E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ফুলকপিতে পচন, লোকসানে রাজবাড়ীর কৃষকরা

২০২৪ অক্টোবর ২০ ১৮:৪৪:০০
ফুলকপিতে পচন, লোকসানে রাজবাড়ীর কৃষকরা

একে আজাদ, রাজবাড়ী : অতিবৃষ্টি ও বিরূপ আবহাওয়ায় পচে গেছে খেতের আগাম ফুলকপি। এতে বড় লোকসানের মুখে পড়েছেন অধিকাংশ কৃষক। কৃষি বিভাগ বলছে, একই খেতে বারবার কপি’র আবাদের কারণে এ বছর রোগের উপদ্রব বেশি দেখা দিয়েছে। এ কারণে কপিগুলো পচে গেছে।

রাজবাড়ী কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ফুলকপি আবাদের জন্য বিখ্যাত রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়ন। এ এলাকায় বছরে একই জমিতে তিনবার কপির আবাদ করা হয়। আগাম ফুলকপি সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে অক্টোবরের মধ্য পর্যন্ত বিক্রি হয়। এরপর আবার একই জমিতে মধ্যমজাতের কপি রোপণ করা হয়, যা নভেম্বরের শেষ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বিক্রি করা হয়। মধ্যমজাতের কপি বিক্রি শেষ হলে নাবিজাতের ফুলকপির আবাদ করা হয়। এ বছর বালিয়াকান্দি উপজেলায় ১০০ হেক্টর জমিতে আগাম ফুলকপির আবাদ করা হয়েছে। তবে কৃষকরা এ বছর বড় লোকসানে পড়েছেন। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং বিরূপ আবহাওয়ার কারণে ফুলকপির ফুল পচে যাচ্ছে। ফলে বিক্রি করার উপযোগী কপি নেই। চাষিরা বলছেন,কপির গাছে ফুল আসছে। কিন্তু ফুল বড় হলেই পচে যাচ্ছে।

সরেজমিনে বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মাঠে দেখা গেছে, মাঠ ভর্তি সবুজ ফুল কপির খেত। কিন্তু অধিকাংশ কপির ফুল পচে গেছে। অনেক কৃষক কপিগাছ কেটে নতুন করে জমি প্রস্তুত করছেন আবার কপি আবাদের জন্য। কেউ কেউ নষ্ট কপি কেটে বাকি গাছের পরিচর্যা করছেন।

কৃষক রুবেল মোল্লা বলেন, ‘৭৫ শতাংশ জমিতে ফুলকপির আবাদ করেছিলাম। ১৫ হাজার টাকার কপি বিক্রি করেছি। কিন্তু বাকি সবই পচে গেছে। এখন কপি গাছ কেটে জমি পরিষ্কার করছি। নতুন করে আবার আবাদ করব। আগাম জাতের এই কপি আবাদ করতে খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকার বেশি। এবার অনেক বড় লোকসানে পড়েছি। এ বছর আশ্বিন মাসে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, গত ১০ বছরে তেমন হয়নি। মূলত অতিবৃষ্টির কারণে কপির ফুলে পানি জমে নষ্ট হয়েছে।’

আরেক চাষি জহির শেখ বলেন, ‘জমিতে কপি গাছ পচে গেছে। মনের কষ্টে এখন খেতে যাই না। ১ টাকার কপিও বিক্রি করতে পারিনি। নতুন করে আবার আবাদ করব। কিন্তু ওই টাকাও আমার নেই। এ বছর বৃষ্টি চাষিদের সর্বনাশ করে দিয়েছে।’

বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘কপি চাষিরা একই জমিতে বছরে তিনবার এই ফুলকপির আবাদ করে। প্রতিবছর একই ফসলের চাষ করে। এতে খেতে রোগের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর আশ্বিন মাসে গরমও বেশি ছিল। তারপর প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে কপির ফুল পচে গেছে। এ জন্য আমরা চাষিদের পরামর্শ দিই ফসলের আবাদের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনার। একই ফসল একই জমিতে বারবার আবাদের ফলে মাটির গুণাগুণ নষ্ট হয়ে রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। এ কারণে চাষিরা লোকসানে পড়েছেন।’

(একে/এসপি/অক্টোবর ২০, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৪ অক্টোবর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test