E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

রাজবাড়ীতে ১৬ হাজার মেট্রিক টন টমেটো উৎপাদনের আশা

২০২৫ জানুয়ারি ০২ ১৮:৫৩:২৪
রাজবাড়ীতে ১৬ হাজার মেট্রিক টন টমেটো উৎপাদনের আশা

একে আজাদ, রাজবাড়ী : পদ্মা নদীর তীরবর্তী জেলা রাজবাড়ী। এ জেলার মাটি অধিক উর্বর হওয়ায় প্রতিটি শাকসবজি ও ফসলের হয় সর্বোচ্চ ফলন। রাজবাড়ী জেলায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ ৭৯ হাজার ১৬৩ হেক্টর। চলতি রবি মৌসুমে উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটো আবাদ হয়েছে প্রায় ৭০০ হেক্টর জমিতে। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুসারে, এখন পর্যন্ত জেলা সদরে ১৬০, কালুখালীতে ৪৫, গোয়ালন্দে ৩৫০, পাংশায় ৫৫ ও বালিয়াকান্দিতে ৩৫ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ করেছেন কৃষকেরা।

গত বছর জেলার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে টমেটো আবাদ হয়েছিল। হেক্টরপ্রতি গড় উৎপাদন ছিল সাড়ে ২৩ টন, যার মোট উৎপাদন ছিল ১৫ হাজার ১৫৭ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে চলতি মৌসুমে টমেটোর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ হাজার মেট্রিক টন।সরেজমিনে রাজবাড়ী জেলা সদরের বরাট ইউনিয়নের নয়নসুখ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মার তীরে চরের জমিতে একরের পর একর জমিতে কৃষকেরা করেছেন বিউটি প্লাস, মিতালি, টিএম ১২২০-সহ বিভিন্ন উচ্চফলনশীল জাতের টমেটো আবাদ। ক্ষেতের প্রতিটি গাছেই ঝুলছে কাঁচা-পাকা টমেটো। কৃষকেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন টমেটো সংগ্রহ ও ক্ষেত পরিচর্যায়।

কৃষক গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি ১০০ শতাংশ জমিতে আধুনিক মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো আবাদ করেছি। প্রথম দিকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন প্রতি কেজি ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ১০০ শতাংশ জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো আবাদ করতে আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বিক্রি হবে প্রায় ৫ লাখ টাকার মতো।

কৃষক সলিম শেখ বলেন, আমি দুই বিঘা (৬৬ শতাংশ) জমিতে টমেটো আবাদ করেছি। ফলন আল্লাহর রহমতে ভালো হয়েছে। বাজারে দাম ভালো থাকলে আমরা কৃষকেরা লাভবান হব। কৃষক সালাম শেখ বলেন, রাজবাড়ী জেলার এই টমেটো স্থানীয় বাজারসহ ফরিদপুর, কুষ্টিয়া ও ঢাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষক লাভবান হচ্ছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহফুজ মিয়া বলেন, প্রতিনিয়ত মাঠে এসে সরাসরি কৃষকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করি। চাষাবাদ সম্পর্কে নানা বিধ পরামর্শ ও সেবা প্রদান করছি।

সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জনি খান বলেন, জমিকে উত্তমরূপে তৈরি করে প্রয়োজনীয় জৈব ও রাসায়নিক সার মিশিয়ে বেড তৈরি করে সেখানে বীজ বপন করতে হয়। তারপর সেই বেডগুলো মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। মালচিং পেপার হলো বিশেষ ধরনের পলি পেপার (পলিথিন)। বীজগুলো থেকে চারা গজানোর পর চারার স্থানগুলো থেকে মালচিং পেপার ছিদ্র করে দিতে হয়, যাতে চারাগুলো সহজে বেড়ে উঠতে পারে। এছাড়া মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে জমিতে আগাছা জন্মাতে পারে না এবং সেচের অতিরিক্ত পানি জমে চারা বিনষ্ট হয় না। অতিরিক্ত সারের প্রয়োজন হয় না। ফলে জমি চাষাবাদে শ্রম কমে যাওয়ায় কৃষিশ্রমিকও কম লাগে। এতে উৎপাদন খরচ কমে যায়, জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং ফলন অনেক বেশি হয়।

রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, রাজবাড়ীতে গত বছর ৬৪৫ হেক্টর জমিতে টমেটো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬০ হেক্টরই রয়েছে গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে। এ বছর এখনও আবাদ চলমান। পলিমাক্স ব্যবহার করে আধুনিক পদ্ধতিতে টমেটো চাষের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষকদের। এতে আগাছা কম হয়। গাছের বৃদ্ধিও ভালো হয়। রোগবালাই হয় না। ফলনও বেশি হয়। আধুনিক কৃষি ব্যবহারে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে।

(একে/এসপি/জানুয়ারি ০২, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৫ জানুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test