E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন

গুলশানের বিলাসবহুল ভবনের বাসিন্দাদের তালিকায় টিউলিপের নাম

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ০৯ ১৮:৫৫:১২
গুলশানের বিলাসবহুল ভবনের বাসিন্দাদের তালিকায় টিউলিপের নাম

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি বিলাসবহুল ১০ তলা টাওয়ারের বাসিন্দা হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম তালিকাভুক্ত ছিল। তাঁর পরিবারের নামে ছিল এটি। এ তথ্য জানতে পেরেছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ। গতকাল শনিবার প্রকাশিত সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, ‘সিদ্দিকস’ নামে ঢাকার এই অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স ২০১৪ সালে টিউলিপের ‘স্থায়ী ঠিকানা’ ছিল। তখন তিনি যুক্তরাজ্যের উত্তর লন্ডনের ক্যামডেনের কাউন্সিলর ছিলেন।

অ্যাপার্টমেন্ট ভবনটির অবস্থান ঢাকার গুলশানে। এই এলাকায় বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের পাশাপাশি বড় বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।

আদালতের নথিপত্র বা সংবাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, এ নিয়ে বাংলাদেশে টিউলিপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পঞ্চম সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গেল।

বাংলাদেশে টিউলিপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এসব সম্পত্তির ব্যাপারে তাঁর দল লেবার পার্টির কাছ থেকে মন্তব্য চেয়েছিল সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ। ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশে টিউলিপের কোনো সম্পত্তি নেই। তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্যে দায় নেই তাদের।

টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের সাবেক দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী। তিনি দেশটির ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি)। তাঁর খালা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান তিনি। এরপর থেকেই টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আসছে।

প্রায় এক মাস আগে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ। এখনো সম্পত্তিসংক্রান্ত বিষয়সহ বাংলাদেশে তাঁর খালা শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগসূত্র নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি।

যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মানদণ্ডবিষয়ক দেশটির প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাস। টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর এ নিয়ে লাউরি তদন্ত করেন। তদন্তে তিনি দেখতে পান, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক ব্যক্তির কাছ থেকে উপহার পাওয়া একটি ফ্ল্যাট নিয়ে টিউলিপ অসাবধানতাবশত জনগণকে বিভ্রান্ত করেছেন। এই তদন্তের জেরে টিউলিপ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ অল্প সময়ের জন্য সিটি মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা তাঁর দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত বিষয় ছিল।

গাজীপুরের কানাইয়া এলাকায় ‘টিউলিপস টেরিটরি’ নামের প্লটসহ একটি পারিবারিক অবকাশযাপনের বাগানবাড়ি নিয়ে তদন্ত করছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ তথ্য সামনে আসার পর এবার গুলশানের সম্পত্তির সঙ্গে টিউলিপের যোগসূত্রের তথ্য প্রকাশ করল দ্য টেলিগ্রাফ।

একটি নথিতে দেখা যায়, গুলশানের সম্পত্তিটি টিউলিপের ‘বর্তমান’ ও ‘স্থায়ী’ উভয় ঠিকানা হিসেবেই বিবেচিত হয়েছিল। ২০১৪ সালের মে মাসে টিউলিপ লন্ডনের ক্যামডেনের কাউন্সিলর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। নথিটিতে এর তিন সপ্তাহ পরের তারিখ লেখা।

গুলশান এলাকার ১০ তলা এই অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ২০১০ সালের দিকে নির্মিত। একটি প্রচারমূলক ভিডিওর তথ্য অনুসারে, ভবনে একটি খোলা ছাদ রয়েছে। আছে একাধিক বারান্দাযুক্ত দুই ও তিন শয়নকক্ষের ফ্ল্যাট।

বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর একটি ঢাকা। এ শহরে দুই কোটি মানুষ বসবাস করে। ঢাকার বেশির ভাগ অধিবাসী যে পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করেন, তার বিপরীত চিত্র এসব প্রশস্ত ফ্ল্যাট।

সম্পত্তিটি সম্পর্কে জানেন এমন এক ব্যক্তির ধারণা, এই পরিবারের এক সদস্যের মালিকানাধীন জমিতে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। টিউলিপের বাবা (শফিক আহমেদ সিদ্দিক) যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, সেখানকার একটি অনলাইন জীবনীর তথ্যানুসারে, তিনি সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত সেখানকার বসবাসকারী হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিক।

পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা এই সম্পত্তিসহ আদালতের নথিপত্র অনুসারে, গুলশানের অন্য একটি ঠিকানা ও ধানমন্ডিতে তাঁর খালার বাড়ির সঙ্গে টিউলিপের যোগসূত্র আছে।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১২ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test