E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ধ্বংসের মুখে দেশের জলাভূমি, কমে যাচ্ছে বনভূমিও

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ০৩ ১২:০৮:৩০
ধ্বংসের মুখে দেশের জলাভূমি, কমে যাচ্ছে বনভূমিও

স্টাফ রিপোর্টার : ধ্বংসের মুখে পড়েছে দেশের জলাভূমি। এর ফলে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণের অস্তিত্বও এখন সংকটে। অন্যদিকে জলাভূমি ধ্বংসের কারণে কমে যাচ্ছে বনভূমিও।

উদ্বেগজনক এই তথ্য ‘নেটওয়ার্ক ফর ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট বাংলাদেশ’ (এনসিআরবি) নামে একটি বেসরকারি সংস্থার।

এনসিআরবি জানায়, দেশের জলাভূমি ও বনভূমি ধ্বংসের বিরুপ প্রভাব পড়ছে জলবায়ুর ওপর। তাই জলবায়ূ পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় জলাভূমি সুরক্ষা জরুরি হয়ে পড়েছে।

বিশ্ব জলাভূমি দিবস পালন উপলক্ষে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন এনসিআরবি’র কর্মকর্তারা। তারা জানান, জলাভূমি রক্ষায় এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি আরও বেড়ে যাবার আশংকা রয়েছে ।

এনসিআরবি’র সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জাতিসংঘ প্রণীত জলাভূমি সনদ ১৯৭৫ সাল থেকে কার্যকর হয়। বাংলাদেশ এই সনদে স্বাক্ষরকারী দেশগুলির অন্যতম। ১৯৭১ এর ২ ফেব্রুয়ারি ইরানের রামসার শহরে এ বিষয়ে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ১৯৯২ সালে রামসার সনদে স্বাক্ষর করে সুন্দরবন এবং টাঙ্গুয়ার হাওড়- এই দুই জলাভূমিকে এর অন্তর্ভূক্ত করে।

সংবাদ সম্মেলনে এনসিআরবি’র কর্মকর্তারা জানান, জলাভূমি আমাদের প্রাণিকুলকে পানি যোগায়। বন্যা খরা ও নানা দুর্যোগ থেকে আমাদের সুরক্ষা দেয়। প্রতিবেশ থেকে অধিকতর কার্বন ধরে রেখে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অবদান রাখে জলাভূমি। এসব জলাভূ‚মি নিঃশেষিত হলে প্রচুর গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ ঘটবে। এরই মধ্যে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডেরে পরিমাণ আগের তুলনায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী দুর্যোগও বেড়েছে ৩৫ ভাগ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জলাভূমির সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার কারণে প্রাণিক‚ল সবচেয়ে বড় হুমকির মুখে পড়েছে। এর কারণে দুর্যোগের পরিমাণ বেড়ে গেছে। নদী নালা খাল বিল প্রকৃতির পানি ধরে রাখে। শুষ্ক মওসুমে এই পানি কৃষি খামারে ব্যবহৃত হয়। বর্তমান সময়ে জলাভূমিসমূহ অস্তিত্ব সংকটে পড়ায় অতিবৃষ্টির পানি স্থলভ‚মিতে ছড়িয়ে বন্যা ও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশের ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটার উপক‚লীয় জলাভূমি অর্থনৈতিক, বানিজ্যিক এবং পরিবেশ বান্ধব ভ‚মিকা পালন করে আসছে। এসব জলাভ‚মিতে দেড় হাজার প্রজাতির মেরুদন্ডি প্রাণি, ৭৫০ প্রজাতির পাখি এবং ৫০০ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। এরই মধ্যে দেশের ২১ লাখ হেক্টর জলাভূমির বিলুপ্তি ঘটেছে জানিয়ে তা রোধকল্পে ব্যবস্থাগ্রহণের দাবি জানানো হয়। এ জন্য কয়েকটি দাবিও তুলে ধরেন তারা।

এর মধ্যে রয়েছে সুন্দরবন ও সংলগ্ন এলাকায় ক্ষতিকর প্রকল্প ও শিল্প স্থাপনা বন্ধ করে দেওয়া, দেশের সকল জলাভূমিকে রামসার সনদের তালিকায় অন্তর্ভ‚ক্ত করা, জলাভূমির ইজারা বন্ধ, জলাভূমি সংরক্ষনে আইন প্রণয়ন এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন সংগঠনের সভাপতি অপরেশ পাল। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শেখ আফজাল হোসেন, খুরশীদ জাহান শীলা, রিয়াজুল ইসলাম, শংকর মন্ডল, উত্তম মজুমদার প্রমূখ।

(ওএস/অ/ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test