রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : জরুরী বিভাগসহ পূর্নাঙ্গ হাসপাতাল চালুর দাবিতে অনিদ্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালনের অংশ হিসেবে বৃহষ্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মত মানববন্ধন করেছেন সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। 

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তারা বলেন, ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত সাতক্ষীরা মেডিকেলে জরুরি বিভাগ চালু হয়নি। এতে সাতক্ষীরাবাসী চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন জানিয়ে তারা আরও বলেন জরুরী বিভাগে দায়িত্ব পালনের শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বঞ্চিত হচ্ছেন । ভবিষ্যত পেশাগত জীবনে তাদের শিক্ষাগত এই ঘাটতি থেকে যাবে বলে জানান তারা।

ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আরও জানান, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরকার কোটি কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম দিলেও তা কাজে আসছে না। টেকনিসিয়ানের অভাবে এসব সরঞ্জাম পড়ে থাকায় রোগীরা চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হক, ডাঃ নাসিম ও সাবেক নৌ- পরিবহন মন্ত্রি শাহজাহান খান সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরী বিভাগ চালু সহ পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালের ঘোষনা দিলেও তা কার্যকর হয়নি। তাই ছয়জন ডাক্তারকে এ মেডিকেল কলেজে বদলী করানোর আদেশ দিয়েই সব কিছু মিটে গেছে এটা বলা যাবে না। তাদের দাবি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়া ছাড়া তাদের কোন রাস্তা নেই।

কর্মবিরতির ফলে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫১ জন ভর্তি রোগীর চিকিৎসা সেবা ব্যহত হওয়া ছাড়াও রোগী ভর্তি করতে সাধারণ মানুষ সাহস পাচ্ছে না এমন প্রশ্নের উত্তরে ইন্টার্ন ডাক্তার এ্যসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ হুময়ায়ুন কবীর বলেন, মেডিকেল কলেজে রোগীদের চিকিৎসা সেবার দায়িত্ব কেবল সেখানে কর্মরত চিকিৎসকদের । তারা শিক্ষানবীশ, তাই তাদের উপর কোন দায়িত্ব পড়ে না।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ইন্টার্ন ডা. হুমায়ুন কবির, ডা.আমিনুল ইসলাম, ডা. তানজিনা জাহান, ডা. রবিউল ইসলাম, ডা. সাবিনা ইয়াছমিন প্রমূখ।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ এণ্ড হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বুধবার ছয়জন ডাক্তারকে পদায়ন করে তিন দিনের মধ্যে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ এণ্ড হাসপাতালে যোগদান করতে বলা হয়েছে। তারা সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যে এখানে যোগদান করে জরুরী বিভাগের চিকিৎসা সেবা শুরু করবেন বলে তিনি আশাবাদী।

জরুরী বিভাগ চালু করার জন্য ডাঃ কুদরত ই খুদাকে আহবায়ক ও ডাঃ রাশিদুজ্জামানকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ঠ কমিটি গঠণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইন্টার্ণ ডাক্তারদের কর্মবিরতি অব্যহত থাকলে ভর্তি থাকা রোগীদেও চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে। বাধ্য হয়ে রোগী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবে না।

তিনি আরো বলেন, ইন্টার্ণ ডাক্তারদের দাবি দাওয়া অযৌক্তিক নয়। তবে আন্দোলনের ক্ষেত্রে আগে থেকে আল্টিমেটাম, তার পর প্রতীকী কর্ম বিরতি শেষে অনিদ্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি দেওয়া উচিত ছিল। এভাবে হঠাৎ করে অনিদ্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করা যথাযথ হয়নি।

প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ এণ্ড হাসপাতালে জরুরী বিভাগ চালুকরাসহ সব ধরণের পরিষেবা চালুর দাবিতে ইন্টার্ণ ডাক্তাররা বুধবার থেকে কর্ম বিরতি পালন করে আসছে।

(আরকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২০)