E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

আমনে খাদ্য নিরাপত্তা দেবে ব্রি হাইব্রিড ধান৬

২০২৪ নভেম্বর ১৪ ১৪:৫৩:২৫
আমনে খাদ্য নিরাপত্তা দেবে ব্রি হাইব্রিড ধান৬

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : আমনে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করবে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত ব্রি হাইব্রিড ধান৬। স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন এ ধান  বিঘায় (৩৩ শতাংশ) ২১ মন ফলন দিয়েছে । ক্ষেতে রোগ, বালাই ও পোকা-পাকড়ের আক্রমণ হয়নি। তাই অল্প খরচে অধিক ধান গোলায় তুলেছেন কৃষক। আগামীতে লাভজনক এ ধানের আবাদে কৃষক ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করেছেন । আমন মৌসুমে দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে  কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ জাতের ধান কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাইছে ।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও সিনিয়র সাইস্টিফিক অফিসার ড. মো. রোমেল বিশ্বাস এ তথ্য জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত ব্রি হাইব্রিড ধান৬ একটি আধুনিক, রোগ সহিষ্ণু, স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন, উচ্চ ফলনশীল ও চিকন ধানের জাত। এটি ভাল পরিচর্যা পেলে বিঘায় ২২ মন বা হেক্টরে ৬.৫ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। গোপালগঞ্জে এ ধান বিঘায় ২১ মণ ফলেছে। সে হিসাবে এ জেলায় হেক্টর প্রতি এ ধান ৬.৩ টন ফলেছে। এ ধানের চাষাবাদ সম্প্রসারণ করতে পারলে দেশে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে । তাই কৃষকের বীজ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৃজন চন্দ্র দাস বলেন, আমরা গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও বাগেরহাট জেলায় ব্রি উদ্ভাবিত ধানের জাত পরিচিতি, সম্প্রসারণ ও খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করছি। আমন মৌসুমে আমরা ৩ জেলায় ১ হাজার ৪০০ কেজি ধানের বীজ বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেছিলাম। তারা এ ধান দিয়ে ৭০০ বিঘা জমি চাষাবাদ করেছেন। এ ধান চাষে বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষকরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, কৃষকের মাঠে এ ধান আমন মৌসুমের হাইব্রিড ধানের মধ্যে সর্বউৎকৃষ্ট ফলন দিয়েছে। ব্রি বীজ দিলে অমরা এ জাত ছড়িয়ে দিতে আন্তরিকভাবে কাজ করব। এতে দেশে খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। এ ধান কাটার পর কৃষক রবি ফসল করতে পারবেন। কৃষিকে লাভজনক করতে ব্রি হাইব্রিড ধান৬ ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা মালোপাড়া গ্রামের কৃষক গৌরাঙ্গ ঠাকুর বলেন, গত বছর আমন মৌসুমে এ জমিতে ব্রি৭৪ জাতের ধান চাষ করেছিলাম । বিঘায় ১৫ মণ ধান পেয়েছিলাম । কিন্তু এ বছর ব্রি হাইব্রিড ধান৬ জাতের ধান চাষ করে বিঘায় ২১ মণ ধান পেয়েছি। এরপর এ জমিতে রবি ফসল করার। তারপর বোরো ধান করতে পারব। এতে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। বেশি ফসল উৎপাদন করে লাভবান হব।

একই উপজেলার সুকতাইল গ্রামের কৃষক লিটু শেখ বলেন, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে ৪ কেজি ব্রি হাইব্রিড ধান৬ ও প্রয়োজনীয় সার বিনামূল্যে পাই। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরামর্শে এ ধান আমার ২ বিঘা জমিতে রোপণ করি। রোপণের ১১৫ দিনের মধ্যে ধান কেটেছি । ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হয়নি। তাই সার-কীটনাশক খরচ সাশ্রয় হয়েছে । সেচ খরচ তেমন নেই। এতে কম খরচে অধিক ধান উৎপাদন করে অন্যান্য ধানের চেয়ে বেশি লাভবান হয়েছি।

ওই গ্রামের প্রবীণ কৃষক ছাবেদ আলী (৬৫) বলেন, আমার জীবনে আমন মৌসুমে আগে ক্ষেতে এত ধান উৎপাদিত হতে দেখিনি । ক্ষেতের ধান দেখে আমি মাতোয়ারা। তাই আগামীতে আমি লাভজনক এ ধানের চাষ করতে চাই। এ ব্যাপারে আমি ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি ।


(এমএস/এএস/নভেম্বর ১৪, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৫ নভেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test