আশাশুনিতে গোপন বৈঠককালে জেহাদী বই-ল্যাপটপসহ শিবির কর্মী গ্রেপ্তার
রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : অর্ন্তঘাতমূলক কাজ ও সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে গোপন বৈঠককালে পুলিশ ছাত্রশিবির কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে মওদুদ ও গোলাম আযমের জেহাদী ১২টি বই ও একটি ল্যাপটপ। সোমবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহনিয়া জামায়াতের অফিস থেকে এ গ্রেপ্তার ও উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার হওয়া শিবির কর্মীর নাম ইসমাইল হোসেন (২৫)। তিনি কুড়িকাহনিয়া গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে।
কুড়িকাহনিয়া গ্রামের শাহীনুর রহমান, গোলাম মোস্তফাসহ কয়েকজন জানান, জামায়াত নেতা দেলোয়ার হুসেন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে ২০১৩ সালের পহেলা মার্চ তালতলা বাজারে নির্মাণ করা হয় সাঈদী মুক্তি মঞ্চ। যুবদল নেতা রফিকুল ইসলাম বুলি, আয়েশা ছিদ্দিকিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিকক্ষ ও প্রতাপনগর ইউনিয়ন জামায়তের আমীর রিয়াছাত আলী, ছাত্র শিবির নেতা নাহিদ হাসান বাবুল, মোস্তফা আবু ইয়াহিয়াসহ কয়েকজন ওই মঞ্চে থেকে দিন রাত দেশবিরোধী বক্তব্য দিতেন। তালতলা এলাকার একটি মাদ্রাসায় নাশকতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। একপর্যায়ে প্রতাপনগর পাকিস্তানের রাজধানী হিসেবে পরিণত হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা পড়েন বিপাকে।
পুলিশের অভিযানের খবর পেলেই জামায়াত শিাবরের মোস্ট ওয়ান্টেড ওইসব লোকজন কপোতাক্ষ নদী পার হয়ে কয়রার মধ্যে চলে যেতেন। একপর্যায়ে পুলিশ সুপার হিসেবে মোঃ মনিরুজ্জামান (ফাটা কেষ্ট) যোগদানের পর আত্মগোপনে চলে যান ওই সব জামায়াত শিবির ও বিএনপি নেতা কর্মীরা। এদের মধ্যে অনেকেই এখন নব্য আওয়ামী লীগার হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সঙ্গে সখ্যতা রেখে তাদের সরকার বিরোধী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলায় জামায়াত শিবিরের কোন অফিস খোলা না থাকলেও তালতলায় জামায়াতের অফিসে নিয়মিত বৈঠক হয়।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কবীর জানান, অর্ন্তঘাতমূলক কাজ ও সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে গোপন বৈঠকের খবর পেয়ে পুলিশ সোমবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে তালতলা বাজারের জামায়াত অফিসে অভিযান চালায়। থানা থেকে তালতলা বাজারে আসতে অনেক সময় লাগায় পুলিশ আসামর খবর পেয়েই কয়েক জামায়াত নেতা কর্মী পালিয়ে যায়। তবে কুড়িকাহনিয়া গ্রামের শিবির কর্মী ইসমাইল হোসেনকে কয়েকটি জেহাদী বইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরো জানান, এ ঘটনায় উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বাদি হয়ে গ্রেপ্তারকৃত ইসমাইলসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১০/১৫জনকে আসামী করে মঙ্গলবার ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (ডি) ধারায় একটি মামলা(২২নং) দায়ের করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইসমাইলকে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে।
(আরকে/এসপি/জুলাই ২৮, ২০২০)