E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

‘সংসদ সদস্যদের বক্তব্য আবেগের বহিঃপ্রকাশ’

২০১৬ মে ০৮ ১৭:০৯:৩৮
‘সংসদ সদস্যদের বক্তব্য আবেগের বহিঃপ্রকাশ’

স্টাফ রিপোর্টার : সংসদের হাতে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী গত ৫ মে বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। আদালতের এ রায় সেই দিন সংসদে বিরূপ মন্তব্য করেছেন বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য। তবে সংসদ সদস্যদের বক্তব্যে সে দিন আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে মনে করছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।

তিনি বলেন, “আমরা সকলেই মানুষ। সুতরাং এই রায়ের পর আবেগের কিছু প্রকাশ সংসদের মধ্যে হয়েছিল। সেটা যখন প্রকাশিত হয়েছে, নিশ্চয়ই কিছু কিছু কথা হয়তো কাউকে আঘাত করতে পারে।”

রবিবার রাজধানীর বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাব-রেজিস্ট্রারদের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আদালতের ওই রায় নিয়ে সেইদিন আইনমন্ত্রী নিজেও সংসদে সমালোচলা করেছিলেন। তবে সংসদে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় দেওয়া বক্তব্যে আইনসভা ও বিচার বিভাগ মুখোমুখি হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানান আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “গণতন্ত্রের ভিত্তি সুপ্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে এ রকম সমস্যা, এ রকম বিতর্ক রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভের মধ্যে হয়। এটা স্বাভাবিক। কিছু কিছু সময় আবেগও কাজ করে। সংসদ সদস্যরা যেহেতু আইন প্রণয়ন করেন, আর বিচার বিভাগ সেটা বাস্তবায়ন করেন। সংসদ সদস্যরা কিন্তু আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সুতরাং আইনসভা ও বিচার বিভাগ মুখোমুখি আমি সেটা গ্রহণ করতে রাজি নই।”

আইনমন্ত্রী বলেন, “আমরা সকলেই মানুষ। সুতরাং এই রায়ের পর আবেগের কিছু প্রকাশ সংসদের মধ্যে হয়েছিল। সেটা যখন প্রকাশিত হয়েছে, নিশ্চয়ই কিছু কিছু কথা হয়তো কাউকে আঘাত করতে পারে। তবে তাতে এটা বুঝায় না যে, বিচার বিভাগ আর আইনসভা সংঘাতের মুখোমুখি।”

যেটুকু বিতর্ক হয়েছে তা নিরসন যোগ্য উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, “আমাদের সমস্যা আমরা নিজেরা নিরসন করতে পারি। দেশের বিচার বিভাগ এবং আইনসভা মিলেই সেটা নিরসন করা যায়। সেক্ষেত্রে আমি মনে করি না এই রায় এবং তারপর সংসদে যে বিতর্ক হয়েছে সেটা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।”

সংসদে নিজের দেয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যাও দেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মামলাটি শুনানির সময় সরকার পক্ষের সাবমিশনের (শুনানি) মধ্যে ব্যাপারটা বলা হয়েছিল, যেহেতু মূল সংবিধান যেটি ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদ অনুমোদন দিয়েছিল; সেই সংবিধানের মধ্যে এই বিধানটা ছিল। যা কোনো রকম পরিবর্তন না করে হুবুহু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। পরে ১৯৭৭-৭৮ এ মার্শাল ল’ এর মাধ্যমে সেটা পরিবর্তন করা হয়। সেই বিধানটিই (ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে) পরিবর্তন করা হয়েছে।”

“সেক্ষেত্রে একটা সিদ্ধ আইনি তর্ক আছে যে, মূল সংবিধান সব রকম বিচারিক পর্যালোচনার ঊর্ধ্বে। এটা একটা যুক্তি, সেই কথাটাই আমি সংসদে বলেছিলাম। যেহেতু আমি আইনের মধ্যেই ছিলাম, সেহেতু এতে আদালত অবমাননা হয়নি। তাছাড়া সংসদের ভেতরে যা কথা বলা হয় সেটা আদালত অবমাননার এখতিয়ারের মধ্যে আনা যায় না।”

সেদিনই বিচারকদের বেতনভাতা সংক্রান্ত আইনটি সংসদে উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী। তাই নিজে আবেগতাড়িত ছিলেন না উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, “আমি কিন্তু সেদিন সুপ্রিম কোর্ট জাজেস (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) আইন সংসদে উত্থাপন করেছি। আমার যদি আবেগ থাকতো, তাহলে কি আমি এভাবে কাজ করতাম? দেশটা আমাদের সকলের। দেশের প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠান আমি শ্রদ্ধা করি।”

(ওএস/এএস/মে ০৮, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test