এবার বিশ্বকাপে ফ্লপ যারা
স্পোর্টস ডেস্ক : ব্রাজিলের ফ্রেড, ইংল্যান্ডের স্টিভেন জেরার্ড, ইতালির বালোতেল্লি, স্পেনের ইকার ক্যাসিয়াস ও পর্তুগালের পেপে বিশ্বমঞ্চে নামকরা খেলোয়াড়। যাদের শক্তি, সামর্থ্য ও যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করাও বোকামি। কিন্তু ব্রাজিল বিশ্বকাপে এদের নিজ রূপে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিশ্বের বিভিন্ন বড় বড় ক্লাবে পারফর্ম করা এসব খেলোয়াড় বিশ্বকাপে জাতীয় দলের জার্সিতে ছিলেন নিষ্প্রভ। তাদের নিষ্প্রভ হওয়ার কারণেই দল কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। চলুন জানা যাক বিশ্বকাপের এই ফ্লপ তারকাদের সম্পর্কে।
ফ্রেড :বিশ্বকাপে ফ্লপ তালিকায় সবার ওপর জায়গা করে নিয়েছেন ব্রাজিলের স্ট্রাইকার ফ্রেড। কোচ লুইস ফিলিপে স্কলারির আক্রমণভাগের প্রধান অস্ত্র হলেও ফ্রেড ছিলেন নিষ্প্রভ। কনফেডারেশন কাপে সিলভার বুট জেতেন ফ্রেড। কিন্তু এবার আক্রমণভাগে নেইমারকে বিন্দুমাত্র সাহায্য করতে পারেননি তিনি। যার কারণেই ব্রাজিল সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ছিল না বলে মনে করছেন অনেকে। বিশ্বকাপে মাত্র এক গোল করেন এই স্ট্রাইকার এবং বিশ্বকাপের ছয় ম্যাচে ফ্রেডের পাঁচটি শট ছিল অন টার্গেট। সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ার পর ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে ৩০ বছর বয়সী স্ট্রাইকার ফ্রেড অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
স্টিভেনজেরার্ড :বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় ইংল্যান্ড। পুরো দল ব্যর্থ হলেও পুরো দায়ভার পড়েছে অধিনায়ক স্টিভেন জেরার্ডের ওপর। গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচে ইংল্যান্ড মাত্র ১ পয়েন্ট অর্জন করে। দুই সাবেক চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও উরুগুয়ের সঙ্গে হারের পর কোস্টারিকার বিপক্ষে ড্র করে ইংল্যান্ড। অবশ্য কোস্টারিকার বিপক্ষে শেষ ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ হয়নি লিভারপুলের এই তারকার।
মারিওবালোতেল্লি :বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গোল পেয়েছিলেন মারিও বালোতেল্লি। কিন্তু এরপর ‘ব্যাড বয়’ খ্যাত বালোতেল্লি নিজের চিরচেনা রূপে আর ফিরে আসতে পারেননি। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয় চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। উরুগুয়ের বিপক্ষে সহজ দুটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি। এরপর কোস্টারিকার বিপক্ষে ছিলেন ফ্লপ। কোস্টারিকার বিপক্ষে বালোতেল্লির পারফরম্যান্সের পর সতীর্থ ড্যানিয়েল ডি রোসি বলেন, ‘আমাদের প্রকৃত স্ট্রাইকার প্রয়োজন। দুর্বল চিত্তের খেলোয়াড় আমাদের প্রয়োজন নেই।’
ইকারক্যাসিয়াস :স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে নিয়মিত ছিলেন না ইকার ক্যাসিয়াস। কিন্তু দেল বস্ক ক্যাসিয়াসকে বিশ্বকাপের শুরু থেকেই মাঠে নামান। কিন্তু গ্রুপ পর্ব থেকে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা এভাবে বিদায় নেবে, তা কেউ চিন্তাও করতে পারেনি। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পাঁচ গোল হজম করেন ক্যাসিয়াস। পরের ম্যাচে চিলির বিপক্ষে আরো দুই গোল হজম করতে হয় তাকে। তৃতীয় ম্যাচে জায়গা হারান তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ক্যাসিয়াসের পরিবর্তে মাঠে নামেন পেপে রেইনা। চার বছর আগে ২০১০ বিশ্বকাপে নায়ক হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ শেষ করেছিলেন স্পেনের অধিনায়ক ইকার ক্যাসিয়াস। দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে সেরা গোলরক্ষকের মুকুটও পরেন তিনি। চার বছর পর নায়ক থেকে খলনায়ক ক্যাসিয়াস।
পেপে :রিয়াল মাদ্রিদে অসাধারণ এক মৌসুম পার করে বিশ্বকাপে খেলতে এসেছিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। সমর্থকরা আশা করছিল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে পূর্ণ শক্তি দিয়ে সাহায্য করতে পারবেন তিনি। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই লাল কার্ড দেখেন তিনি। পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে জার্মানির ফরোয়ার্ড টমাস মুলারকে মাথায় আঘাত করে ম্যাচের ৩৭ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। এর পরই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। ম্যাচে জার্মানরা ৪-০ গোল জয় পায়। লাল কার্ড পাওয়ায় দ্বিতীয় ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে মাঠে নামতে পারেনি পেপে। শেষ ম্যাচে ঘানার বিপক্ষে পর্তুগাল জয় পেলেও নকআউট পর্ব নিশ্চিত করতে পারেনি পেপের দল।
এছাড়াওফ্লপযারা : ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো (পর্তুগাল), দানি আলভেস (ব্রাজিল), সার্জিও রামোস (স্পেন), ইডেন হ্যাজার্ড (বেলজিয়াম), শিনঝি কাগাওয়া (জাপান), আলেক্স সং (ক্যামেরুন)।
(ওএস/এইচআর/জুলাই ১৬, ২০১৪)