বিভাগে মোট করোনায় আক্রান্ত ৫৬২
রংপুরে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধিমালা মানাতে ব্যর্থ প্রশাসন, বিভিন্ন সংগঠনের দাবি মানতেও নারাজ প্রশাসন
মানিক সরকার মানিক, রংপুর : মঙ্গলবার রংপুর জেলায় আরও ১৬জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় এ পর্যন্ত জন করোনা রোগী শনাক্ত হলো। এর মধ্যে রংপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান নাসিমা জামান ববিও রয়েছেন। রোগী শনাক্তের দিক দিয়ে ৮ বিভাগের মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে রংপুর বিভাগ। আইইডিসিআরএর সূত্র্র মতে, এ বিভাগে আক্রান্তের শতকরা হার ৩.১৫ শতাংশ আক্রান্তদের মধ্যে রংপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যানও রয়েছে। এনিয়ে শুধুমাত্র রংপুর জেলায় মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৩৯ জনে।
এদিকে মঙ্গলবার পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের প্রধান পাড়া গ্রামের ৬০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি রংপুর ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে আইসোলেশন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন ডা. ফজলুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
রংপুরে প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। নগরীর সচেতন মহল জানান, শুধুমাত্র মার্কেট, বাজার, এবং রিকশা ও অটো রিকশার অবাধ চলাচলের কারণেই আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে করোনা প্রতিরোধে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ছাড়া সকল দোকানপাট, শপিং মল, বন্ধ করে দেয়ার জন্য রংপুরের করোনা প্রতিরোধ কমিটি, জনতার রংপুর, চেম্বার অব কর্মার্সসহ বিভিন্ন সংগঠন জেলা প্রশাসক বিভাগীয় কমিশনার ও মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে বারংবার আবেন জানালেও বিষয়টিকে গুরত্ব দিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন।
স্বাস্থ্য বিধি নিরাপত্তা আইন মেনে চলার জন্য জেলা প্রশাসন ও মেট্রোপলিটন পুলিশের পৃথক দুটি ট্রাস্কফোর্স প্রতিদিন বজারগুলো মনিটরিং করলেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না তা। এমনকি মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাস্কফোর্স প্রধান এভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না বলে পুলিশ কমিশনারকে লিখিত প্রতিবেদন দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে মানব সম্পদ বাচাঁতে চেম্বার অব কমার্সসহ বিভিন্ন সামাজিক সংঘঠন জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে কারফিউ জারির আবেদন জানিয়েছন। তাতেও তোয়াক্কা করছেন না উভয় প্রশাসন।এদিকে পবিত্র দ্বোরগোড়ায় এখন শুধু কাপড় চোপড় নয়, ঈদের খাদ্য সামগ্রি ছাড়াও বাড়বে উপচে পড়া ভীড়।
সামাজিক দুরত্ম কেউই না মানায় এতে পরিস্থিতি কোন পযার্য়ে যেতে পারে তা কেবল ভবিতব্যই বলে দিতে পারে। রংপুর ছাড়া গাইবান্ধায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ জন। তবে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত নানা উপসর্গে সন্দেহজনকভাবে নতুন করে ২৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।এ জেলায় হোম কোয়ারেন্টাইনে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ২৪৬ জন। লালমনিরহাটে এ পর্যন্ত মোট ২৫ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। কুড়িগ্রামে ২ নারী পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত ওই দুইজন কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত ৫৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ৯ জন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান। নীলফামারীতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬৪ জন। এ ছাড়া করোনা জয় করে সুস্থ হয়ে ১৯ জন নিজ বাড়ি ফিরে গেছে। জেলা সিভিল সার্জন রনজিৎ কুমার বর্মণ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পঞ্চগড় সোমবার ঢাকা ফেরত আরও চার জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত ২৪।
সিভিল সার্জন ডা. ফজলুর রহমান জানান, এ পর্যন্ত জেলায় ৮১৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। প্রাপ্ত ৭৮৫ জনের ফলাফলে ২৪ জনের আক্রান্ত সনাক্ত হয়। এদের মধ্যে ৭ জন সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় নতুন করে ১ জন নারীকরোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে এ জেলায় মোট ৩৬ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি নিশ্চিত হলো। এর মধ্যে, ১৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। সোমবার ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজার রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
দিনাজপুরে সোমবার আরো ৫ নারী সহ ১০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় ৯৩ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলো। দিনাজপুর জেলায় এখন পর্যন্ত হোম আইসোলেশনে আছেন৭০ জন, প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে ৩জন এবং হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন এক হাজার ৮’শ ৯৫ জন।
(ওএস/এসপি/মে ১৯, ২০২০)