স্টাফ রিপোর্টার : কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) পরীক্ষার ফি কমছে। বুধবার (১৯ আগস্ট) সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এই ফি কমানোর কথা জানান।

বুথ থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষার ফি ২০০ টাকা থেকে কমিয়ে ১০০ টাকা করা হয়েছে। বাসা থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষার ফি ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০০ টাকা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘করোনা পরীক্ষার একটি ল্যাব থেকে ৮৭টি ল্যাব হয়েছে। ল্যাব বৃদ্ধির সাথে সাথে পরীক্ষার সংখ্যাও বৃদ্ধি পাওয়ার কথা ছিল। বৃদ্ধি না পাওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। পরীক্ষা করতে আগ্রহ কমে গেছে। কারণ, তারা ঘরে থেকে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা নিচ্ছে। অনেকেই মনে করে পরীক্ষার কী প্রয়োজন। আবার বন্যার কারণেও কিছুটা পরীক্ষার হার কমে গেছে।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের কাছে কিছু তথ্য আছে, সরকার যে ফি নির্ধারণ করেছে সেই কারণে অনেক গরীব লোক পরীক্ষা করতে কিছুটা আগ্রহ হারিয়েছেন। এ বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেছি, উনার একটা নির্দেশনা আমরা নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘এখন থেকে ২০০ টাকার যে ফি নেয়া হতো সেটা কমিয়ে ১০০ টাকা করা হলো, যারা সেন্টারে বা ল্যাবে গিয়ে পরীক্ষা করাবেন। আর বাড়িতে গিয়ে পরীক্ষা করা হলে ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকা ফি আরোপ হবে। আমরা আশা করি এখন টেস্টের সংখ্যা বাড়বে।’

‘আমাদের ইচ্ছা টেস্ট বেশি করে হোক এবং সংক্রমিত ব্যক্তিরা সেবার আওতায় আসুক যাতে তারা না ছড়ায়। কিন্তু টেস্টের সংখ্যা সেভাবে বাড়েনি। আমাদের এখন যথেস্ট ল্যাব আছে, কিটসের কোনো অভাব নেই।’

কবে থেকে নতুন ফি কার্যকর হবে- জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলন, ‘দু’একদিনের মধ্যে এটি কার্যকর হবে। সার্কুলার দিতে যতটুকু সময় লাগবে।’

ল্যাবের সংখ্যা বাড়ানো হবে কি-না- জনতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘যাতে প্রতিটি জেলায় ল্যাব হয়, সেই পরিকল্পনা আছে।’

এন্টিজেন বা এন্টিবডি টেস্টের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি-না- এ বিষয়ে তিনি মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে অতি শিগগিরই সিদ্ধান্ত পেয়ে যাবেন। আমরা এটা পজেটিভলি দেখছি। যেটা আমাদের ও আমাদের দেশের জন্য ভালো হবে সেটাই করবো।

ভ্যাকসিন আমদানির বিষয়ে জানতে চাইলে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা সব দিকে খোঁজ-খবর রাখছি। চীন, রাশিয়া, অক্সফোর্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি কোম্পানি চেষ্টা করছে। আমরা ভ্যাকসিনের বিষয়টি নিয়ে সজাগ আছি। প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছি, উনিও অবহিত হচ্ছেন। আমরা যখন সিদ্ধান্ত পেয়ে যাবো তখন জানাবো। আমরা ভ্যাকসিনের বিষয়ে তৎপর আছি। আমাদের জন্য সবচেয়ে কোনটা ভালো, কে দিতে পারবে, চাহিদা কেমন, সব বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব।’

কোভিড হাসপাতাল কমানো হচ্ছে কি-না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড হাসপাতালে অনেক সিট খালি আছে, এখন নন-কোভিড রোগী বেড়ে যাচ্ছে। কোভিড রোগীর সংখ্যাও কমে গেছে। সেই কারণে আমাদের সিদ্ধান্ত কিছু কিছু হাসপাতালকে নন-কোভিড ডিক্লারেশন করে দেয়া। যারা নন-কোভিড রোগী তাদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় তাদের সেবা দিতে হবে। সে কারণে ঢাকাসহ সারাদেশে কিছু কোভিড হাসপাতালকে নন-কোভিড করবো। আর কিছু শুধু কোভিড হাসপাতাল থাকবে। কারণ, কোভিড তো দেশ থেকে এখনও চলে যায়নি।’

কোন কোন কোভিড হাসপাতালকে কোভিড থেকে নন-কোভিড ঘোষণা করা হবে সেই তালিকা এখনও চূড়ান্ত হয়নি জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ মাসের মধ্যে তালিকা চূড়ান্ত করার নির্দেশ আমরা দিয়েছি। এটা পর্যায়ক্রমে হবে, একেবারে সব না। ফেইসওয়াইজ আমরা নন-কোভিড হাসপাতাল ঘোষণা করব।’

(ওএস/এসপি/আগস্ট ১৯, ২০২০)