E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

ঢাকার বাতাস আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’, দূষণে শীর্ষে

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ০৫ ১৪:২১:১৬
ঢাকার বাতাস আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’, দূষণে শীর্ষে

স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ফের সবাইকে টপকে গেছে ঢাকা। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল পৌনে ৯টায় শহরটির একিউআই স্কোর ছিল ৩৭৫। অর্থাৎ ঢাকার দূষিত বাতাসকে নাগরিকদের জন্য ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। এতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ারসহ ব্যাপক স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে।

জনাকীর্ণ এই শহরটির বাতাসের মান ধীরে ধীরে খারাপই হচ্ছে। বাতাসের মানোন্নয়নে কোনো সুখবরও দিতে পারছে না সরকার। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণকে ‘সময়সাপেক্ষ’ আখ্যা দিয়ে নাগরিকদের ঝুঁকিকে উপেক্ষা করে যাওয়া হচ্ছে।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাবে, ‘ঢাকায় বর্তমান জনসংখ্যা দুই কোটি ৪৬ লাখের বেশি।’ ইআইইউ গ্লোবাল লাইভেবিলিটি ইনডেক্স ২০২৪ অনুসারে, বিশ্বের সবচেয়ে বসবাসের অনুপযোগী শহরের একটি ঢাকা। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভেরও পরে ঢাকার অবস্থান।

দূষিত শহরের তালিকায় আজ ঢাকার পরেই রয়েছে ভারতের দিল্লি, পাকিস্তানের লাহোর ও উজবেকিস্তানের তাসখন্দ শহর। তাদের একিউআই স্কোর যথাক্রমে ১৯৫, ১৭৮ ও ১৭২।

যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে 'সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর' হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে 'খুব অস্বাস্থ্যকর' বলে মনে করা হয়। এছাড়া ৩০১ এর বেশি হলে 'বিপজ্জনক' হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো-বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন। ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণে কারণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।

গেল ২৯ জানুয়ারি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

তিনি বলেন, বায়ুদূষণ কমানো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, যা অর্থনৈতিক সক্ষমতা, উন্নয়নের ধরন, যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে। জ্বালানির মান উন্নয়ন ও রিফাইনারির সক্ষমতা বৃদ্ধি না করে দূষণ কমানো সম্ভব নয়। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে রিফাইনারি উন্নত হওয়ার পরও দূষিত শহরগুলোর তালিকায় শীর্ষে উঠে আসে। তাই বাংলাদেশকেও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

‘আমাদের বায়ুদূষণের ৩০-৩৫ শতাংশ আসে বাইরের দেশ থেকে এবং ২৮ শতাংশ পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে। তাই দূষণ নিয়ন্ত্রণে সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা থাকা জরুরি,’ বলেন রিজওয়ানা।

(ওএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test