E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

‘ইতিহাস বিকৃতি করার ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন’

২০১৬ জানুয়ারি ২৯ ১৪:৪৫:৫০
‘ইতিহাস বিকৃতি করার ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন’

স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের অপকর্মকে জায়েজ করতে বিএনপি ও জামায়াত একই সুরে কথা বলে যাচ্ছে।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে হানিফ এসব কথা বলেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার কথা তুলে ধরে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘কী নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল! সারা দেশে এখানে-ওখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল লাশ আর লাশ। লাশের মিছিল ছিল। নদীতে, পুকুরে, এখানে-সেখানে লাশ ভাসত। গণহত্যার চিহ্ন যেন সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। তখন শহীদদের সংখ্যা নিয়ে কটাক্ষ করে পাকিস্তানের অপকর্মকে পাকিস্তান যেভাবে অস্বীকার করে আসছে। সেই পাকিস্তানের অপকর্মকে জায়েজ করার জন্য বিএনপি ও জামায়াত একই সুরে তাদের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছে। পাকিস্তান যেভাবে বলেছে—একাত্তর সালে তারা এ দেশের গণহত্যা করে নাই। আজ বিএনপিও গণহত্যার সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পাকিস্তানের সেই বক্তব্য সমর্থন করে যাচ্ছে।’

হানিফ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ নিহত হয়েছিলেন। এই বিশাল সংখ্যা একজন-দুজনের নাম করে কখনো হিসাব করা যায় না। পৃথিবীর অনেক দেশে যখন এই রকম গণহত্যা হয়েছিল। জার্মানিতে নাৎসি বাহিনীর দ্বারা ইহুদি হত্যা হয়েছিল, ২০১০ সালে রুয়ান্ডাতে গণহত্যা হয়েছিল, এর আগে আণবিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ জাপানে গণহত্যা চালিয়েছিল। এরকম আরও অনেক গণহত্যা হয়েছে। সেখানে একজন-দুজন হিসাব করে সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়নি।

এটা অনুমানভিত্তিক সংখ্যায় নির্ধারণ করা হয়েছিল। মানুষের মৃত্যুর ধরন দেখে, মিছিল দেখেই হয়তো সংখ্যাটাকে অনুমানভিত্তিকই করা হয়েছে। খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন।’ পাকিস্তানের নির্দেশে বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায় বলেও দাবি করেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভীর একটি বক্তব্যের সূত্র ধরে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে বিএনপির নেতৃবৃন্দকে জানিয়ে দিতে চাই—ইতিহাস বিকৃতি করার ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন।

বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এক দিনে হন নাই। ১৯৪৯ সাল থেকে বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের জন্য উনি সংগ্রাম শুরু করেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ছয় দফার মধ্য দিয়েই আমাদের স্বাধীনতার সোপান রচনা করেছিলেন। ৬৯-এর গণ-অভুত্থানের মাধ্যমে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে ৭০-এর নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। এই স্বাধীনতা এক দিনে আসেনি। এই স্বাধীনতা কোনো ব্যক্তির এক হুইসেলে আসে নাই।’

তিনি বলেন, এই ধৃষ্টতা দ্বিতীয়বার না দেখানোর জন্য আমরা অনুরোধ করে যাচ্ছি। এই জাতির পিতাকে নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে কটাক্ষ করে এই ধৃষ্টতা যদি ভবিষ্যতে কেউ দেখায়, তাহলে বাংলার জনগণ তাকে ক্ষমা করবে না। সমুচিত জবাব দিয়ে স্বাধীনতা ও ইতিহাস বিকৃত করা ব্যক্তিদের এই বাংলাদেশ থেকে চিরদিনের জন্য উৎখাত করবে।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের আইন-আদালত খালেদা জিয়ার দ্বারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কারণ আদালতের তারিখ পড়লেও উনি যান না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইসলামের প্রকৃত খাদেম হলেন শেখ হাসিনা এবং শেখ হাসিনা।

ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা ইসমাইল হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য আমিনুল ইসলাম, ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির মহাসচিব মুফতি তাজুল ইসলাম ফারুকী প্রমুখ।

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ২৯, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২১ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test