স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গড়ে প্রতিদিন তিন শতাধিক সাধারণ মানুষ। এনআইডিতে দেয়া বিভিন্ন তথ্য সংশোধন ও পরিবর্তন এবং কার্ড হারানোর পর অথবা প্রথমবারের মতো নতুন কার্ড পেতে আবেদন করতে আসা মানুষগুলোই মূলত এই ভোগান্তির শিকার হন। অথচ নয় মাস আগেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাওয়া যেত এই কার্ড।

তাৎক্ষণিক সেবা দিতে এই দফতরের ওয়ান স্টপ সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মূলত শুরু হয়েছে এই বিড়ম্বনা। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সেবা পেতে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এনআইডি। ফলে দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে ভোগান্তির শিকার মানুষের তালিকা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায়ের অফিস থেকে এসব কাজ করার নির্দেশ থাকলেও সাধারণত সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে রয়েছে যথেষ্ট অনীহা। ফলে বাধ্য হয়ে ঢাকামুখী হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এ মুহূর্তে নতুন রেজিস্ট্রেশন করতে সময় লাগে ন্যূনতম দুই মাস, মাইগ্রেশন করতে কয়েক মাস এবং ভুল সংশোধন করতে লেগে যায় কয়েক দিন। এ সুযোগে একটি চক্র সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কাজ করে দেয়ার নামে অর্থ আদায়েরও অভিযোগ করছেন কেউ কেউ। উল্লিখিত সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সর্বশেষ ২০১৩ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কারণে হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। নির্বাচনের সময় ভোটার স্থানান্তর বন্ধ রাখা হয়েছিল। এ কারণে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। এছাড়া ওই সময়ে ৭০ লাখের বেশি নতুন ভোটার হয়েছিল। ৪ লাখ ৬৭ হাজার মানুষ তাদের ঠিকানা পরিবর্তন করেছেন। হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় কয়েক লাখ মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। এসব মানুষ কার্ড না থাকায় নাগরিক সুবিধা পেতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসে জাতীয় পরিচয়পত্রের ঢাকায় অবস্থিত প্রকল্প অফিসে ৩ হাজার ৫৮৪ জন জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য আবেদন করেছেন। ৩ হাজার ৫২৪ জনের পরিচয়পত্র সংশোধন করে কার্ড দেয়া হয়েছে। ওই সময়ে ১০ উপজেলায় ৬৯ জন কার্ড সংশোধনের আবেদন করলে ১০ জনের সংশোধন করা হয়। একই মাসে ঢাকায় ৭ হাজার ১৫২ জন হারানো কার্ডের জন্য আবেদন করে ৬ হাজার ৯৭০ জন পেয়েছেন।

জানুয়ারি মাসে উপজেলা নির্বাচন থাকায় ঠিকানা পরিবর্তন কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ডিসেম্বর মাসে প্রকল্প অফিসে ৩ হাজার ৪৭ জন সংশোধনের আবেদন করে ৩ হাজার ১০ জন সংশোধিত কার্ড পেয়েছেন। উপজেলা পর্যায়ে ৬৩ জন সংশোধনের আবেদন করে ৬ জন পেয়েছেন। ওই মাসে ঢাকায় ৫ হাজার ৭৮৭ জন হারানো কার্ডের জন্য আবেদন করে ৫ হাজার ৬০০ পেয়েছেন। নভেম্বর মাসে উপজেলা পর্যায়ে ২ হাজার ১১৩ জন কার্ড সংশোধনের জন্য আবেদন করে পেয়েছেন ৩৪৯ জন। ঢাকায় ৫ হাজার ৫৪৯ জন সংশোধনের আবেদন করে পেয়েছেন ৪ হাজার ৪৩২ জন। সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরে ১২ হাজার ৮৮৭ জন ঠিকানা পরিবর্তনের আবেদন করেন। ওই সময়ে ১১ হাজার ৩৬৭ জনের আবেদন গ্রহণ করা ঠিকানা পরিবর্তন করে দেয়া হয়।

(ওএস/এটি/এপ্রিল ১২, ২০১৪)