বদলে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কল্যাণ চৌধুরী এ বিষয়ে জানান ,রাস্তার পাশে ওই চারার হাট বসানোর কারনে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকায় বিষয়টি নিয়ে চারা ব্যবসায়ীদের সাথে বেশ কয়েক দফা আলোচনায় বসেছেন। চারা ব্যাবসায়ীরা সাধরণত সদরের বাইরে যেতে চান না। এছাড়া চারার হাট বসানোর জন্য সুবিধামত খাস জমিও নেই। তবে সারা বছর চারার হাট বসানোর জন্য একটি নিরাপদ জায়গা খুুজে বের করতে হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
(বিএম/এসপি/জানুয়ারি ০৩, ২০২১)