E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

সন্তানদের সঙ্গে বিক্ষোভে বাবা-মায়েরাও

২০২৪ আগস্ট ০৩ ১৮:০০:১০
সন্তানদের সঙ্গে বিক্ষোভে বাবা-মায়েরাও

স্টাফ রিপোর্টার : কোটা আন্দোলনকে ঘিরে শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর রামপুরা-বাড্ডা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষোভে হাজার হাজার শিক্ষার্থী নেমে আসেন। তাদের সঙ্গে অনেক বাবা-মা ও অভিভাবকও যোগ দেন মিছিলে। শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে সংহতি পোষণ করে সন্তানদের মিছিলে যেতে উৎসাহিত করছেন বাবা-মায়েরাও।

রামপুরা ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে রনিল (৪৫) নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তিনি মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। তার মেয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। কথা প্রসঙ্গে বলেন, আমার মনে হচ্ছে, দেশ ঠিকমতো চলছে না। যে কারণে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন। আমি আমার মেয়েকেও নিয়ে এসেছি।

সহপাঠীরা বিক্ষোভে যোগ দেয়ায় মেয়ে ঘরে বসে থাকতে চাচ্ছিলেন না জানিয়ে তিনি বলেন, তারুণ্যের এই মিছিল থেকে আমি নিজেকে দূরে রাখি কীভাবে? মেয়ে আসতে চেয়েছে, তাকে তো একা ছেড়ে দিতে পারি না। যে কারণে আমরাও চলে এসেছি।

বাড্ডায় আট বছরের শিশুকে নিয়ে রাস্তায় মিছিল করছিলেন রাসেল আহমেদ নামের একজন ঠিকাদার। তিনি বলেন, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা বসে থাকতে পারি না। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে যে কারণে রাস্তায় নেমে এসেছি।

ছাত্রদের এবারের বিক্ষোভে সন্তানদের সঙ্গে অভিভাবকদেরও দেখা গেছে। মূলত সন্তানদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই তারা মিছিলে এসেছেন। শনিবার সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে লাখ লাখ ছাত্র রাস্তায় নেমে আসেন। বিক্ষোভে আন্দোলনকারীরা ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’সহ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

প্রসঙ্গত,২০১৮ সালে সরকার চাকরিতে কোটা বাতিল করে সরকারের পরিপত্র জুনের শেষে হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে জুলাইয়ের শুরুতে মাঠে নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে এই সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে সংঘাত হয়। এতে চট্টগ্রামে এক ছাত্রদল নেতাসহ তিনজন, ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে ছাত্রলীগ কর্মী ও একজন হকার এবং রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আবু সাঈদ নামে এক ছাত্রের মৃত্যু হয়।

পরদিন জাতির উদ্দেশে ভাষণে এসে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান। তবে ১৮ জুলাই ‘কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষিত হয়। সেদিন ঢাকার উত্তরা ও বাড্ডায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কয়েকজনের প্রাণহানির পর পরিস্থিতির মোড় ঘুরে যায়। সেদিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় একযোগে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে হামলা হয়।

১৮ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সংঘর্ষ সহিংসতা চলতে থাকে। বিশেষ করে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, মোহাম্মদপুর এলাকায় পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে যায়। এই পাঁচ দিনের সহিংসতায় সরকারের পক্ষ থেকে দেড়শ মানুষের মৃত্যুর তথ্য দেওয়া হয়েছে, আহত হয়েছে আরও কয়েকশ মানুষ।

সংঘর্ষ থামার পর পুলিশ ব্লক রেইড দিয়ে গ্রেফতার অভিযানে নামার কথা জানায়, কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে গ্রেপ্তার অভিযান বন্ধ, হত্যার বিচারসহ নানা দাবি জানানো হতে থাকে। দফায় দফায় আসছে কর্মসূচিও।

এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি মৃত্যুর তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি তদন্তে জাতিসংঘের সহযোগিতা নেয়ার কথাও বলেছেন একাধিক বক্তব্যে। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসার আগ্রহও প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, গণভবনের দরজা খোলা। কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে আমি বসতে চাই, তাদের কথা শুনতে চাই। আমি সংঘাত চাই না।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ০৩, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৫ জানুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test