E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

একুশে বইমেলার উদ্বোধন : জুলাই গণ-অভ্যুত্থান,নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ০১ ২৩:৪৪:২৭
একুশে বইমেলার উদ্বোধন : জুলাই গণ-অভ্যুত্থান,নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ

রহিম আব্দুর রহিম : জুলাই গণঅভ্যুত্থান,নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে ১ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকাল তিনটায় প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস অমর একুশে বই মেলার উদ্বোধন করেন।

বাংলা একাডেমির সভাপতি বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক এর সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্তর্বতীকালিন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর ভাষণে বলেন," আত্মাত্যাগে অর্জিত এবারের বইমেলায় আমাদের সামনে নতুন তাৎপর্য নিয়ে উপস্থিত। "তিনি তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন,"একুশ মানে আত্মপরিচয়ের সাথে মুখোমুখি হওয়া। একুশ মানে অবিরাম সংগ্রাম।

বরকত,সালাম,রফিক,জবাবারের বুকের রক্তে যে অঙ্গীকার মাখা ছিলো তাতে ছিলো জুলাই অভ্যুত্থানের মহাবিস্ফোরক শক্তি।যে মহাবিস্ফোরণ আমাদের ঐক্যের দৃঢ় বন্ধন।এই বন্ধন ছোট-বড়, যৌক্তিক-অযৌক্তিক, দীর্ঘস্থায়ী-ক্ষণস্থায়ী সব দুরত্বের উর্ধে। এ জন্য সব জাতীয় উৎসব, সংকটেও, দুর্যোগে আমরা শহীদ মিনারে ছুটে যাই। মাত্র ছয় মাসে আগে জুলাই অভ্যুত্থান জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে দিয়েছে। যা আমাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও মানবিকভাবে বিধ্বস্ত একটি দেশকে দ্রুততম গতিতে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাবার লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিতে সাহস যুগিয়েছে। আমাদের তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরীরা রাস্তার দেয়ালে তাদের স্বপ্নগুলো, আকাঙ্খা ও দাবিগুলো অবিশ্বাস্য দৃঢ়তায় এগিয়ে নিয়েছে। আমাদের রাস্তার দেয়াল এখন ঐতিহাসিক দলিলে রূপান্তর হয়ে গেছে। এগুলোর স্থান এখন আমাদের বুকের মধ্য এবং জাদুঘর হওয়া ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।"

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রারম্ভে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। বাংলা একাডেমির সভপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক তাঁর বক্তব্যে যা বলেন তার সারসংক্ষেপ," আমাদের মহান নেতাদের মহান কর্মের জন্যই আজ আমরা এতদূর আসতে পেরেছি, তাঁরাই আমাদের পথ প্রর্দশক।" পহেলা ফ্রেবুয়ারি শনিবার, বেলা দেড়টার মধ্যে বইমেলার উদ্বোধন স্থল প্রাঙ্গনের মূলফটকে আমন্ত্রিত অতিথিদের প্রবেশ লাইন।ঠিকঠাক সময়ে ফেলো,জীবন ও সাধারণ সদ্যসগণ,বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ,অন্তবর্তীকালীন সরকারের সকল উপদেষ্টাগণ পূর্ব থেকে বিন্যাস করা আসন গ্রহণ করেন। ঘড়ির কাঁটায় তিনটা বেজে চৌদ্দ মিনিট।

সম্মেলক কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশেন করেন সপ্তকসুর সঙ্গীত একাডেমি। ধর্মগ্রন্থ সমূহ থেকে পাঠ, সূচনা সঙ্গীত শেষে, ৫২এর ভাষা আন্দোলন, ৭১'র মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের স্মরণে ১মিনিট নীরতা পালন করা হয়।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন,"নতুন সময়ের নতুন বাংলাদেশ, আমরা দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা পেয়েছি। আত্ম সমালোচনা হবার দরকার। নতুন বাংলা একাডেমির জন্য সংস্করণ হবার দরকার। যে সংস্কারণে বাংলা একাডেমি, একটি চলমান প্রতিষ্ঠা হোক।সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের রুটিন দায়িত্বরত সচিব মফিদুর রহমান (অতিরিক্ত সচিব) উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

প্রকাশক ও বিক্রেতা কমিটির সভাপতি, তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদানকালে শহীদ জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে অভিহিত করে বক্তব্য শুরু করেন।শেষ করেন খালেদা জিয়ার উক্তি, 'প্রিয়জনকে বই উপহার দিন'বাক্যটি উচ্চারণ করে।পরে প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত গ্রন্থ-উম্মোচন করেন।এপর শুরু হয় বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ প্রদানের পালা। এ পালায় কবিতায় মাসুদ খান, নাট্যসাহিত্য ও নাটকে-শুভাশিস সিনহা, প্রবন্ধ ও গদ্য সাহিত্যে, সলিমুল্লাহ খান,অনুবাদ সাহিত্যে জে এইচ হাবিব,গবেষণায় মুহাম্মদ শাহজাহান মিয়া, বিজ্ঞানে রেজাউর রহমান, ফোকলোর গবেষণায় সৈয়দ জামিল আহমেদকে সামগ্রিক অবদানের জন্য আলাদা আলাদা বিষয়ের ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ ভূষিত করেন। পরে প্রধান উপদেষ্টার বই মেলা পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে বইমেলা উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

(এআর/এএস/ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৭ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

Website Security Test